রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
spot_img

চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ-হালিশহরে জলাবদ্ধতার কারণ চিহ্নিত

মো.মুক্তার হোসেন বাবু : চট্টগ্রাম মহানগরীর আগ্রাবাদ-হালিশহর এলাকার দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতার যথাযথ কারন চিহ্নিত করা হয়েছে। চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে জলাবদ্ধতার কারণ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার নুরুল আলম মিনা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জলাবদ্ধতা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক লেঃ কর্ণেল রেজাউল করিমসহ সিডিএ, জেলা পুলিশ এবং প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সিইজিআইএস -এর প্রকৌশলীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে পুলিশ সুপার বলেন, ১৯৮১ সালে প্রতিষ্ঠিত এই পুলিশ লাইনটির জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয় ১৯৭৮ সালে। সেই থেকে ধীরে ধীরে এই পুলিশ লাইনের বিভিন্ন স্থাপনা গুলো নির্মান করা হয়েছে। পুলিশ লাইনটি রামপুরা খাল নামে খ্যাত মহেশখালের শাখা খালটির পাড়ে অবস্থিত হওয়ায় হালিশহর এলাকার সব ড্রেনের পানি পুলিশ লাইনের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে রামপুর খালে গিয়ে পড়ে। অতিবৃষ্টির সময় বা জোয়ারের সময় উক্ত খালটি উপচিয়ে পুলিশ লাইন ডুবে যায়। পুলিশ লাইনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, অস্ত্রাগারসহ অফিস এবং পুলিশ ব্যারাক রয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ হতে অনেকবার চেষ্টা করা হলেও সমাধান করা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে পুলিশ সুপার সিডিএ চেয়ারম্যানের সহায়তা কামনা করেন।
সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বলেন, জলাবদ্ধতার এ সমস্যা দীর্ঘদিনের। হালিশহর, আগ্রাবাদ, শান্তিবাগ, সিডিএ আবাসিক এলাকার জনসাধারনের সাথে জেলা পুলিশের সাথে দীর্ঘদিনের বিরোধ সমাধানকল্পে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা হচ্ছে। বর্তমানে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃক গৃহীত জলাবদ্ধতা প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্র্র্তৃক জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে, এখন সমাধান হবে। এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক এবং প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিকে তাদের পরিকল্পনা উপস্থাপনের নির্দেশনা প্রদান করেন। পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে উক্ত এলাকার ড্রেনেজ লে-আউট ও ডিজাইন তৈরি করে পুলিশ লাইনের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ড্রেনগুলো পরিষ্কার এবং প্রশস্ত’করনের পাশাপাশি রামপুর খালটি পরিষ্কার করে পানি প্রবাহের ব্যবস্থা করা আহবান জানান। এতে করে জেলা পুলিশ লাইন, হালিশহর, আগ্রাবাদ, শান্তিবাগ, সিডিএ আবাসিক, গোসাইলডাঙ্গা, ছোটপুল এলাকার জনসাধারণ জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাবে। সভা শেষে সিডিএ চেয়ারম্যান, সেনাবাহিনী প্রতিনিধি এবং পুলিশ সুপার, প্রকল্পের পরামর্শক পুরো এলাকাটি পরিদর্শন করেন।
এসময় সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম আরো বলেন, আগ্রাবাদ ছোটপুল পুলিশ লাইনের পাশের কালভার্টের নিচ দিয়েই প্রবাহিত হয়েছে মহেশ খাল। কালভার্টের উপর দাঁড়ালে উভয় পাশে থাকালে বোঝার উপায় নেই নিচে একটি খাল রয়েছে। একসময় এই খালটি যথেষ্ট প্রবাহমান ছিল। কয়েক বছর আগেও বাঁশ ব্যবসায়ীরা এই খালটি দিয়ে বাঁশের মাচা নিয়ে আসতেন। কিš’ গার্মেন্টেসের নিক্ষিপ্ত বর্জ্য, পলিথিন, ফোম, প্লাস্টিকসহ নানা ধরণের আবর্জনায় খালটি এখন ভরাট হয়ে গেছে। খনন না করায় এবং পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় খালের উপর গাছ গাছড়ায় ভরে গেছে। তাছাড়া খাল দখল করে বেশকিছু স্থায়ী স্থাপনা গড়ে তুলেছেন দখলদারেরা। বৈঠকে আরো জানানো হয়, পুলিশ লাইনের কালভার্টে বাধের কারণে পুলিশ লাইন রক্ষা হলেও হালিশহর, শান্তিবাগ, সিডিএ আবাসিক, গোসাইলডাঙ্গা, ছোটপুল এলাক পানিতে তলিয়ে যায়। এখন বৃষ্টি হলেই পানি উঠে। কিন্তু নামতে চায় না। তিনি এলাকাবাসীকে আশ্বস্ত করে বলেন, দ্রæত এসমস্যা সমাধানের বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কাজ শুরু করবে।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিডিএ বোর্ড সদস্য জসিম উদ্দিন শাহ, কেবিএম শাহজাহান, প্রকল্পের পরিচালক আহমেদ মঈনুদ্দিন, সহকারী প্রকল্প পরিচালক কাজী কাদের নেওয়াজ প্রমুখ।

সর্বশেষ