সমন্বয়ক পরিচয় আর এখন এক্সিস্ট করে না: নাহিদ ইসলাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের আত্মপ্রকাশের পরে ‘সমন্বয়ক’ পরিচয় আর এখন এক্সিস্ট করে না বলে জানিয়েছেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। আজ শুক্রবার রাজধানীর বাংলামোটরে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

- Advertisement -

সমন্বয়ক পরিচয়ে বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজির নানা অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ ও এনসিপির আত্মপ্রকাশের পরে সমন্বয়ক পরিচয় আর এখন এক্সিস্ট করে না।

তিনি বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলন কিন্তু আগের জায়গায় নেই। সেখান থেকে এখন একটি নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি তৈরি হয়েছে এবং একটি নতুন ছাত্রসংগঠন তৈরি হয়েছে। ফলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে আমাদের অনুরোধ থাকবে, যারা এই পরিচয় ব্যবহার করে কোনো অবৈধ কাজের সঙ্গে জড়িত হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন।’

নির্বাচন প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা নির্বাচনের সময়ের চেয়েও প্রেক্ষাপটের দিকে গুরুত্ব দিচ্ছি। কোন প্রেক্ষাপটে আমরা নির্বাচনের দিকে যেতে পারি এই গণ-অভ্যুত্থানের পরে। আমরা আমাদের জায়গা থেকে দাবিটা জানাচ্ছি। জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদ কিন্তু আলাদা জিনিস। জুলাই ঘোষণাপত্রের দাবি আরও অনেক আগেই উঠেছিল ছাত্রদের পক্ষ থেকে।

জুলাই সনদ প্রধান উপদেষ্টা নিজেই ঘোষণা দিয়েছেন। সংস্কারে ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি চার্টার তৈরি হবে যে, বাংলাদেশের সংস্কারের রূপরেখাটা কী রকম হবে, কী কী সংস্কার আমরা করব, কী কী সংস্কার ভবিষ্যতে করব, কী কী সংস্কারে ধারাবাহিকতা থাকবে, রাজনৈতিক দলগুলোর সেই কমিটমেন্ট জনগণের কাছে দিতে হবে যে, আমরা কী কী সংস্কার করব। সেটাকে আমরা বলছি জুলাই সনদ।’

নাগরিক পার্টিকে আর্থিকভাবে কারা সাহায্য করছে, এমন প্রশ্নের জবাবে আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমাদের আর্থিক জায়গা নিয়ে কথা বলা হচ্ছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে আমরা চাই, পরিবর্তনটা আসুক। কারা আর্থিকভাবে সহায়তা করছে, কোন খাতে সেটা ব্যয় হচ্ছে। এই সংস্কৃতিটা রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আসুক, এই সংস্কারটাও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আসুক, আমাদের জায়গা থেকে আমরা দাবি করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এককভাবে এই সংস্কৃতি কিন্তু আমাদের পক্ষে করা সম্ভব না। আমাদের কারা আর্থিকভাবে সহযোগিতা করছে, আমরা যদি তাদের নাম প্রকাশ করি, তারা কোনোভাবে ক্ষতির শিকার হবে না, সেই নিশ্চয়তা সরকারের পক্ষ থেকে দিতে হবে। সেই সংস্কৃতি তো বাংলাদেশে এখনো তৈরি করা যায়নি। কিন্তু আমরা চাই, সেই সংস্কৃতিটা হোক, সকল রাজনৈতিক দলই সেই সংস্কৃতি গ্রহণ করুক।’

এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য নিয়ে এর আগেও নাগরিক কমিটি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে বারবার বলেছে। গতকাল আমরা ইফতার থেকে বলেছি, দ্রব্যমূল্য, তেলের দাম যেন নিয়ন্ত্রণে থাকে। যেসব অলিগার্ক ছিল বাংলাদেশে, যারা দুর্নীতিবাজ, লুটেরা ব্যবসায়ী শ্রেণি ছিল, আমরা তাদের কখনোই সমর্থন করি না, করব না।’

অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক এই উপদেষ্টা বলেন, ‘মূলত যারা দেশপ্রেমিক, দেশকে নতুনভাবে গড়তে চায়, ছাত্রদের নতুন উদ্যোগকে সমর্থন করছে, যে সৎ মানুষেরা রয়েছেন সমাজে, তাদের থেকে আমরা সহযোগিতা চাচ্ছি। সাধারণ মানুষদের কাছ থেকেও আমরা সহযোগিতা চাচ্ছি, চাইব। আমরা রিকশাওয়ালা থেকে শুরু করে সমাজের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে যাব, আর্থিক সহায়তার জন্য। কারণ, আমরা মনে করি, এনসিপি জনগণের দল। জনগণের অর্থেই এটা পরিচালিত হবে।’

সর্বশেষ