spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

আইনজীবী সাইফুল ইসলামের পরিবারে শোকের মাতম

নিজস্ব প্রতিবেদক
spot_img

তাসকিয়ার বয়স সবে দেড় বছর। বাড়িতে লোকজনের ভিড় দেখে এদিক সেদিক তাকাচ্ছে বারবার। কখনও কখনও আধো আধো শব্দে ‘বা বা বাবা….’ এমনটা বলছে। তাসকিয়ার মন ভালো নেই। সদা হাস্যোজ্জ্বল শিশুটির মুখ ভর্তি বিষাদ। চোখের কোণে এই বুঝি জল এলো এলো। বাবাকে হারানোর শূন্যতা তার ছোট্ট হৃদয়কেও যেন নাড়া দিয়েছে। হয়তো পুরো বিষয়টা বুঝতে পারলে হাজার গুণ হতো এই বেদনা। যে ব্যাথায় অকাতরে অস্রু ঝরিয়ে যাচ্ছেন তাসকিয়ার মা, দাদা-দাদি। শোক ছেয়ে গেছে পুরো বাড়ি, পুরো এলাকা এমনকি পুরো দেশে।

- Advertisement -

বলছিলাম চট্টগ্রামের আদালত প্রাঙ্গণে খুন হওয়া আইনজীবী সাইফুলের পরিবারের চলা শোকের কথা। মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার সদর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের টেন্ডলপাড়া এলাকায় তাদের নতুন বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় এমন শোকের দৃশ্য।সাইফুল ইসলাম আলিফ সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি)। তিনি লোহাগাড়ার চুনতি এলাকার জামাল উদ্দিনের ছেলে। ছাত্রজীবনে তুখোড় মেধাবী ছিলেন সাইফুল। জিপিএ ফাইভ পেয়ে দাখিল পাশ করেছিলেন আধুনগর ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসা থেকে। মাদরাসা থেকে দাখিল পাশ করে ইন্টারমিডিয়েট পড়েন চট্টগ্রাম সরকারি কলেজে। সেখানেও মেধার সাক্ষর রাখেন। পরে আর্ন্তজাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম (আইআইইউসি) থেকে এলএলবি পাশ করে আইন পেশায় নিযুক্ত হন। চট্টগ্রাম আদালতে প্র্যাক্টিস করতেন তিনি। আজকেও প্রতিদিনকার মতো পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি। তবে ইসকন নেতা চিন্ময় দাশের জামিন নামঞ্জুরের ঘটনায় সংঘর্ষে খুন করা হয় তাকে।

আইনজীবী সাইফুলের ৭২ বছর বয়সী বাবা জামাল উদ্দিন বলেন, আমি কখনো কল্পনা করিনি আমার ছেলে এভাবে আমার আগে চলে যাবে। আমার ছেলে তাহাজ্জুদগুজার ছিল। আমার ছেলে নিয়মিত নামাজি ছিল। বিনা অপরাধে আমার ছেলেকে তারা মেরে ফেলেছে। আমি আমার কলিজার টুকরো ছেলে হত্যার বিচার কার কাছে চাইবো?

তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমি কখনো কল্পনা করিনি আমার ছেলে এভাবে আমার আগে চলে যাবে। আমার ছেলে তাহাজ্জুদগুজার ছিল। আমার ছেলে নিয়মিত নামাজি ছিল। বিনা অপরাধে আমার ছেলেকে তারা মেরে ফেলেছে। আমি আমার কলিজার টুকরো ছেলে হত্যার বিচার কার কাছে চাইবো?

সাইফুলের ভগ্নিপতি কাজী মাওলানা বদরুদ্দিন সাদী জানিয়েছেন, তারিন এখন সন্তানসম্ভবা। মঙ্গলবার একদল সন্ত্রাসী কেড়ে নিলো তার স্বামীর জীবন। ভেঙে খানখান হয়ে গেল সোনালী সংসার। প্রাণপ্রিয় স্বামীকে উগ্রসন্ত্রাসীরা জবাই করে হত্যা করেছে এ খবর শোনার পর বেহুঁশ হয়ে গেছেন স্ত্রী তারিন। আইনজীবী সাইফুলরা ৫ ভাই ২ বোন। সাইফুল ছিলেন ৩য়।

সাইফুলের ফুফাতো ভাই মো. মহিউদ্দিন জানান, পাঁচ ভাই দুই বোনের মধ্যে সাইফুল তিন নম্বর সন্তান। তিন বছর আগে বিয়ে করেন তিনি। তাদের সংসারে মাসুরা ইসলাম তাসকিয়া নামে দেড় বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।

তার বড় মামা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সাইফুল ছোটবেলা থেকেই একজন নম্র-ভদ্র স্বভাবের ছিলো। সে দুষ্কৃতকারীর হাতে শহীদ হয়েছেন। পারিবারিকভাবে আমরা খুবই মর্মাহত। এ ঘটনায় আমরা প্রশাসনের কাছে বিচার চাই।

spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

সর্বশেষ