নিজস্ব প্রতিবেদক: তাহমিনা খায়ের নীলা। একজন পেশাদার ফিটনেস ট্রেইনার। এখন তার তারুন্যে ভরপুর সময়। জীবনের এই দুরন্ত সময়কে কাজে লাগিয়ে গতানুগতিকতার বাইরে এসে এই তরুনী এখন এখন শরীর চর্চা তথা বডি ফিটনেস সেন্টারের উদ্যোক্তা। জিম, ফিটনেস সেন্টার এসব যে শুধুমাত্র পুরুষদেরই ব্যবসা সেই ধারনাকে পাল্টে দিয়ে চট্টগ্রাম নগরীতে প্রথম ফিটনেস সেন্টারের উদ্যোক্তা হয়েছেন এই তরুনী। সাথে রয়েছেন তার বন্ধু নওশাদ জাহান। তাদের এই ফিটনেস সেন্টারের নাম ‘ফিটনেস হাব’। চট্টগ্রাম মহানগরীর অভিজাত খুলশি আবাসিক এলাকার দক্ষিন খুলশি ২ নম্বর সড়কের ১৭ নম্বর বাড়ি। এই বাড়ির ৬ষ্ঠ তলা আর রুফটপ জুড়ে শুধুমাত্র নারীদের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ফিটনেস সেন্টার ‘ফিটনেস হাব’। গত ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যক্রম শুরু করে নীলার স্বপ্নের ফিটনেস সেন্টার। চট্টগ্রাম নগরীতে নারীদের জন্য আরও একাধিক জিম ও ফিটনেস সেন্টার থাকলেও নারী উদ্যোক্তার কোন ফিটনেস সেন্টার ছিলোনা। ফিটনেস হাব-ই প্রথম- যার উদ্যোক্তাও এই নারী। তাহমিনা খায়ের নীলা।
একজন পেশাদার ফিটনেস ট্রেইনার। ঢাকা ও চট্টগ্রামে দীর্ঘ ৮ বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ করছেন নারীদের বডি ফিটনেস নিয়ে। চট্টগ্রাম নগরীর ব্র্যান্ড ফিটনেস সেন্টার হ্যামার স্ট্রেংথসহ একাধিক ফিটনেস সেন্টারে মাস্টার ট্রেইনার ছিলেন। দীর্ঘদিন ফিটনেসকে পেশা হিসেবে নিয়ে এবার তিনি হয়েছেন উদ্যোক্তা। নিজের দীর্ঘদিনের বন্ধু নওশাদ জাহানকে সাথে নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘ফিটনেস হাব’। ফিটনেস হাব প্রতিষ্ঠা প্রসঙ্গে নীলা জানান, দীর্ঘদিন এই পেশার সাথে জড়িত। অনেক নারী এই পেশার সাথে থাকলেও এমন একটি ব্যতিক্রমি উদ্যোগে কোন নারী উদ্যোক্তা হওয়ার সাহস করেনি কেউ। চট্টগ্রামে আমরা দুই বান্ধবী প্রথমবারের মতো উদ্যোগ নিলাম। নীলা বলেন, বন্ধুকে সাথে নিয়ে প্রতিষ্ঠিত আমাদের ফিটনেস হাব আমার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন। এই স্বপ্নটি এখন আলোয় এসেছে। শুধুমাত্র নারীদের জন্য প্রতিষ্ঠিত এই ফিটনেস হাবে সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত নারীরা শরীর চর্চা করতে পারবেন। এখানে শরীর চর্চার বিভিন্ন কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে ইয়োগা. কার্ডিও, অ্যারোবিকস এবং জুম্বা। কোন ধরনের মেম্বারশীপ ফি ছাড়াই প্রতিমাসে মাত্র ৪০০০ টাকায় ফিটনেস হাবে শরীর চর্চার সবগুলো কার্যক্রমে অংশ নেয়া যাবে। এখানে জিম বা শরীর চর্চা করে যে কোন বয়সে নিজেকে ফিট রাখার জন্য প্রস্তুত করা যাবে। সম্ভব হবে শরীরের অতিরিক্ত মেদ বা ফ্যাট কমানো। ওজন কমানো বা ওজন বৃদ্ধি রোধ করা। যাদের দেহের ওজন বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে তারা এখানে শরীর চর্চার মাধ্যমে ওজন বাড়াতেও পারবেন। এখানে রয়েছে শরীর চর্চার অত্যাধুনিক সব ইকুইপমেন্ট। সমন্বিত ডায়েট চার্টের জন্য রয়েছে সার্বক্ষনিক নিউট্রেশিয়ানিস্ট। একই সাথে ২০ থেকে ৩০ জন পর্যন্ত নারী এখানে শরীর চর্চা করতে পারেন। নীলা বলেন- আমি নিজে একজন পেশাদার ফিটনেস ট্রেইনার হওয়ার কারনে ফিটনেস হাবে শরীর চর্চা আরও সহজতর এবং কার্যকর। শুক্রবার ব্যাতিত সপ্তাহের প্রতিদিনই খোলা থাকে ফিটনেস হাব। ফিটনেস হাব প্রতিষ্ঠা প্রসঙ্গে উদ্যোক্তা তাহমিনা খায়ের নীলা বলেন, নারীরা সাধারণত জিম বা ফিটনেস সেন্টারের উদ্যোক্তা হতে চান না। কিন্তু আমরা সাহস করেছি, ঝুঁকি নিয়েছি। আগে বিভিন্ন ফিটনেস সেন্টারে চাকুরি করতাম, এখন চাকুরিদাতা হয়েছে। ফিটনেস হাবে নতুন করে অনেক নারীর কর্মসংস্থান হয়েছে। এছাড়া ফিটনেস হাবের শুরু থেকেই প্রায় অর্ধশত নারী এই ফিটনেস সেন্টারে ভর্তি হয়ে শরীর চর্চা শুরু করেছেন। এখন সকাল-বিকাল ব্যস্থ থাকছে ফিটনেস হাব। এর ফলে আমরা এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা পাচ্ছি। সাহস পাচ্ছি। ফিটনেস হাব নিয়ে আমরা এগিয়ে যেতে চাই বহুদুর।