নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রামে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) না আসায় ডিমান্ড নোট নেয়াকারীদের সংযোগ দেয়া যাচ্ছেনা। এর আগে এলএনজি সংযোগে পাঁচ দফায় ব্যর্থ হতে হয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে। বিশেষ করে গ্যাস সংযোগ দিতে না পারায় একদিকে যেমন বিব্রত হচ্ছে কর্ণফুলী গ্যাস কোম্পানি অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে ব্যবসায়ীরা। চট্টগ্রাম মহানগরীতে দৈনিক প্রায় ৫৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের প্রয়োজন থাকলেও অর্ধেক সরাবরাহ করা যাচ্ছেনা। এদিকে এলএনজি আসার আগে গ্যাসের সংযোগ নিতে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের সাথে সাথে দফায় দফায় বৈঠক করে ২৬৫ জনকে ডিমান্ড নোট দেয়া হয়েছিল। এলএনজি না আসায় গ্যাস না দেয়ার ফলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে এমনটি বলেছেন তারা।
কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি সূত্রে জানা যায়, মহেশখালী উপকূলের সারে চার কিলোমিটার দূর থেকে আসা এলএনজি গ্যাস স্থলভাগের স্টেশনে এসে যুক্ত হবে। সেখান থেকে পাইপ লাইনে করে চলে আসবে আনোয়ারা সাব স্টেশনে। মহেশখালী থেকে আনোয়ারা পর্যন্ত গ্যাস লাইন স্থাপন করেছে জিটিসিএল। আনোয়ারায় জিটিসিএল থেকে কর্ণফুলী কোম্পানি গ্যাস সংগ্রহ করবে এবং সবার আগে চট্টগ্রাম মহানগরীতে তা সরবরাহ করা হবে। প্রতিদিন ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করার কথা থাকলেও প্রথমদিকে তা অর্ধেক পরিমাণ সরবরাহ করার কথা রয়েছে। পরে ধীরে ধীরে গ্যাসের পরিমাণ বাড়ানো হবে। নগরীতে দিনে প্রায় ৫৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের প্রয়োজন থাকলেও সরবরাহ করা হয় মাত্র ২০৭ থেকে ২০৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। এরমধ্যে খাগড়াছড়ির সেমুতাং থেকে প্রায় ২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের বাইরে পুরো গ্যাসই আসে জাতীয় গ্রিড থেকে।
এদিকে কবে নাগাদ এলএনজি পাওয়া যাবে কিছুই জানি না উল্লেখ করে গতকাল রোববার দুপুরে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী খায়েজ আহমেদ মজুমদার বলেন, এলএনজি না আসায় আমাদের বিব্রত হতে হচ্ছে।এলএনজি আসার আগে গ্যাসের সংযোগ নিতে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের সাথে সাথে দফায় দফায় বৈঠক করেছি। তারা যাতে ডিমান্ড নোটের টাকা জমা দেন সেজন্য তাদের তাগাদা দেয়া হয়েছে। অন্যথায় গ্যাস চট্টগ্রামের পরিবর্তে ঢাকার দিকে চলে যাবে। সে প্রেক্ষেতে চট্টগ্রামের প্রায় ২৬৫ জনকে ডিমান্ড নোট দেয়া হয়েছিল। এখন এলএনজি না আসায় তাদের গ্যাস দেয়া যাচ্ছে না। ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এখন যতো দ্রæত এ সংযোগ আসে ততোই মঙ্গল।
কর্ণফুলী গ্যাস কোম্পানির একটি সূত্রে জানা গেছে, এলএনজি সংযোগে পাঁচ দফায় ব্যর্থ হয়েছে পেট্টোবাংলা। তবে মধ্য আগস্টে এলএনজি সংযোগ লাইন চালুর বিষয়টি প্রায় চূড়ান্ত। এর আগে পাঁচ দফায় তারিখ দিয়েও ব্যর্থ হওয়ার পর নতুন করে তারিখ ঘোষণা করা হচ্ছে না। ইতিমধ্যে সাগরের তলদেশে পাইপের ছিদ্র মেরামতের কাজও শেষ হয়েছে। এখন চলছে টেস্টিংয়ের কাজ।
ওই সূত্রটি জানায়, গত ২৪ এপ্রিল এক লাখ ৩৮ হাজার ঘনমিটার এলএনজি নিয়ে আসা এক্সিলারেন্স জাহাজটি মহেশখালী উপকূল থেকে সাড়ে চার কিলোমিটার দূরে দাঁড়িয়ে থাকলেও তা থেকে কোনো গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না। সাগরের তলদেশ দিয়ে তা উপক‚লে আসার পাইপ লাইনে ছিদ্র থাকায় এলএনজি লাইন চালু করা যাচ্ছে না। সাগরের উপকূলে এলএনজি আসায় প্রাথমিকভাবে মে মাসের ১০ তারিখে সরবরাহ করার কথা ছিল। কিন্তু সেই তারিখে সরবরাহ করতে ব্যর্থ হওয়ার পর পরবর্তী সময়ে ২৫ ও ২৬ মে নির্ধারণ করা হয়েছিল। এ তারিখে না হলে ১২ জুন সরবরাহের কথা বলা হয়েছিল। তখন গ্যাসের পাইপ লাইনে ক্রুটি ধরা পড়ায় নতুন তারিখ দিয়েছিল ৪ জুলাই। এ তারিখে না হওয়ায় দেয়া হয়েছিল ১১ জুলাই। যথারীতি সেই তারিখেও গ্যাস সংযোগ দিতে ব্যর্থ হয় এক্সিলারেট কোম্পানি। তাই এবার আর কোনো তারিখ ঘোষণা করা হয়নি।