কানাডায় ৮৩ কোটি টাকা পাচার ও ৪২৬ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের (সাবেক এনআরবি গ্লোবাল) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারসহ ১৪ জনের মামলায় চার্জগঠনের শুনানির দিন ২৯ আগস্ট ধার্য করেছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার ঢাকার ১০ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. নজরুল ইসলাম শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
আজ মামলায় চার্জগঠনের শুনানির জন্য দিন ধার্য্য ছিল। কিন্তু আসামি সময় আবেদন করায় আদালত তা মঞ্জুর করে নতুন এ তারিখ ধার্য করেন।
এ মামলায় পিকে হালদারসহ ১০ আসামি পলাতক আছেন। পলাতক অপর ৯ আসামি হলেন লিলাবতী হালদার (পি কে হালদারের মা), পূর্ণিমা রানী হালদার, উত্তম কুমার মিস্ত্রি, অমিতাভ অধিকারী, প্রিতিশ কুমার হালদার, রাজিব সোম, সুব্রত দাস, অনঙ্গ মোহন রায় ও স্বপন কুমার মিস্ত্রি।
এর আগে গত ২৭ মার্চ আদালত এ মামলার পলাতক দশ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। মামলার অপর চার আসামি অবন্তিকা বড়াল, শংখ বেপারী, সুকুমার মৃধা, অনিন্দিতা মৃধা কারাগারে রয়েছেন।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, দেশের চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে পি কে হালদার বিভিন্ন কোম্পানির নামে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা বের করে নেন। এই টাকা আর ফেরত না আসায় ওই চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে পারছে না। প্রতিষ্ঠান চারটি হলো- ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ও বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি)।টাকা বের করার আগে শেয়ার কিনে তিনি এসব প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নেন।
এই আর্থিক কেলেঙ্কারি জানাজানি হয় ২০২০ সালের শুরুতে। আর তিনি দেশ ছাড়েন ২০১৯ সালের শেষ দিকে। পলাতক অবস্থায় ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি পি কে হালদারের বিরুদ্ধে প্রায় ২৭৫ কোটি টাকা অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগে মামলা করে দুদক।
দুদকের অভিযোগপত্রে বলা হয়, পি কে হালদার নামে-বেনামে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ৬ হাজার ৭৯০ শতাংশ জমি কিনেছেন। এই সম্পদের বাজারমূল্য দেখানো হয়েছে ৩৯১ কোটি ৭৫ লাখ ৮১ হাজার ১২ টাকা। বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী এই সম্পদের মূল্য ৯৩৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে নিজের নামে তিনি জমি কিনেছেন ৪ হাজার ১৭৪ শতাংশ। এর দাম দলিলে দেখানো হয়েছে ৬৭ কোটি ৯৪ লাখ ২০ হাজার ৯৩০ টাকা। অথচ এই সম্পদের বর্তমান মূল্য ২২৮ কোটি টাকা। এ ছাড়া ধানমন্ডিতে তার নামে দুটি ফ্ল্যাট রয়েছে।
পি কে হালদার পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আইএলএফএসএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। গ্রাহকদের অভিযোগের মুখে বছরের শুরুতেই পি কে হালদারের বিদেশ পালান।বর্তমানে ভারতে কারা হেফাজতে রয়েছেন তিনি।