spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

হাসিনাবিরোধী গণবিক্ষোভের কথা আগেই জানত ভারত, পরামর্শ দেওয়া ছাড়া কিছু করার ছিল না: জয়শঙ্কর

নিজস্ব প্রতিবেদক
spot_img

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর দেশটির পররাষ্ট্রবিষয়ক পার্লামেন্টারি পরামর্শক কমিটিকে জানিয়েছেন, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার আগেই ভারত তাঁর বিরুদ্ধে তৈরি হওয়া জনমতের বিষয়টি জানত। তবে হাসিনার ওপর ভারতের ‘পর্যাপ্ত প্রভাব’ না থাকায় দেশটি বিশেষ কিছু করতে পারেনি, কেবল তাঁকে ‘পরামর্শ’ দেওয়া সম্ভব হয়েছিল।ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু জানিয়েছে, জয়শঙ্কর ইঙ্গিত দিয়েছেন, অন্য বড় আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর মতো ভারতও বাংলাদেশের ভেতরের অস্থির পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত ছিল।

- Advertisement -

এ প্রসঙ্গে তিনি জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্কের সাম্প্রতিক বক্তব্যের উল্লেখ করেন। জাতিসংঘ তখন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে সতর্ক করেছিল যে, যদি তারা নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালায়, তাহলে তাদের শান্তিরক্ষা মিশন থেকে নিষিদ্ধ করা হতে পারে।পররাষ্ট্রবিষয়ক পরামর্শক কমিটির সদস্যরা জয়শঙ্করের সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে সরাসরি আলোচনা করেন, যেখানে বাংলাদেশ, মিয়ানমার, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের পরিস্থিতিই আলোচনার প্রধান বিষয় হয়ে ওঠে।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ভারতের সঙ্গে সংলাপ শুরু করলেও শেখ হাসিনাকে ভারত রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ায় দিল্লি-ঢাকা সম্পর্কে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ভারত এরই মধ্যে ঢাকার অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ করতে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রিকে ঢাকায় পাঠায়।তবে ২-৪ এপ্রিল থাইল্যান্ডের ব্যাংককে বিমসটেক (বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন) শীর্ষ সম্মেলনের সাইডলাইনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যে আনুষ্ঠানিক বৈঠক হবে কি না, সে বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিশ্চুপ।

অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এরই মধ্যে ঢাকায় একাধিক আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বকে স্বাগত জানিয়েছেন। এখন তিনি চীন সফরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন, যেখানে দুই দেশের মধ্যে একাধিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে। বিশেষ করে বিমান যোগাযোগের ক্ষেত্রে নতুন সমঝোতা হতে পারে, যাতে ঢাকা ও চট্টগ্রামের সঙ্গে চীনের বিভিন্ন শহরের সংযোগ আরও জোরদার হয়।

এস. জয়শঙ্কর আলোচনায় উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে ‘বহিরাগত শক্তির’ ভূমিকা রয়েছে এবং চীনকে তিনি ‘প্রতিপক্ষ’ নয়, বরং ‘প্রতিযোগী’ হিসেবে দেখেন।

জয়শঙ্কর দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) নিয়েও আলোচনা করেন। ২০১৪ সালের পর থেকে সংস্থাটির কোনো শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়নি। ২০১৬ সালে পাকিস্তানে নির্ধারিত ১৯তম সার্ক সম্মেলনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দেয় ভারত। কারণ ওই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর উরিতে ভারতীয় সামরিক স্থাপনায় হামলা হয়েছিল। এরপর থেকে ভারত বিমসটেককে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে, ফলে সার্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

তবে ব্রিফিংয়ে জয়শঙ্কর ইঙ্গিত দেন, ‘সার্ক বাতিল হয়নি, বরং বিরতিতে আছে।’ অর্থাৎ, ভবিষ্যতে এটির পুনরুজ্জীবিত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। ভারতীয় এমপিরা প্রতিবেশী দেশগুলোতে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং জানতে চান, আগামী এক দশকে মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ ও নেপালে চীনের প্রভাব মোকাবিলায় ভারত কী পদক্ষেপ নেবে।

spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

সর্বশেষ