ডেস্ক রিপোর্ট: তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও অনিয়মিত বৃষ্টিপাতের কারণে ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের তিন-চতুর্থাংশ মানুষের জীবনযাত্রার মান নেমে যাবে বলে আশঙ্কা করছে বিশ্বব্যাংক।
গতকাল বুধবার দক্ষিণ এশিয়ার জীবনমানে তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাতের পরিবর্তনের প্রভাব শীর্ষক বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ওই প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টউইগ শেফার ও প্রধান আঞ্চলিক অর্থনীতিবিদ মুথুকুমারা মানি উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৬০ বছর ধরে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের তাপমাত্রা বাড়ছে এবং এ ধারা অব্যাহত থাকবে। এর ফলে কৃষি, স্বাস্থ্য ও অন্যান্য খাতে প্রভাব পড়বে। বাংলাদেশে প্রতিবছর এক থেকে দেড় শতাংশ হারে তাপমাত্রা বাড়ছে।
এতে আরো বলা হয়, ‘প্যারিস জলবায়ু সম্মেলনের ঝুঁকি মোকাবেলার বিষয়গুলো যদি না দেখা হয় তাহলে ২০৫০ সাল নাগাদ তাপমাত্রা ২.৫০ শতাংশ বাড়তে পারে।’ এর ফলে ১৩ কোটি ৪০ লাখ মানুষের জীবনমানের অবনমনের পাশাপাশি বাংলাদেশ জিডিপির ৬.৭ শতাংশ হারাবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল হবে চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগ।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় আমরা বেশ কিছু কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। এতে পরিবেশের ওপর ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে। তবে দেশে দারিদ্র্যের হার কমিয়ে আনার ব্যাপারে আমরা এখনো পুরোপুরি সফল হতে পরিনি। বিশ্বের কাছে আমরা উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত। তা ছাড়া স্বল্পোন্নত দেশের কাতার থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে যাওয়ার ব্যাপারেও আমরা অনেকটা উচ্ছ্বসিত। এখন আমাদের জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় কম সুদে আরো ঋণ দরকার। কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় বিদেশি বিনিয়োগ দরকার।’
বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি : মুহিত
‘দক্ষিণ এশিয়ার জীবনযাত্রায় উষ্ণতা ও বৃষ্টিপাতের পরিমাণে পরিবর্তনের প্রভাব’ বিষয়ক আঞ্চলিক প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট শেফারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আসন্ন নির্বাচন নিয়ে বৈঠকে আলোচনা করার কিছু ছিল না। সরকার পরিবর্তন হলেও বিদেশি এজেন্সিগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক পরিবর্তন হয় না। আমরা আশা করি, নির্বাচনে জয়ী হব।’
নির্বাচনে অংশ না নিলেও রাজনীতিতে থাকবেন বলে জানান অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ওয়েল, আই উইল নট বি ডেড। ইলেকশনে তো কাজ করবই। প্রার্থী হচ্ছি না। আমার আসনে অনেকের নাম শোনা যাচ্ছে, তা তো হবেই।’
সিলেট-১ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী তিনজনের নাম শোনা যাচ্ছে বলে সাংবাদিকরা জানালে মুহিত প্রশ্ন করেন, ‘আমার ভাই মোমেন (এ কে এ মোমেন), সিরাজ (মিজবাহ উদ্দিন সিরাজ) এবং আর কে?’
অর্থনীতিবিদ মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের নামও আলোচনায় আসছে, সাংবাদিকরা জানালে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এগুলো ইউজলেস নেম। ফরাসউদ্দিন, ছহুল (সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন), এগুলো ইউজলেস নেম।’ সূত্র: কালের কন্ঠ