spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

সরকারের পক্ষ থেকে ‘জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র’ দেওয়া হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক
spot_img

বছরের মাঝামাঝি সময়। জুলাইয়ের তপ্ত দুপুরে রাজধানী জুড়ে অস্থির এক উত্তেজনা। রাস্তা-ঘাটে মানুষের ভিড়, হাতে লিফলেট, ব্যানার, আর কণ্ঠে একটাই স্লোগান—পরিবর্তন চাই!

- Advertisement -

সরকারের পক্ষ থেকে হঠাৎ ঘোষণা এলো—”আজ সন্ধ্যা ৭টায় জাতীয় সম্প্রচার মাধ্যমে এক বিশেষ ঘোষণা করা হবে।” চারদিকে ছড়িয়ে পড়লো এক ধোঁয়াশা। সবাই অপেক্ষা করতে থাকলো।

সন্ধ্যা ৭টা। রেডিও, টেলিভিশন, অনলাইন মিডিয়া, সবখানে সম্প্রচার শুরু হলো। প্রধানমন্ত্রী নিজে জাতীয় পতাকা সামনে রেখে বক্তব্য রাখছেন:

প্রেস উইং জানায়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা জনগণের ঐক্য, ফ্যাসিবাদবিরোধী চেতনা ও রাষ্ট্র সংস্কারের আকাঙ্ক্ষাকে সুসংহত রাখার জন্য এ ঘোষণাপত্রটি গৃহীত হবে।

প্রেস উইং আরও জানায়, গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ অংশগ্রহণকারী সকল শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক দল ও পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে ঘোষণাপত্রটি প্রস্তুত করা হবে। এতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিত, ঐক্যের ভিত্তি ও জনগণের অভিপ্রায় ব্যক্ত হবে। আমরা আশা করছি, সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে কিছুদিনের মধ্যেই সর্বসম্মতিক্রমে এ ঘোষণাপত্র প্রস্তুত করা হবে এবং জাতির সামনে উপস্থাপন করা হবে।

এর আগে, রোববার (২৯ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রকে আমরা বেসরকারি উদ্যোগ হিসেবে দেখছি। এর সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই।

তিনি বলেন, এটা একটা প্রাইভেট ইনিশিয়েটিভ। আমরা প্রাইভেট ইনিশিয়েটিভ হিসেবে দেখছি। এটাতে সরকারের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

এ প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত ঘোষণা না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের কাছে বিষয়টি স্পষ্ট নয়। ঘোষণা না আসা পর্যন্ত আমাদের পক্ষে কিছু বলা সম্ভব না।

প্রসঙ্গত, গত শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার পর ৩১ ডিসেম্বরকে সামনে রেখে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একের পর এক রহস্যজনক স্লোগান লিখেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যরা। ফলে সেদিন কী হতে যাচ্ছে তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। পরে রোববার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র প্রকাশ করার কথা জানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

আজ আমরা এক নতুন অধ্যায়ে পা রাখতে যাচ্ছি। বর্তমান রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে যে অচলাবস্থা বিরাজ করছে, তা আমরা মেনে নিতে পারি না। আমাদের জাতির জন্য প্রয়োজন একটি নতুন দিকনির্দেশনা। তাই, আজ থেকে কার্যকর হলো ‘জুলাই অভ্যুত্থান ঘোষণা’।

এই ঘোষণার মাধ্যমে আমরা:
১. বর্তমান সাংবিধানিক কাঠামো পুনর্গঠন করবো।
২. অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করতে একটি বিশেষ তহবিল গঠন করবো।
৩. শিক্ষা, স্বাস্থ্য, এবং প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বিশেষ সংস্কার আনবো।
৪. দেশের সকল নাগরিকের মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করবো।

আমরা একটি নতুন ভোর দেখতে চাই, যেখানে প্রতিটি নাগরিক সমান সুযোগ পাবে। এই পরিবর্তনের জন্য আপনাদের সহযোগিতা ও সমর্থন প্রয়োজন। আসুন, আমরা সবাই মিলে একসাথে একটি নতুন ভবিষ্যৎ গড়ি।”

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শেষ হতেই চারদিকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ এটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে দেখলো, আবার কেউ সন্দেহ প্রকাশ করলো।

জুলাই মাসে অভ্যুত্থানের এই ঘোষণাপত্র এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করলো, কিন্তু এই পরিবর্তন বাস্তবায়ন হবে কি? এ নিয়ে প্রশ্ন থেকেই গেল।

spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

সর্বশেষ