তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের মামলায় গ্রেফতার কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খানকে বিনামূল্যে আইনি সহায়তা দিচ্ছেন সুপ্রিম কোর্টের ২০ আইনজীবী।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া ও আইনুন নাহার সিদ্দিকা এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
এই প্রসঙ্গে জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে ব্যারিস্টার সারা হোসেন,অ্যাডভোকেট আরিফুল হক, অ্যাডভোকেট জিয়া ও আমিসহ সুপ্রিম কোর্টের পাঁচজন আইনজীবী শাহবাগ থানায় গিয়েছিলাম।কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের কারা কারা থানায় আটক আছে সে বিষয়ে খোঁজ-খবর নেওয়ার চেষ্টা করেছি। থানার কর্মকর্তাদের থেকে তাদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করেছি।
তিনি বলেন, আমরা শাহবাগ থানার কোর্ট সেকশন (জিআর) থেকে কিছু তথ্য নিলাম। সেই তথ্য অনুসারে, আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত মোট ৫টি মামলা করা হয়েছে। এই ৫টি মামলার মধ্যে শুধু রাশেদের মামলাটি আমাদের কাছে আছে। বাকি ৪টি মামলার কোথায় কী অবস্থা সে বিষয়ে এখনও কাগজপত্র হাতে পাইনি।
সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী বলেন, ২ জুলাই থেকেই আমরা রাশেদকে আইনি সহায়তা দিয়ে আসছি। ওইদিন আমরা (সুপ্রিম কোর্টের ২০ আইনজীবী) তার পক্ষে শুনানি করেছি। আদালত তাকে ৫ দিনের রিমান্ড দিয়েছে। রিমান্ড শেষে আমরা তার জামিন চেয়ে আবেদন জানাবো।
এদিকে রাশেদের মা সালেহা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার মনি একজন নিরপরাধ ছাত্র। সে কোনো অন্যায় করেনি। তারে আপনারা ছেড়ে দেয়ার ব্যবস্থা করেন। সে ছাড়া আমরা অচল। সে তো সকল ছাত্র সমাজের জন্য আন্দোলন করেছে।
সে তো ইচ্ছা করে নেতা হতে যায়নি। সবাই তারে নেতা বানিয়েছে। মনিতো কোনো অন্যায় করেনি। তাহলে তার হাতে কেন হাতকড়া পরানো হলো। তাকে বিনা দোষে কেন জেলে নেয়া হলো।
রাশেদের বৃদ্ধ বাবা নপাই বিশ্বাস বলেন, বাড়ি বাড়ি রাজমিস্ত্রির কাজ করে এই ছেলেকে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করেছি। রাজমিস্ত্রি কাজ করে ছেলের খরচ ঠিকভাবে চালাতে না পেরে গ্রামের বাড়িতে নিজের পাঁচ শতক ভিটাবাড়ির জমি ছিল সেটাও কৃষি ব্যাংকে বন্ধক রেখে ঋণ নিয়েছি। অনেক আশা ছিল ছেলে আমার পড়াশোনা শেষ করে ভালো একটা সরকারি চাকরি করবে। ব্যাংক থেকে ভিটাবাড়িটা উদ্ধার করবে। আমাদের দুঃখের দিন শেষ হবে। একটু সুখের মুখ দেখবো। তা বুঝি আর হলো না।
এর আগে গত রোববার ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক আল-নাহিয়ান খান জয়ের শাহাবাগ থানায় তথ্য-প্রযুক্তি আইনে দায় করা মামলায় সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের প্লাটফর্ম বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. রাশেদ খানকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।