মিতু হত্যা মামলায় সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের বিচার শুরুর আদেশ

মো.রাশেদ :: চট্টগ্রামে চাঞ্চল্যকর মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। আজ সোমবার চট্টগ্রাম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। আদালত সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ৯ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন।

- Advertisement -

মামলার সাত আসামির অন্যরা হলেন- (১)মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম, (২)আনোয়ার হোসেন, (৩)এহতেশামুল হক ভোলা, (৪)শাহজাহান মিয়া, (৫)কামরুল ইসলাম ও (৬)খায়রুল ইসলাম।

দুপুর ১২টার দিকে আসামি বাবুল আক্তার, আনোয়ার হোসেন, শাহজাহান মিয়া, মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিমসহ জামিনে থাকা এহতেশামুল হক ভোলাকে আদালতে হাজির করা হয়।

বাবুল আক্তারের আইনজীবী শিশির মনির প্রিয় সংবাদকে বলেন, এই মামলা থেকে বাবুল আক্তারের অব্যাহতিসহ তিনটি আবেদন করেছি। কিন্তু অব্যাহতির আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।

তিনি বলেন, বাবুল আক্তারের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য আবেদন করা হয়েছে। তা আদালত মঞ্জুর করেছেন। এ ছাড়া বাবুল আক্তারকে ফেনী কারাগার থেকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তরের আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত। ইতিমধ্যে আদালত প্রসিকিউশন শাখায় বাবুলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন তার আইনজীবীরা।

২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে নগরের ও আর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হন সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু। তৎকালীন পুলিশ সুপার ও মিতুর স্বামী বাবুল আক্তার পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাত পরিচয়দের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। পরে বাবুল আক্তারের দায়ের করা মামলায় স্ত্রী হত্যাকাণ্ডে তারই সম্পৃক্ততা পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এরপর গত বছরের ১২ মে আগের মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার দিন বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানায় আরেকটি মামলা করেন মিতুর বাবা অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন। ওইদিনই মামলাটিতে বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায় পিবিআই।

২০২১ সালের ১২ মে আগের মামলাটিতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার দিন বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে পাঁচলাইশ থানায় দ্বিতীয় মামলা করেন মিতুর বাবা।

প্রথম মামলায় পিবিআইর দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ১৪ অক্টোবর বাবুল আক্তারের নারাজি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একই বছরের ৩ নভেম্বর নারাজি ও পিবিআইয়ের প্রতিবেদন খারিজ করে মামলাটি অধিকতর তদন্তের আদেশ দেন আদালত।

এরপর দুটি মামলার তদন্ত করতে থাকে পিবিআই। গত বছরের ২৫ জানুয়ারি বিকেলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক আবু জাফর মোহাম্মদ ওমর ফারুক চট্টগ্রাম আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় প্রতিবেদন জমা দেন।

অন্যদিকে একই বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর প্রথম মামলাটি অধিকতর তদন্ত শেষে বাবুলসহ সাতজনকে আসামি করে আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় ২ হাজার ৮৪ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন জমা দেয় পিবিআই।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০১৩ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত কক্সবাজার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থাকাকালে বাবুলের সঙ্গে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নারী কর্মকর্তার সম্পর্ক হয়। এই সম্পর্কের জেরে বাবুলের পরিকল্পনায় মাহমুদাকে খুন করা হয়। এ জন্য তিনি সোর্সের মাধ্যমে তিন লাখ টাকায় খুনি ভাড়া করেন।

সর্বশেষ