জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার করা আপিলের শুনানি গতকাল পঞ্চম কার্যদিবসের মতো শেষ হয়েছে। রোববার বেলা ২টা পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এ মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসনের জামিনের মেয়াদ ২৬শে জুলাই পর্যন্ত বর্ধিত করেছেন আদালত। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ শুনানি হচ্ছে। গতকাল খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী আব্দুর রেজাক খান। খালেদা জিয়ার পক্ষে এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, কায়সার কামাল, নওশাদ জমির, একেএম এহসানুর রহমান প্রমুখ।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশিদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
গতকাল শুনানিতে আব্দুর রেজাক খান এ মামলার ২, ৩, ৫, ৬, ৮, ৯ নম্বর সাক্ষীর জবানবন্দি, জেরা পড়ে শোনান ও সাক্ষীদের বক্তব্য খণ্ডন করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, ‘৯ নম্বর সাক্ষী যেসব ডকুমেন্ট দাখিল করেছে এগুলো মূল ডকুমেন্ট নয়। এগুলো বানানো ও ঘষামাজা করা নথিপত্র। এ ধরনের ডকুমেন্ট সাক্ষ্য আইনের নিরিখে টিকে না।’ তিনি আরো বলেন, ‘সাক্ষ্য হিসেবে সোনালি ব্যাংকের যেসব কাগজপত্র এসেছে এবং উপস্থাপন করা হয়েছে, সেখানে বেগম জিয়ার কোথাও কোনো স্বাক্ষর নেই। তিনি (খালেদা জিয়া) কোন অনুমোদনও দেননি। অ্যাকাউন্ট স্থানান্তরও করেননি।’ আব্দুর রেজাক খান শুনানিতে আরো বলেন, ‘সাক্ষীদের জবানবন্দিতে এ মামলার বিষয়বস্তুর সঙ্গে খালেদা জিয়ার কোনও সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। জিয়া অরফনেজ ট্রাস্টের নামে যে অ্যাকাউন্ট ছিল, টাকা সেখানেই রয়ে গেছে। এখানে আত্মসাতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তা প্রমাণিতও হয়নি।’ এর আগে গত ১২ই জুলাই) এ মামলায় খালেদা জিয়ার আপিলের শুনানি শুরু হয়। ওইদিন এক আদেশে এ মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন ১৯শে জুলাই পর্যন্ত বর্ধিত করেন আদালত।
গত ৮ই ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায়ে বেগম খালেদা জিয়াকে ৫ বছর ও অন্য আসামিদের ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। পরে আইনজীবীদের মাধ্যমে সাজা থেকে খালাস এবং জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন তিনি। গত ১২ই মার্চ খালেদা জিয়াকে চার মাসের অন্তর্বর্তীকালিন জামিন দেয় হাইকোর্ট। হাইকোর্টের দেয়া জামিনের আদেশ গত ১৬ই মে এক আদেশে বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। পাশাপাশি খালেদা জিয়ার করা আপিল ৩১শে জুলাইয়ের মধ্যে নিষ্পত্তির আদেশ দেন সর্বোচ্চ আদালত। আপিল নিষ্পত্তিতে সময়ের বাধ্যবাধকতার আদেশ পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের করা আবেদনটি গত ১২ই জুলাই এক আদেশে স্টা্যন্ডওভার রাখেন আপিল বিভাগ। তবে, ওই সময়ের (৩১শে জুলাই) মধ্যে আপিল নিষ্পত্তি না হলে সময়ের আবেদন বিবেচনা করা হবে বলে খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের জানান সর্বোচ্চ আদালত।