মো.মোক্তার হোসেন বাবু :চট্টগ্রামে সাম্প্রতিক সময়ে ধারাবাহিকভাবে একের পর এক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর নজরদারি ও প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপের ঘাটতি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। গত কয়েক সপ্তাহে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় হত্যার মতো গুরুতর অপরাধ ঘটলেও এ নিয়ে প্রশাসনের দৃশ্যমান তৎপরতা না থাকায় নাগরিকদের মাঝে চরম উদ্বেগ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকায় সাধারণ মানুষের সঙ্গে আলাপচারিতায় জানা যায়, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ছে। অপরাধীরা দুঃসাহসিকভাবে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে নির্বিঘ্নে পালিয়ে যাচ্ছে—যা স্থানীয়দের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। অনেকেই মনে করছেন, পর্যাপ্ত টহল ব্যবস্থা, গোয়েন্দা নজরদারি ও দ্রুত তদন্ত কার্যক্রমের অভাবেই অপরাধীরা বারবার সুযোগ পাচ্ছে।
একাধিক বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, কোনো এলাকায় হত্যাকাণ্ড ঘটলেই কিছুসময় পুলিশ উপস্থিত হয় বটে, কিন্তু পরে সেই তৎপরতা ক্ষীণ হয়ে যায়। দ্রুত তদন্ত কিংবা অপরাধী শনাক্তে দৃশ্যমান অগ্রগতি না থাকায় স্থানীয়রা ভয়-উদ্বেগ নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন। বিশেষ করে রাতের বেলায় নগরজুড়ে মানুষের চলাচলে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
আইন-শৃঙ্খলা বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এমন ধারাবাহিক ঘটনার পরও প্রশাসনের দৃঢ় ভূমিকা না থাকলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে। তাদের মতে, প্রতিটি ঘটনা আলাদাভাবে তদন্তের পাশাপাশি শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে নজরদারি বাড়ানো, অপরাধপ্রবণ স্থানগুলো পরিচালিত করা এবং প্রযুক্তিভিত্তিক মনিটরিং জোরদার করাই এখন জরুরি।
এদিকে স্থানীয় সচেতন নাগরিক সমাজ বলছে, পুলিশের গোয়েন্দা শাখা ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত উদ্যোগ নিয়ে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে হবে। পাশাপাশি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন, নিয়মিত টহল, কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রম সক্রিয় করা এবং এলাকা ভিত্তিক তথ্য সংগ্রহের কাজ আরও শক্তিশালী করতে হবে।
নিরাপত্তাহীনতার কারণে অনেকে রাতে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আগেভাগে বন্ধ করে দিচ্ছেন। এমনকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াতকারী শিক্ষার্থী এবং চাকরিজীবীরাও আতঙ্ক নিয়ে চলাফেরা করছেন।
চট্টগ্রামে বাড়তে থাকা হত্যাকাণ্ডের ঘটনা শহরের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। নাগরিকরা আশা করছেন, প্রশাসন দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে শহরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং অপরাধ চক্রকে আইনের আওতায় আনবে।




