কুমিল্লায় নাশকতার ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় খালেদা জিয়াকে হাই কোর্টের দেওয়া জামিন বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ।
তবে আরও কয়েকটি মামলায় খালেদার জামিন আবেদনের নিষ্পত্তি আটকে থাকায় বিএনপি চেয়ারপারসনের এখনই মুক্তি হচ্ছে না।
হাই কোর্টের জামিন আদেশের ওপর চেম্বার আদালতের দেওয়া স্থগিতাদেশ বাতিল করে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে তিন বিচারকের আপিল বেঞ্চ মঙ্গলবার রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিলের নিষ্পত্তি করে দেয়।
সর্বোচ্চ আদালতের এই রায়ের ফলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া হাই কোর্টের জামিন আদেশই বহাল থাকে।
হাই কোর্টে জামিন চাওয়ার সময় বিশেষ ক্ষমতা আইনের এই মামলায় একটি ফৌজদারি আপিল করেছিলেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। সেখানে তার স্থায়ী জামিনের আবেদন করা হয়েছিল।
আপিল বিভাগ বলেছে, আদেশ পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে হাই কোর্টে খালেদা জিয়ার আবেদনের গ্রহণযোগ্যতার বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে হবে।
রাষ্ট্রপক্ষে সোমবার লিভ টু আপিলের ওপর শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন খন্দকার মাহবুব হোসেন, এ জে মোহাম্মদ আলী ও মাহবুব উদ্দীন খোকন।
২০১৫ সালে বিএনপি জোটের টানা অবরোধ হরতালের মধ্যে ২৫ জানুয়ারি চৌদ্দগ্রামে একটি কভার্ড ভ্যানে অগ্নিসংযোগ ও গাড়ি ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। পরে চৌদ্দগ্রাম থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে এ মামলা দায়ের করা হয়।
২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ওই মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। তাতে খালেদা জিয়াসহ ৩২ জনকে আসামি করা হয়।
জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় কারাদণ্ডের রায়ের পর সাড়ে চার মাস ধরে বন্দি খালেদা জিয়া ইতোমধ্যে ওই মামলায় সর্বোচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন। কিন্তু কুমিল্লার নাশকতার দুটিসহ কয়েকটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোয় তার মুক্তি আটকে যায়।
সেই পথ খুলতে মামলাগুলোতে হাই কোর্টে জামিনের আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। গত ২৮ মে হাই কোর্ট কুমিল্লার মামলা দুটিতে জামিন মঞ্জুর করলে ঈদের আগে বিএনপি চেয়ারপারসনের মুক্তির বিষয়ে আশাবাদী হয়ে ওঠেন দলটির নেতারা।
কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে চেম্বার আদালত ওই জামিন স্থগিত করে দেয়। পরে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চ ওই স্থগিতাদেশ বহাল রেখে ২৪ জুন লিভ টু আপিল শুনানির তারিখ দিলে ঈদের আগে খালেদার মুক্তি আটকে যায়।
এর ধারাবাহিকতায় অবকাশ ও ঈদের ছুটি শেষে রোববার সুপ্রিম কোর্ট খোলার পর সর্বোচ্চ আদালতে দুই মামলায় লিভ টু আপিলের শুনানি শুরু হয়।
এর মধ্যে বাস পুড়িয়ে মানুষ হত্যার মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিলের শুনানি শেষে আদেশের জন্য ২ জুলাই দিন রাখে আপিল বিভাগ।
আর সোমবার বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলার লিভ টু আপিলের শুনানি করে বিষয়টি মঙ্গলবার খালেদার জামিন বহাল রাখল সর্বোচ্চ আদালত।
বিএনপি নেতারা অভিযোগ করে আসছেন, সরকারই ‘ষড়যন্ত্র’ করে খালেদা জিয়ার মুক্তি আটকে রেখেছেন। তবে তা প্রত্যাখ্যান করে আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, বিষয়টি পুরোপুরি আদালতের বিষয় এবং তার উপর সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ নেই।