নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই শিক্ষার্থীকে নদীতে ফেলে দেয় ড্রাইভার ও হেলপার

মো.মুক্তার হোসেন বাবু : সাইদুর রহমান পায়েল (২১) চট্টগ্রাম মহানগরীর বাসা হালিশহর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে এ কে খান হয়ে শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত হানিফ পরিবহন (কোচ নং-৪৬২/গাড়ী নং- ৯৬৮৭ সিট নং অ-৩) করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস করতে গেলেও অবশেষে তার লাশ পাওয়া যায়। পায়েল নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় বিবিএ ৫ সেমিষ্ঠারের ছাত্র। গজারিয়া থানাধীন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গাড়ী জ্যামে পড়লে,পায়েল প্রকৃতি ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে আবার গাড়ীতে উঠার সময় দরজার ধাক্কা খেয়ে মুখে আঘাত পেয়ে রাস্তায় পড়ে যায়। সুপার ভাইজার জনি (৩৫) জ্ঞানহীন অবস্থায় পড়ে আছে দেখে ড্রাইভার জামালকে(৪৫) জানায়। পায়েলকে মৃত ভেবে ড্রাইভার জামাল ও জনিসহ ব্রীজ থেকে নেমে ফুলদী নদীতে ফেলে চলে যায় বলে পায়েলের মামা ও মামলার বাদী গোলাম সরওয়ার্দি বিপ্লব জানায়।
তিনি বলেন, ২১ তারিখ রাতে ১০টা নাগাদ একে খান থেকে হানিফ পরিবহনে ঢাকার উদ্দেশ্যে ভাগিনা পায়েল রওনা হয়। ২২ তারিখ ভোর ৬টা নাগাদ আমার বোন কহিনুর বেগম ছেলের পৌছানোর খবর জানতে ফোন করলে তার বন্ধু আকিমুর রহমান আদর (২২) রিসিভ করে। আদর মোবাইলে বলে, সুপার ভাইজার জনি বলেছে পায়েল জ্যামরত অবস্থায় প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দিতে গেলে গাড়ীতে আর উঠতে পারেনি। পরবর্তিতে সুপার ভাইজারের সাথে যোগাযোগে একেক সময় একেক তথ্য দেয়।এতে আমি অনেকটা নিশ্চিত হই যে সুপারভাইজার,হেলপার, এবং ড্রাইভারের সমন্বয়ে আমার ভাগিনার কোন অঘটন ঘটেছে।
পায়েলের বাবা গোলাম মওলা জসিম (৫৫) সন্তানের বিচার চেয়ে বলেন, বিনা অপরাধে আমার ছেলেকে যারা মেরেছেন তাদের দৃষ্টান্তমূলক সবোচ্চ শাস্তি চাই। যাতে আগামীতে আমার মত কোন বাবাকে সন্তান হারা হতে না হয়।
পায়েলের মা কহিনুর বেগম(৪৩) বলেন, আমার বুকের ধনকে যারা হত্যা করেছে। তাদের ফাঁসি চাই। যাতে আর কোন মা আমার মত সন্তান হারা না হয়।
জানতে চাইলে হানিফ পরিবহনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খোরশেদ বলেন,আমার দায়িত্ব উত্তরবঙ্গে ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়ক নয়।তারপরেও ঘটনাটা আমি মোবাইলে শুনেছি এবং এটা দুঃখজনক। আমি বেশী কিছু বলতে পারবনা ।চট্টগ্রামের দায়িত্বরত আব্দুস সামাদকে জিজ্ঞাসা করলে ঊনি ভাল বলতে পারবেন।
পরিবহনের ব্যবস্থাপক আব্দুস সামাদ ঘটনার দায় এড়িয়ে এ প্রতিবেদককে বলেন, এটা রাস্তার ঘটনা। এতো কিছু আমি জানিনা । পুলিশ এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিবে। তিনি আরো বলেন,আমার পরিচিত দেশ সেরা ১৩/১৪ জন সাংবাদিক আছেন। আমি এ ব্যাপারে আর বেশী কিছু বলতে পারবনা।
এব্যাপারে সেল ফোনে জানতে চাইলে গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত র্কমর্কতা হারুনুর রশিদ জানান ,হানিফ পরিবহনের সুপারভাইজার জনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দী দিয়েছেন। আমরা ইতিমধ্যে এজাহার ভুক্ত তিন আসামীকে গ্রেফতার করেছি এবং যথাযত প্রক্রিয়ায় আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করব।

সর্বশেষ