চট্টগ্রামের ৮টি কোরবানির পশুর হাট শুরু বাহির থেকে আসছে প্রচুর পরিমান গরু

মো.মুক্তার হোসেন বাবু : আসন্ন কোরবানী ঈদকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম মহানগরীর ৮টি স্থায়ী ও অস্থায়ী পশুর হাটে বিক্রি শুরু হয়েছে। একই সাথে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসতে শুরু করেছে কোরবানির পশু। এদিকে নিরবিচ্ছিন্ন ব্যবসার পরিবেশ বজায় রাখতে সাদা পোশাকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি পুলিশ, র‌্যাব, আনসার বাহিনী নিয়োজিত রয়েছে।
চট্টগ্রাম মহানগরীর দু’টি স্থায়ী পশুর বাজার হচ্ছে পাহাড়তলি সিডিএ সাগরিকা বাজার ও মুরাদপুর বিবির হাট। ছাড়া চট্টগ্রামে রয়েছে সিটি কর্পোরেশনের আরো ছয়টি অস্থায়ী পশুর হাট। স্থায়ী দু’টিসহ বাকি ছয়টি অস্থায়ী পশুর বাজার কদমতলি ধনিয়ালা পাড়া, পতেঙ্গা, সল্টগোলা, কামাল মহাজন হাট, কর্ণফুলি ব্রিজ ও স্টিল মিল বাজারে কেনা কাটা শুরু হয়েছে। এসব বাজারে ইতোমধ্যে উত্তরাঞ্চলের থেকে প্রচুর পরিমাণ গরু আসা শুরু হয়েছে।
সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা যায়, নগরীর নির্ধারিত বাজারগুলো ছাড়া অবৈধ বাজার গড়ে তোলে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি কারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ক্ষেত্রে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার জন্যও প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অভিমত, প্রতিটি বাজারে ক্যাম্প স্থাপন করা হবে। ইতোমধ্যে প্রতিটি পশু বাজারে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়মিত টহল রাখা হয়েছে। কোরবানির বাজারে সাদা পোশাকেও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিয়োজিত থাকবে। কোরবানির পশুবাহী গাড়িতে চাঁদাবাজি ও হয়রানি বন্ধের ব্যাপারে পুলিশের উর্ধ্বতন মহলের নির্দেশ রয়েছে।
ব্যবসায়ীদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, কুষ্টিয়া, সাতক্ষিরা, রাজশাহী, চাপাই নবাবগঞ্জ, ফরিদপুর, কুমিল্লা থেকে প্রতিদিন ট্রাক ভর্তি করে বিভিন্ন আকারের গরু চট্টগ্রাম আসছে। ভারতীয়, নেপাল ও মায়ানমার থেকেও পশু আসা শুরু করায় ব্যবসায়ীদের ধারণা এবার পশুর দাম সহনীয় থাকবে।
গত দুই দিন সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, নগীরর অস্থায়ী পশুর বাজারগুলো বেঁচা-কেনার জন্য সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। চট্টগ্রামে প্রচুর পরিমাণে গরু আসতে শুরু করায় ইজারাদাররাও বেশ খোশমেজাজে রয়েছে। তারা আশা করছেন এবার চট্টগ্রামে পশু কেনা-বেঁচা বিগত সময়ের রেকর্ড অতিক্রম করবে। পশু ব্যবসায়ীরাও এ ব্যাপারে একমত পোষণ করে বলেন, কোরবানি পশুর দাম নির্ভর করে চাঁদাবাজি আর হয়রানির উপর ভিত্তি করে। কারণ বেনাপোল থেকে এক ট্রাক গরু আনতে ভাড়া প্রদান করতে হয় প্রায় ৬০ হাজার টাকার উপরে। প্রতি ট্রাকে মাঝারি আকারের ১৫ থেকে ১৬টি গরু আনা যায়। প্রতি ট্রাক গরু দেখভাল করার জন্য রাখার খরচ প্রায় ১০ হাজার টাকা। তার সাথে রয়েছে গরুর খাবার। এর পাশাপাশি আনা নেয়ার ক্ষেত্রে চাঁদাবাজি আর হয়রানি অব্যাহত থাকলে পশুর দাম বাড়তি হাঁকা হয়। কিন্তু এবার সড়কে চাঁদাবাজি আর হয়রানি বিগত সময়ের তুলনায় কম। যে কারনে পশু ব্যবসায়ীরা এবার খোশমেজাজে স্বত:স্ফুর্তভাবে কোরবানি ঈদ উপলক্ষে মাঠে নেমেছে। তাই বাজারে বিভিন্ন আকারের গরুর উপস্থিতির কারণে ক্রেতারা সহনিয় দাম পাওয়ার ক্ষেত্রে আশাবাদি। সর্বপরি কোরবানি বাজারকে ঘিরে উল্লেখযোগ্য তেমন কোন প্রতিবন্ধকতা নেই বলে সংশ্লিষ্টদের অভিমত।

সর্বশেষ