spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

চট্টগ্রাম মহাসড়কের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ও পরিচ্ছন্নতার কাজে নেমেছে শিক্ষার্থীরা

spot_img

আকমুল জাহান জ্যাকলিন : চট্টগ্রামে শিক্ষার্থীরা পরিচ্ছন্নতা ও ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে মাঠে নেমেছেন। যেখানে কয়েকদিন আগেও তারা সরকারের বিরুদ্ধে লাঠি হাতে নেমেছিলেন, এখন তারা হাতে কলমের পরিবর্তে ঝাড়ু ও ট্রাফিক নির্দেশনা চিহ্ন নিয়ে কাজ করছেন। সড়কে ট্রাফিক পুলিশ না থাকার মধ্যে বৃহস্পতিবার টানা তৃতীয় দিনের মতো রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীরা যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা গেছে।

- Advertisement -

এর পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের রাস্তা ও বিভিন্ন স্থান পরিষ্কার করতে এবং সারাদেশের বিভিন্ন স্থাপনা পাহারা দিতে দেখা গেছে।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগ করেন এবং তার স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে অভূতপূর্ব ছাত্র-নেতৃত্বাধীন গণ-অভ্যুত্থানের মধ্যে তার ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।

ঘটনার পর সারাদেশে অনেক থানা ও স্থাপনা হামলার মুখে পড়ে এবং পুলিশ তাদের দায়িত্ব সাময়িক বরখাস্ত করে।

মঙ্গলবার পুরো দেশের সড়কে কোনো ট্রাফিক পুলিশ দেখা যায়নি, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে থাকে।

একই রাতে সারাদেশে থানা নিরাপত্তা, ঢাকা মহানগরীর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা এবং হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা দিতে সেনা সদস্যদের পাশাপাশি বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শিক্ষার্থীদের অবশ্য কয়েকজন আনসার সদস্য, বাংলাদেশ স্কাউটস সদস্য, রাজনৈতিক দলের কর্মী এবং সাধারণ মানুষের সমন্বয়ে গঠিত অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবকদের সাথে চট্রগ্রাম শহরের যানজট পরিচালনা করতে দেখা গেছে।

আগ্রাবাদ, হালিশহর, সাগরিকা, অলংকার, খুলশি, জিইসি, ২ নং গেইটস বিভিন্ন ক্রসিংয়ে নারীসহ শিক্ষার্থীদের পরিচয়পত্র নিয়ে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা গেছে। .

সকাল ১০ টা থেকে চট্টগ্রাম বিজিএমিএ ইন্সটিটিউট অফ ফ্যাশন এন্ড টেকনোলজি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১৫ জন শিক্ষার্থীকে যানজট পরিচালনা করতে দেখা যায়। তাদের মধ্যে একজন ছাত্র রিয়ন মিনহাজ জানান, বর্তমান দেশের স্বৈরাচার পতনের পর আমাদের ট্রাফিক ব্যবস্থা এবং দেশের অবস্থা আর ঠিক নেই তাই এসব সংস্কার এর জন্য শিক্ষার্থীরা মাঠে নেমেছে সেই সুবাদে তারা নিজেদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে দেশ সংষ্কার এর কাজ করছেন।
এবং একই প্রতিষ্ঠান এর ছাত্র আশরাফ আলম চৌধুরী জানায় দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থী ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ এবং চারপাশের পরিবেশ পরিচ্ছন্নতা নিয়ে কাজ করছে।একজন শিক্ষার্থী হিসেবে দেশের সেবা করার এই সুযোগ হাতছাড়া করতে চায়নি তিনিও।তাই ৪ দিন ব্যাপী কর্মসূচীতেআমাদের বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থী গণ সকাল ১০ টা হতে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ,পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং স্বাধীনতার বিষয়বস্তুর উপর ভিত্তি করে দেয়ালে চিত্রাঙ্কন করেন।

আরও একজন ছাত্র মোহাম্মদ রিদুয়ানুর রহমান জানান, প্রথমত তারা সবাই এই দেশের নাগরিক। দেশের এই দুর্লভ পরিস্থিতিতে সকল শিক্ষার্থীরা, দেশের সকল জনসাধারণের সুবিধার্থে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ করছেন যাতে সাধারণ মানুষের কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতে না হয়। দেশ আমাদের সবার, দায়িত্বও আমাদের নিতে হবে। নতুন করে সবাই মিলে দেশটাকে গড়তে চাই। এতে প্রতিটি মানুষের মধ্যে নতুন করে দেশ নির্মাণের প্রেরণা সৃষ্টি হচ্ছে।

এবং অন্য একজন ছাত্রী নাবিলা আনজুম জানান, দেশের প্রতি দায়িত্ব থেকে তারা জানবাহন নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে এসেছেন এবং তারা শহরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে চান।

সকালে যানবাহন, বিশেষ করে গণপরিবহনের সংখ্যা কম ছিল যা পরে বাড়তে শুরু করে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পরিষ্কার করছেন শিক্ষার্থীরা।নতুন যুগের ছবি শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে তরুণ উদ্যোক্তা থেকে শুরু করে চাকরিজীবী, বন্ধুবান্ধব, পরিবার বা প্রতিবেশীদের নিয়ে বৃহস্পতিবার টানা তৃতীয় দিনের মতো রাস্তা পরিষ্কার করতে দেখা গেছে।এছাড়াও স্থানীয় মানুষরা জানিয়েছেন যে শিক্ষার্থীদেরকে টানা তৃতীয় দিনের মতো গুরুত্বপূর্ণ সব ক্রসিংয়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ এবং বন্দর নগরী পরিষ্কার করতে দেখা গেছে। এসময়ে স্থানীয় লোকজন ছাত্রদের খাবার এবং পানিয় দিয়ে উৎসাহও দিতে দেখা গেছে।

spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

সর্বশেষ