চট্টগ্রামে চাঁদা না দেয়ায় ফ্যাক্টরিতে আগুন

চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী ও সাবেক শিবির ক্যাডার সাজ্জাদ হোসেন খান দীর্ঘদিন ধরে পালিয়ে আছেন বিদেশে। তবে বিদেশ গিয়েও থামেনি তার অপকর্ম। বর্তমানে কাতার থেকে ফোনেই চলছে তার চাঁদাবাজি, এমন অভিযোগ মিলেছে বেশ কয়েকবার। এবার শিবির ক্যাডার সাজ্জাদকে চাঁদা না দেয়ায় চট্টগ্রামের একটি ফোম কারখানায় আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে।

- Advertisement -

এ ঘটনায় ফ্যাক্টরি মালিকের দায়ের করা মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ফ্যাক্টরি এলাকার সিসিটিভি এবং চাঁদার দাবিতে ফ্যাক্টরি মালিকের কাছে আসা ফোন পর্যালোচনা করে ওই দুই আসামিকে শনাক্ত করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।

বুধবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান। এর আগে মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) রাতে বায়েজিদের হাজিরপুল রফিক ডাক্তারের পুরাতন বাড়ির সামনে থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন- কুমিল্লার নাঙ্গলকোট থানার মাইরা খাঁ মান্দার বাড়ির ইউসুফ মিস্ত্রির ছেলে মো. মোবারক হোসেন (১৯) ও বায়েজিদের চালিতাতলি এলাকার লস্কর আলী বাড়ির মো. বাবুর ছেলে মো. জিসান (২০)।

ওসি মো. কামরুজ্জামান বলেন, তানভীর আলম নামে এক ব্যক্তি চালিতাতলী এলাকায় কিছুদিন আগে কমফোর্ট হোমটেক্স নামীয় মেট্রেস এন্ড পিলো ফ্যাক্টরি চালু করেন। গত ১৭ জুলাই ও পরদিন সোমবার তার মোবাইলে বিদেশ থেকে ক্যাডার সাজ্জাদ পরিচয়ে চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে না চাইলে সাজ্জাদের অনুসারীরা বুধবার (২০ জুলাই) তার ফ্যাক্টরিতে আগুন লাগিয়ে দেয়। এ ঘটনায় তানভীর আলম থানায় মামলা দায়ের করেন।

তিনি আরও বলেন, বাদীর অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা তদন্ত শুরু করি। এক পর্যায়ে বাদীর মোবাইল ফোনে আসা কলের সূত্র ধরে ও সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দুইজনকে শনাক্ত করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার রাতে হাজিরপুল এলাকায় অভিযান চালিয়ে মোবারক ও জিসান নামে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।

উল্লেখ্য, ২০০০ সালের ১২ জুলাই নগরীর বহদ্দারহাটে দিনদুপুরে ব্রাশফায়ারে খুন করা হয় ছাত্রলীগের ৬ নেতা-কর্মীসহ আটজনকে। যা ‘এইট মার্ডার’ হিসেবে আলোচিত। এ হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্ব দেন শিবির ক্যাডার সাজ্জাদ। হত্যাকাণ্ডে শিবিরের চার ক্যাডারের ফাঁসির রায় দেন আদালত। এর মধ্যে সাজ্জাদও রয়েছেন। রায়ের পর বিদেশে পালিয়ে যান তিনি।

অভিযোগ রয়েছে, বর্তমানে বিদেশ থেকেই চাঁদাবাজি চালিয়ে যাচ্ছেন সাজ্জাদ। নগরে ইতোপূর্বেও সাজ্জাদ তার সহযোগী সরোয়ার ও ম্যাঙনের মাধ্যমে ব্যবসায়ী ও প্রবাসীদের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করত। চাঁদা না দিলে কিংবা দিতে দেরি হলে বাড়িতে পেট্রোল বোমা হামলা কিংবা গুলি করত। গত বছরের ৬ সেপ্টেম্বর বায়েজিদ থানার নয়াহাট এলাকায় এক গাড়ির যন্ত্রাংশ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে চাঁদা দাবির পর তার বাড়িতে বোমা ছোড়া হয়েছিল। ওই ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে ৮ ফেব্রুয়ারি সাজ্জাদের সহযোগী সরোয়ারকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এর আগেই সে দুবাই থেকে দেশে ফিরেছিল।

সর্বশেষ