প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, জানতে চান কূটনীতিকরা

 

- Advertisement -

ডেস্ক রিপোর্ট: নির্বাচনের পরিবেশ থাকলে খালেদা জিয়াকে ছাড়াই ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট’ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে বলে কূটনৈতিকদের জানিয়েছেন ঐক্যফ্রন্টের নেতৃবৃন্দ। বৃহস্পতিবার বিকালে রাজধানীর হোটেল লেকশোরে ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট । বৈঠকে কূটনৈতিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ঐক্যফ্রন্টের নেতৃবৃন্দ এ কথা বলেন বলে সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ছাড়া তোমরা তো নির্বাচনে যাবে না- বৈঠকে কূটনৈতিকদের এই প্রশ্নের জবাবে ঐক্যফ্রন্টের নেতৃবৃন্দ বলেন, সেটা নয়। নির্বাচনের পরিবেশ থাকলে আমরা নির্বাচনে যাবো।

সূত্রটি আরো জানায়, বৈঠকে কূটনৈতিকরা ঐক্যফ্রন্টের কাছে জানতে চান যে, জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক আছে কী না? এই বিষয়ে ড. কামাল হোসেন কূটনৈতিকদেরকে বলেন, স্বাধীনতা স্বপক্ষের শক্তিদেরকে নিয়ে আমরা জোট করেছি। আর জামায়াতের তো এখন নিবন্ধন নাই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বৈঠকে উপস্থিত বিএনপির এক শীর্ষ নেতা বলেন, বৈঠকে একজন কূটনৈতিক প্রশ্ন করেছিলেন, তোমাদের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন? এই প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে বলা হয় যে, এটা তো যৌথ আন্দোলন। আর যৌথ আন্দোলনে লিডার তো এভাবে হয় না।

বৈঠক সূত্র জানায়, ঐক্যটা কেনো এবং কোন লক্ষ্য থেকে করা হয়েছে, সে বিষয়গুলো কূটনৈতিকদেরকে অবহিত করা হয়। আর কূটনৈতিকদের পক্ষ থেকে ঐক্যফ্রন্টের কাছে প্রশ্ন ছিলো, ক্ষমতায় গেলে কী কী পরিবর্তন আনবেন? নির্বাচন অংশগ্রহণ করবেন কি না? দফাগুলো মানা হবে কি না এবং প্রধানমন্ত্রী কীভাবে হবে?

এছাড়া কূটনৈতিকদের পক্ষ থেকে বলা হয় যে, এই দাবিগুলো তো আসলে বিএনপির। তখন ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে বলা হয় যে, যে কাউকে জিজ্ঞাস করুন না কেনো, এমনি কী আপনারা আওয়ামী লীগকেও জিজ্ঞাস করুন, তারা সুষ্ঠু নির্বাচন চায় কি না? তখন তারাও বলবে যে, তারা সুষ্ঠু নির্বাচন চান। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় বলে সূত্রটি জানায়।

বুধবার গুলশানে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার বিকালে কূটনৈতিকদের সঙ্গে ঐক্যফ্রন্টের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে ব্রিফ করে ঐক্যফ্রন্টের ৭ দফা দাবি ও ১১ লক্ষ্য কূটনৈতিকদের অবহিত করা হবে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের দাবিতে সরকারকে দেয়া ঐক্যফ্রন্টের ৭ দফা দাবি ও ১১ লক্ষ্য অবহিত করা হয় বলে বৈঠকের অপর একটি সূত্রে জানা গেছে।

প্রায় সোয়া এক ঘণ্টার বৈঠকের পর বিকেল ৪ টা ২০ মিনিটের দিকে কূটনীতিকরা বেরিয়ে যান। বৈঠক নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোন ব্রিফিং করেননি ঐক্যফ্রন্টের নেতারা।

অপর একটি সূত্র জানায়, বৈঠকের শুরুতেই সূচনা বক্তব্য রাখেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পরে ড. কামাল হোসেন কূটনৈতিকদের ব্রিফ করেন।

বৈঠকে কানাডা, জার্মানি, ফ্রান্স, জাপান, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীন, কাতার, ভিয়েতনাম, কোরিয়া, পাকিস্তান, সৌদি আরব, তুরস্কসহ ২৫টিরও বেশি দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার ও তাদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবিহ উদ্দিন আহমদ, ইনাম আহমদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সেলিমা রহমান, গণস্বাস্থ্য বোর্ডের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, জেএসডি সভাপতি আসম আব্দুর রব, জেএসডির সহসভাপতি তানিয়া রব, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সুলতান মোহাম্মদ মনসুর, গণফোরামের সুব্রত রায় চৌধুরী, বিএনপির নেতা ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা প্রমুখ। বাংলাদেশ জার্নাল

সর্বশেষ