‘কার্পেটের তলায় কী চুক্তি’, জানতে চান রিজভী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে গোপন চুক্তি হয়েছে বলে মনে করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি মনে করেন, শেখ হাসিনা সরকারকে আবার ক্ষমতায় আনার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন ভারতকে অনুরোধ করার যে কথা বলেছিলেন, সেটি নিশ্চিত করতেই ভারত গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী।

- Advertisement -

চার দিনের ভারত সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার পর থেকেই সমালোচনায় মুখর বিএনপি। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মনে করেন, এই সফরে বাংলাদেশের দৃশ্যমান কোনো অর্জন নেই।

শুক্রবার নয়াপল্টনে বিএনপির নারীবিষয়ক শাখা জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে একটি মিছিল-পূর্ব সমাবেশে এই সফর নিয়ে কথা বলেন রিজভী।

এই সফর শেষে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন, তাতে ভারতের মাটি ব্যবহার করে বাংলাদেশের বিনা মাশুলে ট্রানজিট সুবিধার কথা বলা হয়েছে। সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামানোর কথাও বলা আছে।

তবে রিজভী বলেন, ‘মানুষ প্রত্যাশা করে ভারতের সঙ্গে আলোচনা করলে কমপক্ষে সীমান্ত হত্যার বিষয়ে আলোচনা হবে। কিন্তু এটা নিয়ে অবৈধ প্রধানমন্ত্রী কোনো আলোচনা করেননি। পৃথিবীর কোনো সীমান্ত এত রক্তাক্ত নয়, যত রক্তাক্ত ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে।

‘সীমান্তে পাখির মতো মানুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এই বিষয়ে তো কখনও একটু প্রতিবাদ করেন না। তিস্তা নদীর পানি আপনি আনতে পারেন না। তাহলে চুক্তি হয়েছে কী?

তিনি বলেন, ‘কার্পেটের তলায় কী চুক্তি হয়েছে, সেটি তো আপনি (প্রধানমন্ত্রী) বাংলাদেশের জনগণকে জানাবেন না। জনগণ যেটাকে সাদা মনে করে, আপনি সেটাকে কালো মনে করেন।’

এই বিএনপি নেতা মনে করেন, প্রধানমন্ত্রীর এই সফরের উদ্দেশ্য ক্ষমতায় টিকে থাকা। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী পার্শ্ববর্তী দেশে গিয়েছিলেন, যেতেই পারেন। তার কয়েক দিন আগে তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী যে কথা বলেছিলেন, সেটা যে মিথ্যা ছিল এটা ভাবার কোনো কারণ নেই। কারণ যে প্রধানমন্ত্রী বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হত্যা করে, তিনি তো ভালো করেই জানেন, অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তিনি জিততে পারবেন না। কাজেই তাকে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য অন্য কোনো পদ্ধতি নিতে হবে। পরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য এখন বাস্তবায়ন হওয়া দেখছি।’

বিএনপির কর্মসূচিতে পুলিশ এবং আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠন হামলা করছে অভিযোগ করে তারও নিন্দা জানান রিজভী।

তিনি বলেন, ‘২২ আগস্ট থেকে সারা দেশে বিএনপি জনবান্ধব কর্মসূচি পালন করছে। জ্বালানি তেলের মূল্য অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিএনপি সারা দেশে কর্মসূচি পালন করছে। সরকার জনগণকে দুর্ভিক্ষের মধ্যে ফেলে দেয়ার যে ষড়যন্ত্র করেছে, তার প্রতিবাদে আমাদের কর্মসূচি চলছে। এটা তো কোনো ব্যক্তিগত কর্মসূচি ছিল না। কিন্তু এই কর্মসূচিও বানচাল করার জন্য সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও তার দলীয় ছাত্রলীগ-যুবলীগ সারা দেশ রক্তাক্ত করেছে। তিনজনকে হত্যা ও অসংখ্য নেতাকর্মীকে আহত করেছে।

‘এখন মিছিল-মিটিং দেখামাত্রই গুলি করা হচ্ছে। সেই গুলির আঘাতে কারও চোখ নষ্ট হচ্ছে আবার অনেকেই পঙ্গুত্ব বরণ করছে। ওরা (সরকার) কখনও সুষ্ঠু নির্বাচনে বিশ্বাস করবে না, নির্দলীয় নির্বাচনে বিশ্বাস করবে না। ওরা অন্যের ওপর ভর করে আবারও ক্ষমতায় থাকতে চায়। অন্যের আশ্রয়ে, অন্যের সমর্থনে ক্ষমতায় থাকতে চায়। ওনার (সরকারের) পররাষ্ট্রমন্ত্রী আগেই বলেছেন এসব কথা।’

মিছিল-পূর্ব এই সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সেলিমা রহমান, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক হেলেন জেরিন খানও উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ