চট্টগ্রাম কলেজ প্রাঙ্গণে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ ওঠেছে ছাত্রশিবির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ছাত্রদলের চারজন আহত হয়েছেন। যদিও হামলার ঘটনা অস্বীকার করেছে ছাত্রশিবির। রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শেরেবাংলা হলের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
হামলায় আহতরা হলেন- ওমর ফারুক সাগর, রেদোয়ান ইসলাম, জাহিদুল ইসলাম, মোহাম্মদ কাইফ ও মোরশেদুল ইসলাম।এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রদলের সদস্য সচিব ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ওমর ফারুক সাগর কালবেলাকে বলেন, চট্টগ্রাম কলেজে আজ রোববার ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ছিল। আমন্ত্রণ পেয়ে আমরা গিয়েছিলাম। শেরেবাংলা হলের সামনে যাওয়ার পর শিবিরের নেতাকর্মীরা আচমকা এসে আমাদের ওপর হামলা করে।
তারা আমাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ছাত্রদল নেতা ফারুক চট্টগ্রাম কলেজে থাকতে পারবে না। এ ছাড়া আমাদের ছাত্রদল নেতা রিজওয়ান জাহিদুল ইসলাম, কাইফ ও মোরশেদের ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। আমি ২৪-এর জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন যোদ্ধা ও গুলিবিদ্ধ হয়েছিলাম। তারপরও তারা আমার ওপর হামলা চালায়। যারা হামলা চালিয়েছে তাদের কথা হলো, চট্টগ্রাম কলেজে শিবির থাকবে, কিন্তু ছাত্রদল থাকতে পারবে না।তিনি বলেন, শিবির নেতা শামীম আব্দুল্লাহসহ ৩০-৩৫ জন কর্মী হামলায় অংশ নেয়। এ সময় আমিসহ চট্টগ্রাম কলেজের পলিটেকনিক সায়েন্সের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জাহিদুল ইসলাম, মোরশেদুল ইসলাম, রেদোয়ান ইসলাম, মোহাম্মদ কাইফসহ অনেকে আহত হয়েছেন। আহতরা বর্তমানে চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বিষয়টি আমরা চকবাজার থানার ওসি এবং বিএনপির সিনিয়র নেতাকর্মীদের জানিয়েছি। তারা যেভাবে পরামর্শ দেবেন, আমরা পরে সেভাবে ব্যবস্থা নেব। আমরা তাদের দিকনির্দেশনার অপেক্ষায় রয়েছি।
হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রশিবিরের সভাপতি তানভীর হোসেন জুয়েল কালবেলাকে বলেন, আপনারা জানেন চট্টগ্রাম কলেজছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ হয়েছে। কমিটিতে যারা ছিল তাদের কোনো সক্রিয়তা নেই। ওখানে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়ার পর বৈষম্যবিরোধী ও সমন্বয়করা আছেন। তারাও চাচ্ছে না যে, ছাত্র রাজনীতি সক্রিয় হোক। পাশাপাশি ছাত্র সংগঠনগুলোও চান না ছাত্র রাজনীতি সক্রিয় হোক। যার কারণে আমরাও ওখানে গিয়ে গ্যাদারিং করিনি। কলেজের বাইরে বাইরে সংগঠন করতেছি।
তিনি বলেন, আজকের ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখেছি, যেখানে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ সেখানে ওরা বহিরাগত নিয়ে ছাত্রদের মাঝে ফরম বিতরণ করতেছিল। তাদের পরনে ড্রেস, আইডি কার্ড ছিল না। তখন কিছু সাধারণ শিক্ষার্থী এসে তাদের বাধা দিয়েছে। তারা বলেছে, এখানে দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধ। আপনারা দলীয় পরিচয়ে এখানে আসছেন, বাইরে গিয়ে ফরম বিতরণ করেন। এ সময় তাদের কয়েকজনকে মারমুখী অবস্থায় তেড়ে আসছে। তখর উভয়পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতি হয়। এ ঘটনা তিলকে তাল করে তারা শিবির হামলা করেছে বলে প্রচার করছে। আর শিবির যদি হামলা করে থাকে তাহলে তার নাম, পদ-পদবি প্রকাশ করুক।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোজাহেদুল ইসলাম চৌধুরী কালবেলাকে বলেন, ছাত্রদলের ছেলেরা আমাকে বিচার দিয়েছে তারা লিফলেট বিতরণ করার সময় কিছু ছেলে এসে টানাহেঁচড়া করেছে। যাদের নামে অভিযোগ দিয়েছে আমি তাদের ডেকে জিজ্ঞেস করেছি। তারা বলেছে তাদের বার্ষিক ক্রীড়ায় ওরা (ছাত্রদল) এসে জটলা করছে এবং অভিযুক্তরা বহিরাগত। আমি তাদের কিছুক্ষণ কাউন্সিলিং করেছি।