অবসর তিনি আগেও একবার নিয়েছিলেন। দু বছর আগের কথা। আমেরিকায় কোপা আমেরিকার বিশেষ আসরের ফাইনালে হারের পর। এতো এতো ফাইনালে উঠেও বারবার হারতে কার ভালো লাগে? মন ভেঙে যায় না? ওই আসরের পর নতুন কোচের অনুরোধে মেসি অবসর ভেঙে ফিরে রাশিয়ার বিশ্বকাপে নিয়ে গেছেন আর্জেন্টিনাকে। গেলবারের ফাইনালেও উঠেছিলেন। তাও শত্রু ব্রাজিলের মাটিতে। এবার কি হবে? একটা শিরোপার খেদ ভিনগ্রহের ফুটবলার মেসির মনে। সেটা এবারও জিততে না পারলে আর্জেন্টাইন অধিনায়ক কি চূড়ান্ত অবসরটা নিয়েই ফেলবেন আন্তর্জঅতিক ফুটবল থেকে?
বার্সেলোনার ক্যাম্প শেষে মেসিরা এখন রাশিয়ায়। ২০১৮ বিশ্বকাপ আয়োজক দেশের মাটিতে পা রেখেছেন অন্যতম ফেভারিট দল হিসেবেই। কিন্তু প্রসঙ্গটা ৩০ বছর বয়সী মেসির বিশ্বকাপ শিরোপা জেতা না জেতা নিয়ে। প্রশ্ন আসে, অবসরের ভাবনাটা মাথায় নিয়েই কি রাশিয়ায় পা রাখলেন ফুটবল জাদুকর?
মেসি সেটা সরাসরি না বলে অপেক্ষাই করতে বললেন। মানে এই কিছুদিন। তার সোজা কথা, আর্জেন্টিনা দল এবারের বিশ্বকাপে কেমন ফল করে তার উপরই নির্ভর করছে তার আন্তর্জাতিক ফুটবল ভাগ্য। ৫বারের ব্যালন ডি’অর জয়ী মেসি ক্লাব বার্সেলোনার হয়ে সব জিতেছেন। শিরোপার ছড়াছড়ি। কিন্তু দেশকে একটাও জেতাতে না পারার পাথরসমান দুঃখ বয়ে বেড়ান। প্রকাশও করেন মিতভাষী মানুষটি কখনো কখনো। ২০১৪ বিশ্বকাপ ফাইনাল, ২০১৬ তে টানা দ্বিতীয়বার কোপা ফাইনাল, তিনটিতেই হার। দেশের নন মেসি, ক্লাবের, এমন সমালোচনা শেষ পর্যন্ত সহ্য হয়নি তখন।
কিন্তু দেশ তো মা। আর একজন খেলোয়াড়ের সবচেয়ে বড় স্বপ্ন তো বিশ্বকাপ জেতা। যে স্বপ্ন জার্মানির কাছে চার বছর আগে অতিরিক্ত সময়ের গোলে ১-০ তে হেরে ভেঙেছে। চোখ ভিজেছে। আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্টের বিশ্বাস, ‘কেবল ঈশ্বর ও মেসি’ জানেন তার দেশ তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ জিততে পারবে কি না। শেষ দুবারের ঘটনা অনেক আগের। ১৯৭৮ ও ১৯৮৬।
মেসি নিজেও কোনো কোনো সময় বলেছেন, এটা তার শেষ চেষ্টা। তাই বিশ্বকাপ এবং অবসর প্রসঙ্গ মিলে গিয়ে প্রশ্নটা আসলে মেসি বলে দিলেন, ‘জানি না ঠিক। আমরা কি করি, কিভাবে শেষ করি তার উপরই নির্ভর করছে তা।’ তার মানে এটা ধরে নেওয়াই যায়, এবার বিশ্বকাপটা জিততে না পারলে আন্তর্জাতিক ফুটবলে আর্জেন্টিনার সবচেয়ে ভরসার মানুষটিই আর থাকছেন না!
তিনটি ফাইনাল হারার প্রসঙ্গ কতোটা জ্বালায় পোড়ায় শিল্পী ফুটবলারকে সেটাও মনে করিয়ে দেন ওই প্রশ্নের জবাবের সাথে, ‘এটা (তিনটা ফাইনালে ওঠা) সহজ না। প্রশংসা করতেই হবে। তা এটা সত্যি বটে যে জয়ী দলই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু তিনটি ফাইনালে খেলা চাট্টিখানি কথা নয়।’ পরিবর্তন।