খাদ্যশস্য সংগ্রহে আরো বিকল্প উৎসের দিকে যেতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে খাদ্যশস্য সংগ্রহের আরো বিকল্প উৎসের দিকে যাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

- Advertisement -

আজ রোববার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ নির্দেশ দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়োমিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, সুনির্দিষ্ট যেসব দেশ থেকে আমরা খাদ্যশস্য সংগ্রহ করছি, সেসব দেশের ওপর নির্ভর না করে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে আরো এক বা দুটি জায়গাকে উৎস হিসেবে ব্যবহার করার উদ্যোগ নিতে হবে। যাতে কোনো উৎস সরবরাহে ব্যর্থ হলে আমরা কোনো চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি না হই।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বর্তমানে দেশে খাদ্যশস্যের (চাল ও গম) পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে, তবে ওএমএস ও খাদ্য সহায়তা কার্যক্রমের জন্য গুদাম থেকে জনগণের কাছে যে পরিমাণ চাল যাবে আমদানির মাধ্যমে তা পূরণ  করতে এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে। এ স্বস্তিদায়ক পরিস্থিতির পরও প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন, আমদানির জন্য নির্ধারিত পাঁচটি দেশের মধ্যে কেউ খাদ্যশস্য সরবরাহ করতে না পারলে যে কোনো ধরনের চ্যালেঞ্জ এড়াতে এক বা দুটি বিকল্প জায়গা থেকে খাদ্যশস্য কেনার উদ্যোগ নিতে হবে। বর্তমানে রাশিয়া, ভারত, মিয়ানমার, ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ড থেকে খাদ্যশস্য কেনা হচ্ছে। রাশিয়া থেকে খাদ্য আমদানি হলে কোনো সমস্যা হবে না।

মন্ত্রিসভার বৈঠকে খাদ্যশস্য পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম  বলেন, বর্তমানে  দেশে ২০ লাখ মেট্রিক টনের বেশি খাদ্যশস্য মজুদ রয়েছে। খোলাবাজারে বিক্রি (ওএমএস) এবং খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি বাস্তবায়নের কারণে মানুষের চাপ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়ায় গত কয়েকদিনে চালের দাম ৪-৫ টাকা কমেছে। এ কর্মসূচি ভালো ফল দিচ্ছে।

তিনি বলেন, নভেম্বর থেকে বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকটের আশঙ্কা থাকলেও বাংলাদেশ ভালো অবস্থায় রয়েছে এবং এ সময় আমন ধানও আসবে। সম্প্রতি বেশ কয়েকজন জেলা প্রশাসকের সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। তারা জানিয়েছেন যে গ্রামাঞ্চলে মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের কারণে আমনের সেচের কাজ ভালোভাবে চলছে।

আজকের বৈঠকে মন্ত্রিসভা নীতিগতভাবে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্ট, ২০২২ অনুমোদন করেছে। বিলের বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, নতুন আইন অনুসারে এটি সম্পূর্ণ সরকারি অফিসের প্রকৃতি থেকে একটি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থায় পরিণত হবে, যা গবেষণায় আলোকপাত করবে এবং ডিপ্লোমা ডিগ্রি প্রদানের জন্য বিভিন্ন  কোর্স পরিচালনা করবে। ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান হিসেবে শিল্প সচিবের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের একটি পরিচালনা পর্ষদ থাকবে। এছাড়া ইনস্টিটিউট পরিচালনার জন্য সরকার একজন মহাপরিচালক নিয়োগ করবে।

দুই দেশের বিভিন্ন সংস্থার আইনি কাঠামো ও সহযোগিতা বিনিময়ের লক্ষ্যে মন্ত্রিসভা ‘বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে আইনি ক্ষেত্রে সহযোগিতার চুক্তি’ অনুমোদন করেছে সভা। এছাড়াও, আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংক্রান্ত কনভেনশনের ৫০(এ) এবং ৫৬ ধারা সংশোধনের প্রটোকলের অনুমোদনও মন্ত্রিসভা আজকের বৈঠকে অনুমোদন করেছে। বৈঠকে ‘মাদার অব হিউম্যানিটি সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার পদক (মেডেল)’ এর নাম পরিবর্তন করে ‘জাতীয় মানব কল্যাণ পদক-২০২২’ নামকরণের প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। এর আগে, ২০১৮ সালে মন্ত্রিসভা এটিকে মাদার অফ হিউম্যানিটি সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার পদক হিসাবে অনুমোদন করেছিল।

সর্বশেষ