ডেস্ক রিপোর্ট: বিএনপির সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দলটির বিশাল জনসভার পর থেকে সরকার আরও বেশি ক্ষিপ্ত ও প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে উঠেছে। যার কারণে দলের সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধে হাস্যকর ও মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কর্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ’আওয়ামী সরকার আর কোনভাবে বিরোধী দলের অস্তিত্ব মানতে পারছে না। তারা এখন ফ্যাসিবাদের উত্তুঙ্গ মাত্রায় পৌঁছে গেছে। ক্ষমতাকে যক্ষের ধনের মতো আঁকড়ে ধরে রাখার জন্য কুটিল রাজনীতি, ষড়যন্ত্র আর তঞ্চকতাই হচ্ছে আওয়ামী রাজনীতির পরিচিতি। সরকার প্রধানসহ আওয়ামী নেতাদের প্রতিদিনের ভাষা, সংলাপ, জবাব সন্ত্রাসী-ক্রুরতার আস্ফালন ছাড়া অন্য কিছু নয়। যাদের রাষ্ট্র পরিচালনার নীতি পীড়ণ আর রক্তপাত নির্ভর, তারা জনমতের ভয় করে না-জবাবদিহিতা তো দুরে থাক। এমনধারা নীতির কারণেই গত পরশু বিএনপি’র বিশাল জনসমাবেশের পর থেকে সরকার আরও বেশি ক্ষিপ্ত ও প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে উঠেছে। জনসভা শেষে পাইকারী হারে বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের পরও সরকারের পরিতৃপ্তি হয়নি। এরপর বিএনপি’র জ্যেষ্ঠ নেতাদের তালিকা ধরে তাদের বিরুদ্ধে হাস্যকর মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
তিনি বলেন, হাতিরঝিল থানায় পুলিশের কাজে বাধা ও নাশকতার মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আমি রুহুল কবির রিজভী এবং সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুসহ ৫৫ জনকে আসামী করা হয়েছে। বিএনপি নেতা-কর্মীদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশের কাছে ‘আষাঢ়ে গল্পের’ একটা ‘ফরমেট’ সবসময় প্রস্তুত করা থাকে। সময় মতো বিএনপি’র নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে সেগুলো ব্যবহার করা হয়। এবারেও পুলিশ তাই করেছে।
বিএনপির এই মূখ্যপাত্র বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে সরকার ছক ধরে এগুচ্ছে। সারাদেশ নি:শব্দ ও জনশূন্য করার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে গতকাল বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যরাসহ জ্যেষ্ঠ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা সেটিরই প্রথম পদক্ষেপ। পরশু বিএনপি’র জনসভার পরে দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের সচিত্র দৃশ্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। টেনে হিঁচড়ে, চ্যাংদোলা করে, সার্টের কলার ধরে কিভাবে বিএনপি লোকজনদের পুলিশ ভ্যানে তোলা হচ্ছে, সেগুলিও মানুষের কাছে সুষ্পষ্টভাবে প্রতীয়মান, অথচ ডাহা মিথ্যা বলা শুরু হলো-বিএনপি নেতাকর্মীরা নাকি পুলিশের কর্তব্য কাজে বাধা দিয়েছে। বিএনপি’র জ্যেষ্ঠ নেতারা নাকি এতে ইন্ধন দিয়েছে। ভোটারবিহীন সরকারের পুলিশ বাহিনী সরকারের গণবিরোধী নীতি জনগণের মধ্যে প্রয়োগ করতে নিষ্ঠা সহকারে হানাদার বাহিনীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। আর সেজন্য বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নিষ্ঠুর পীড়ণের হাতিয়ার হিসেবে কাজ করছে। পতন নিশ্চিত জেনেও সরকার বারবার এধরণের বিপজ্জনক খেলায় মেতে উঠেছে।