বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি ২০২৫
spot_img

সহসাই মুক্তি পাচ্ছেন না খালেদা জিয়া

 

- Advertisement -

দীর্ঘ ৫ মাস ধরে কারাগারে রয়েছেন বিএনপি চেয়ার পারসন বেগম খালেদা জিয়া। তার আইনজীবীরা মুক্তির জন্য লড়াই চালালে একের একের পর এক মামলা যুক্ত হওয়ায় মুক্তির পথ মিলছেনা। মূলত জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজা মাথায় নিয়ে চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান খালেদা জিয়া। এর পর বেশ কয়েকটি মামলায় তাকে আইনী লড়াই করতে হচ্ছে এখন। যার কারণে তার মুক্তি দীর্ঘায়িত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা।

খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা জানিয়েছেন মুক্তি পেতে হলে এখনো ৬ মামলায় লড়তে হবে খালেদা জিয়াকে। আর এসব মামলায় জামিন নিশ্চিত হলেই মিলবে তার মুক্তি। তবে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার আপিল নিষ্পত্তির আদেশ রয়েছে আপিল বিভাগের। আর এ সময়ের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তি হয়ে সাজা বহাল থাকলে তার মুক্তিতে আরও বেশি জটিলতা তৈরি হবে বলে মনে করছেন আইনজীবীরা।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা : জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধি চেয়ে করা আবেদনের শুনানি হবে বৃহস্পতিবার। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হবে। গত ১২ মার্চ এ মামলায় চার মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেন হাইকোর্ট। তবে জামিনের মেয়াদ প্রায় শেষের দিকে। তাই জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধি চেয়ে আবেদন করেছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। এদিকে এ মামলায় বিচারিক আদালতের সাজার বিরুদ্ধে খালেদা জিয়া ও অন্যান্য আসামিদের করা আপিল শুনানির জন্যও বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে দিন ধার্য রয়েছে।

এছাড়া এ মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার আপিল ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে নিষ্পত্তির আদেশ রিভিউ চেয়ে করা আবেদনের বিষয়ে বৃহস্পতিবার আদেশ দিবেন আপিল বিভাগ।

কুমিল্লার হত্যা মামলা : কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে হত্যা মামলায় খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত রেখেছেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে চার সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে হাইকোর্টে রুল নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে। হাইকোর্টের দেওয়া জামিনাদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে ২ জুলাই এ আদেশ দেন আপিল বিভাগ। তাই এ মামলায়ও খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টে আবার শুনানি করতে হবে জামিনের জন্য। আর এ মামলাটি বুধবারের কার্যতালিকায় শুনানির জন্য রয়েছে।

ঢাকায় মানহানির দুই মামলা : ১৫ আগস্ট ভুয়া জন্মদিন পালন এবং যুদ্ধাপরাধীদেরকে মন্ত্রী বানিয়ে তাদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দেয়ার মানহানির মামলায় জামিন নিতে হবে খালেদা জিয়াকে। গত ৫ জুলাই পুরান ঢাকার বকশিবাজারের অস্থায়ী আদালতে এ দুই মামলায় জামিন আবেদন ফিরিয়ে দেন।

কুমিল্লার নাশকতার মামলা : কুমিল্লায় নাশকতার অভিযোগে দায়ের করা বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় খালেদা জিয়াকে জামিন নিতে হবে। এ মামলায় হাইকোর্টে জামিন আবেদনের শুনানি চলছে। দুই দিন শুনানি শেষে আগামী ১৫ জুলাই পর্যন্ত তা মুলতবি রেখেছেন আদালত। ২০ দলীয় জোটের অবরোধ চলাকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রামে বাসে দুষ্কৃতিকারীদের ছোড়া পেট্রোল বোমার ঘটনায় ২০১৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি পুলিশ বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করে।

নড়াইলের মানহানি মামলা : নড়াইলে দায়ের করা মানহানির মামলায়ও খালেদা জিয়াকে জামিন নিতে হবে। গত ৫ জুন নড়াইলের জেলা ও দায়রা জজ শেখ আব্দুল আহাদ এ মামলায় খালেদার জামিন আবেদন নাকচ করে বলেছেন, হাকিম আদালত জামিন প্রশ্নে সিদ্ধান্ত দেওয়ার আগেই জজ আদালতে আসায় ওই আবেদন নামঞ্জুর করা হয়েছে। এখন এ মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিনের চেষ্টা করছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।

প্রসঙ্গত, এ বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার পাঁচ বছর কারাদ- হয়। একইসঙ্গে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অপর পাঁচ আসামিকে ১০ বছর করে দ- দেন বিচারিক আদালত। ১৯ ফেব্রুয়ারি রায়ের সার্টিফায়েড কপি হাতে পান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। এরপর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ২০ ফেব্রুয়ারি আপিল করেন খালেদা জিয়া। অন্যদিকে খালেদা জিয়ার সাজা বৃদ্ধিতে দুদক আবেদন করলে হাইকোর্ট রুল জারি করেন। এছাড়া ১০ বছরের দ-প্রাপ্ত মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল এবং ব্যবসায়ী শরফুদ্দিনও হাইকোর্টে আপিল করেন।

সর্বশেষ