spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

রোহিঙ্গারা ফেরত গেলে নাগরিকত্বের আবেদন করতে পারবে: মিয়ানমারের মন্ত্রী

spot_img

বৃহস্পতিবার,১২ এপ্রিল,২০১৮

- Advertisement -

 

প্রিয় সংবাদ ডেস্ক: বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে গেলে তাদের ন্যাশনাল ভেরিফিকেশন কার্ড দেওয়া হবে। তারা যখন নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করবে, তখন তাদের ন্যাশনাল ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সফররত মিয়ানমারের সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার মন্ত্রী উইন মিন্ট অয়।

বৃহস্পতিবার (১২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহামুদ আলী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন মিয়ানমারের সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার মন্ত্রী উইন মিন্ট অয়।

রোহিঙ্হা প্রত্যাবাসনের পর তাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে মিয়ানমারের সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার মন্ত্রী উইন মিন্ট অয় বলেন, ‘তারা ফেরত গেলে তাদের ন্যাশনাল ভেরিফিকেশন কার্ড দেওয়া হবে। তারা যখন নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করবে, তখন তাদের ন্যাশনাল ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া শুরু হবে।’

এ প্রক্রিয়ার ব্যাপারে তিনি আরও বলেন, ‘আগে এ প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত ধীর গতির ছিল। এখন দ্রুততার সঙ্গে এটি করা হচ্ছে।’

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য অতি শিগগিরই জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা-ইউএনএইচসিআর ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি-ইউএনডিপি এর সঙ্গে মিয়ানমার সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করবে বলেও জানান মিয়ানমারের এ মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা ইউএনএএইচসিআর ও ইউএনডিপি-এর সঙ্গে আলোচনা করেছি এবং খুব শিগগিরই সমঝোতা স্মারকটি চূড়ান্ত করবো এবং স্বাক্ষর করবো।’

মিয়ানমারের যেসব জেনারেল রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন করেছে তাদের বিচার হবে কিনা জানতে চাইলে মিয়ানমারের মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের এখন নতুন প্রেসিডেন্ট হয়েছেন। এবং তার কথা হচ্ছে- উই মাস্ট হ্যাভ রুল অব ল, আমাদের অবশ্যই আইনের শাসন থাকতে হবে। যদি কেউ আইন ভঙ্গ করে, তাহলে আমরা আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে, কক্সবাজারে সেসব উদ্বাস্তু রয়েছে তাদের সঙ্গে আলোচনা করা এবং দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে যতো দ্রুত সম্ভব প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করা।’

এসময় পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ এইচ মাহামুদ আলী বলেন, ‘প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য দুই দেশের সদ্চ্ছিার প্রয়োজন। আমরা আজ প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেছি। দুই পক্ষ সম্মত হয়েছে যে, প্রত্যাবাসন ফরম পূরণ করে যতো শিগগির সম্ভব প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।’

আলোচনার ব্যাপারে তিনি আরও বলেন, ‘মিয়ানমারে যেসব গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে, সেগুলো পুনর্নিমাণের ওপার জোর দিয়েছি। এবং তারা আমাদের জানিয়েছেন, অন্যান্য দেশ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমে সেগুলো পুনর্নিমাণ করা হচ্ছে।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানান, রোহিঙ্গারা ফেরত যাওয়ার পর তাদের কয়েকদিনের জন্য অস্থায়ী ক্যাম্পে রাখা হবে। তারপর তারা তাদের নিজ গৃহে ফেরত যেতে পারবেক বলে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

বৈঠকের ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘আমরা তাদের দ্রুত প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করার কথা বলেছি। কারণ, আমরা অনেক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। মিয়ানমারের দিকে সীমান্তের জিরো লাইনে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের দ্রুত ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করলে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ সেটিতে রাজি হয়।’

এ ব্যাপারে মিয়ানমার পিস কিমিশনের সদস্য অং টুং থাড বলেন, ‘আমরা রোহিঙ্গাদের ফেরত যেতে বলেছি। আমরা স্বেচ্ছামূলক, নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। রোহিঙ্গারা আগে যেভাবে থাকতো, এখন তার থেকে আরও ভালোভাবে থাকার ব্যবস্থা করবো।’ প্রত্যাবাসনে প্রক্রিয়ার ব্যাপারে কিছুটা উদ্বেগ থাকলেও তা দ্রুত সমাধানের কথাও বলেছেন তিনি।

উল্লেখ্য, মিয়ানমারের মন্ত্রী গতকাল কক্সবাজারে কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করে তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। সেসময় রোহিঙ্গারা বিক্ষোভ প্রদর্শণ করে। এই প্রথম কোনও মিয়ানমারের মন্ত্রী রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করলেন।বাংলা ট্রিবিউন

spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

সর্বশেষ