spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

পরকীয়ার জেরে বন্ধুকে হত্যার পর ঝোলানো হয় রশিতে

spot_img

 

- Advertisement -

প্রিয়সংবাদ ডেস্ক :: প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে দুই বন্ধু। দুজনের মধ্যে শুরু হয় দ্বন্দ্ব। এক পর্যায়ে ঘটনাটি জানাজানি হলে একজন অপরজনকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে। এরপর পরিকল্পতভাবে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করা হয়। পরে এই হত্যাকে আত্মহত্যা হিসেবে চালাতে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে।

গত বছর গাজীপুরের শ্রীপুরের এক হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে এসব কথা জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। খুন হওয়া তরুণের নাম মো. রাসেল (১৯)। তিনি উপজেলার পাবুরিয়াচালা গ্রামের জমির আলীর ছেলে।

আজ শুক্রবার দুপুরে পিবিআইয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাসেল হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত তিনজনকে গত মঙ্গলবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন- পাবুরিয়াচালা গ্রামের মো. রানা (২২), মো. হেলাল (৪৫) ও মো. কাউছার (২৩)।

২০২০ সালের ১০ জুলাই পাবুরিয়াচালা গ্রামের বাড়ি থেকে পাশের বাজারে যাওয়ার সময় নিখোঁজ হন রাসেল। নিখোঁজের পাঁচ দিন পর সকালে তার বাড়ির এক কিলোমিটার দক্ষিণে গজারি বনের ভেতর থেকে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায় পুলিশ। পরে নিহতের বাবা শ্রীপুর থানায় অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনার ১৪ মাস পর হত্যার রহস্য উদঘাটন করলো গাজীপুর পিবিআই।

পিবিআই জানায়, নিহত রাসেলের বাবা জমির উদ্দিন বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় প্রথমে অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে পূর্বপরিকল্পিতভাবে গলায় ফাঁস লাগিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে জানানো হয়। পরে শ্রীপুর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে নিয়মিত হত্যা মামলা দায়ের করেন রাসেলের বাবা।

তদন্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, মামলার তদন্তভার নেওয়ার পর নানা দিক বিবেচনায় তদন্ত শুরু করে পিবিআই। তদন্তের এক পর্যায়ে হত্যার ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে রানা, কাউছার ও হেলালকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

তদন্তকালে পিবিআই জানতে পারে, গ্রেপ্তার হওয়া কাউছারের এক নিকটাত্মীয়ের স্ত্রীর সঙ্গে খুন হওয়া রাসেলের সম্পর্ক ছিল। কাউছারের ওই নিকটাত্মীয় বিদেশে থাকেন। একটা সময় ওই নারীর সঙ্গে রাসেলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু রানারও সম্পর্ক তৈরি হয়। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। রানা একপর্যায়ে কাউছারের কাছে ওই নারীর সঙ্গে রাসেলের সম্পর্কের কথা জানিয়ে দেন। এরপর কাউছার পরিবারের মান-সম্মানের কথা বিবেচনা করে রাসেলকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। তিনি বিষয়টি নিয়ে রানা ও হেলালের সঙ্গে আলোচনা করেন।

পরিকল্পনা মোতাবেক, প্রবাসীর ওই স্ত্রীর মাধ্যমে ফোনে রাসেলকে টেক গজারি বনে যেতে বলা হয়। ওই নারীর কথা বিশ্বাস করে ঘটনাস্থলে যান রাসেল। সেখানে বিভিন্ন প্রসঙ্গ তুললে রাসেলের সঙ্গে রানা, হেলাল এবং কাউছারের কথা–কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তিনজন মিলে রাসেলের গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার জন্য তারা রশিতে ফাঁস লাগিয়ে লাশ গাছে ঝুলিয়ে রাখেন।

গাজীপুর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান বলেন, পিবিআই মামলাটি নিবিড়ভাবে তদন্ত করে ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার হওয়া তিনজনকে গতকাল বৃহস্পতিবার আদালতে পাঠানো হয়। তারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। প্রবাসীর ওই স্ত্রীকেও আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে।

spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

সর্বশেষ