এই কনডেনসেটে উৎপাদিত অকটেন-পেট্রলের দাম সরকার চার মাসেও ঠিক না করায় চিন্তিত বিনিয়োগকারীরা। চাহিদার সবটা দেশে তৈরি করা গেলে এ খাতে বছরে অন্তত আড়াই হাজার কোটি টাকার সমান বিদেশি মুদ্রা বাঁচবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
দেশে অকটেন-পেট্টল লাগে বছরে ৯ লাখ টন। এর মধ্যে দেশের গ্যাসক্ষেত্রে পাওয়া কনডেনসেট থেকে তৈরি হয় প্রায় চার লাখ টন। আমদানি করে মেটানো হয় বাাকি ৫ টনের চাহিদা। এসব আমদানিতে বছরে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন-বিপিসির ব্যয় কয়েকশো মিলিয়ন ডলার। বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ে সম্প্রতি এ ধরণের ব্যয় কমানোর নির্দেশ দিয়েছেন সরকার প্রধানও।
সরকার যে চার প্রতিষ্ঠানকে কনডেনসেট আমদানির অনুমোদন দিয়েছে, তারা উৎপাদনে যায় গেল মার্চ-এপ্রিলে। কিন্তু সরকার দাম নির্ধারন না করায় বিপিসি কিনতে পারছেনা এইসব অকটেন-পেট্রল।
পারটেক্স পেট্রোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবেল আজিজ বলেন, ভ্যাট-টেক্সসহ নানা কিছু বিষয়ের সিদ্ধান্ত না হওয়ায় আমরা অকটেন-পেট্রল বিক্রি করতে পারছি না। দেশে সারাবছর যে পরিমান অটেন-পেট্রলের চাহিদা আছে তার পুরোটাই আমরাসহ চারটি কোম্পানির পূরণ করার সক্ষমতা আছে। এতে দেশের ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিদেশি মুদ্রা সাশ্রয় হবে।
বিপিসি বলছে, দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে, সেটি সমাধানের চেষ্টা চলছে।
আর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বললেন, বিদেশি মুদ্রা সাশ্রয়ের দিকেই সরকারের নজর বেশি। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে অকটেন-পেট্রল নেওয়ার জন্য আমি নির্দেশ দিয়েছি। এতে করে অনেক বিদেশি মুদ্রা সাশ্রয় হবে। একই সঙ্গে স্থানীয়ভাবে তেল উৎপাদনের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
বিপিসির চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদ বলেন, নাম নির্ধারণের ব্যাপারে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের কিছু দাবি-দাওয়া আছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি। আশা করি খুব শিগগিরই আমরা এর সমাধান করতে পারবো।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেল দুষ্পাপ্য হয়ে উঠছে । এ কারণে কনডেনসেট থেকে দেশে পেট্রল-অকটেন উৎপাদনকারীদের উৎসাহিত করার সময় এসেছে।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ম তামিম বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে পরিশোধিত তেলের দাম অনেক বেশি। বড় বড় রিফাইনারিগুলোকে এখন বেশি বেশি তেল উৎপাদন করছে। এ কারণে পরিশোধিত ও অশোধিত তেলের দামের পার্থক্য অনেক বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় স্থানীয়ভাবে পেট্রোলীযাম পণ্য উ৭পাদন করা গেলে দেশের লাভ।
জ্বালানি বিশ্লেষকদের মত, বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার এই সময়ে আমদানি নির্ভরতার পরিবর্তে, পণ্য দেশে তৈরি করা গেলে তা সামগ্রিক অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভা্ব ফেলবে।