ডেস্ক রিপোর্ট : জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বায়ক ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, জনগণের ঐক্য প্রতিষ্ঠা করা হবে, যার সামনে দাঁড়িয়ে কেউ আমাদের বঞ্চিত করতে পারবে না।এদেশ কোনও ব্যক্তির না, কোনও দলের কিংবা পরিবারের না। এদেশ ১৬ কোটি মানুষের।
রোববার (৭ অক্টোবর) বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ভোটের অধিকারের দাবিতে আয়োজিত মানবন্ধনে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. কামাল হোসেন বলেন, ১৬ কোটি মানুষ এই দেশের মালিক।সেই দেশে যদি নির্বাচন সুষ্ঠু না হয়, নির্বাচন যদি না হয়, জনগণ তাদের মালিকানা থেকে বঞ্চিত হয়।এই উপলব্ধি থেকে আমাদের ডাকে অসাধারণ সাড়া পড়েছে। দেশ যদি জনগনের মালিকানায় না থাকে, তখন পাইকারী ভাবে লুটপাট হয়। জনগণের সম্পাত্তি পাচার হয়।যেটা হয়ে আসছে। পত্র-পত্রিকায় দেখছেন যে, হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যাংক থেকে লুটপাট হচ্ছে, এগুলো যায় কোথায়? এগুলো বিদেশে যায়। দেশে বিনিয়োগ হচ্ছে না, নতুন কোনো কল-কারখানা হচ্ছে না। কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে না।অর্থাৎ স্বাধীনতার যে পতিশ্রুতি সেটা পালন হচ্ছে না। আজকে জনগণ এটা ভালো ভাবে বুঝতে আরাম্ভ করেছে।সেটা আমরা দেখছি, যেখানেই যাই অসাধারণ সাড়া পাই। আমাদের ১৬ কোটি মানুষ এটা বুঝে পরিবর্তন আনবে। সেকারণে আমরা দাবি করেছি সুষ্ঠু নির্বাচনের।কারণ আমরা মনে করি বৈধ ভাবে কোনো পরিবর্তন আসতে হলে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো বিকল্প নাই।অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিকে কেন্দ্র করে আমরা জনগণের ঐক্য প্রক্রিয়ার কাজে নিয়োজিত। আমি বিশ্বাস করি আমাদের এই আন্দোলন অবশ্যই সফল হবে। ইতোমধ্যে অনেকটাই সফল।এই দেশের মানুষ এই ইতিহাস সৃষ্টি করেছে যে, ঐক্যবদ্ধা ভাবে কোনো দাবিতে আন্দোলন করলে সে দাবি আদায় করা যায়।
তিনি বলেন, আমরা কতোগুলো ব্যাপার পরীক্ষা করে দেখেছি। সেই ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ৬ দফা দাবি, স্বাধীনতা সংগ্রাম, স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন, সব কয়টিতে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। যেটা অসম্ভব মনে করা হতো সেটা সম্ভব করা হয়েছে।এবারও অসম্ভব কিছু নেই, দেশে জনগনের মালিকানা প্রতিষ্ঠা হবে।
এই সংবিধান প্রণেতা বলেন, সংবিধানের প্রথম বিধানেই লেখা আছে, যে এই দেশের জনগণ সকল ক্ষমতার মালিক। তো মালিকের ভূমিকা কেউ কি আছেন? সবাই এখন অসহায় বোধ করেন।মালিকানা ভোগ করতে হলে, মালিকের ভূমিকা অবশ্যই রাখতে হবে। সেই ভূমিকা রাখার জন্য আমাদের এই আবেদন। এজন্যই ভূমিকা রাখতে হবে যে, সরকার গঠিত হবে অবাধ-সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে।
আমরা ইতোমধ্যে আমাদের দাবি গুলো জানিয়েছি, সকল রাজবন্দীদের মুক্তি দিতে হবে, নির্বাচন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না, মামলা দেওয়া যাবে না।কিন্তু উল্টোটা হয়েছে।কাউকে মুক্ত করাই হয়নি, বরং হাজার হাজার গায়েবি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সে কারণে আমাদের আন্দোলনকে তৃীব্র করতে হবে। ১৬ কোটি মানুষের আন্দোলনের মাধ্যমে এটাই প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এই দেশটা আমাদের সকলের, কোনো ব্যক্তির, দলের বা কোনো পরিবারের না।অতিতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন সফল হয়েছে এবারও সফল হবে। ১৬ কোটি মানুষকে নিয়ে ঐক্য করে আমরা যে শক্তি পাবো, যার সামনে দাঁড়িয়ে কোনো স্বৈরাচার আমাদের বঞ্চিত করতে পারবে না।
মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, সদস্য সুলতান মোহাম্মাদ মনসুর, সদস্য সচিব মোস্তফা আমিন, গণফোরামের সভাপতি মন্ডলির সদস্য জগলুল হায়দার আফ্রিক, সভাপতি সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ।