বিএনপি জোটে নির্বাচনে অংশ নেয়ার পাল্লা ভারী

 

- Advertisement -

ডেস্ক রিপোর্ট: চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে না জানানো হলেও বিএনপির হাইকমান্ড, ২৩ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অধিকাংশ শরীক নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে মত দিয়েছে। এর অংশ হিসেবে জোটগতভাবে নির্বাচনের বিষয়টি বিএনপিসহ নিবন্ধিত দলগুলো রোববার পৃথকভাবে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে জানাবে।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়া না নেয়াসহ পরবর্তী কর্মসুচি ঠিক করতে শনিবার সিরিজ বৈঠক করে বিএনপি, ঐক্যফ্রন্ট ও ২০দলীয় জোটের নেতারা। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বৈঠক চলছিল।
২০ দলীয় জোটের বৈঠকের পর জোটের নেতা এলডিপির সভাপতি অলি আহমদ বলেন, দুই-একদিনের মধ্যেই নির্বাচন যাওয়া না যাওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানাবে ২০ দল।

তিনি বলেন, আজকের (শনিবার) বৈঠকে দেশের নির্বাচন ও দেশে সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। নির্বাচনে যাবো কি যাবো না এই ব্যাপারে আমরা কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি। আগামী দুই দিনের মধ্যেই ২০ দলীয় ঐক্যজোট আমাদের মূল দল বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাথে কথা বলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জাতির সামনে উপস্থাপন করব।

অলি বলেন, জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি হলো আমাদের প্রধান্য, তাকে মুক্তি দিতে হবে। তাহলেই নির্বাচনের পরিবেশ ফিরে আসবে। ২০ দলের অনেক নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছে। যদিও সরকার বলছে যে, সকলের জন্য নির্বাচনের সমান সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আমরা মনে করি এটা কাগজে কলমে সীমাবদ্ধ, পত্রিকার মধ্যে সীমাবদ্ধ। এখনো সকল দলের জন্যে সমান সুযোগ সৃষ্টি হয় নাই।

এলডিপির প্রধান বলেন, আমরা যারা নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল এই জোটে আছি তারা কমিশনের কাছে চিঠি লেখবে। চিঠির ভাষা এমন হবে যে, যদি আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহন করি সেক্ষেত্রে আমাদের দলীয় প্রতীকে অনেকে নির্বাচন করবে। আবার অনেকে ২০ দলের মূল দল বিএনপির প্রতীকে নির্বাচন করবে। যদি আমরা নির্বাচন করি।

এক প্রশ্নের জবাবে অলি আহমদ বলেন, যদি নির্বাচন গেলে আমি আমার দলীয় প্রতীকে নির্বাচন কবর।জোটের এক নেতা জানিয়েছেন, তিনটি দল ছাড়া সবাই বৈঠকে আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে মত দিয়েছে। জামায়াতে ইসলামী আজ তাদের সিদ্ধান্ত জানানোর কথা বলেছে।

অলি আহমদের সভাপতিত্বে বৈঠকে বিএনপির নজরুল ইসলাম খান, জাতীয় পার্টি(কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, জামায়াতের আবদুল হালিম, বিজেপি আন্দালিব রহমান পার্থ, খেলাফত মজলিশের মাওলানা মুহাম্মদ ইসহাক, আহমেদ আবদুল কাদের, ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা এম এ রকীব, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, এলডিপির রেদোয়ান আহমেদ, জাগপার তাসমিয়া প্রধান, এনডিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান, মুসলিম লীগের এএইচএম কামরুজ্জামান খান, পিপলস লীগের গরীবে নেওয়াজ, ন্যাপ ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, ডিএলের সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মাওলানা নুর হোসেইন কাসেমী, মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস, বাংলাদেশ জাতীয় দল সৈয়দ এহসানুল হুদা, পিপলস পার্টি অব বাংলাদেশ, রিটা রহমান, মাইনরিটি জনতা পার্টির সুকৃতি কুমার মন্ডল প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে নির্বাচনের বিষয়ে আলোচনা হয়।দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যরিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, রফিকুল ইসলাম মিয়া, ড. আবদুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

স্থায়ী কমিটির বৈঠক সুত্রে জানা গেছে, আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে অংশ গ্রহনের পক্ষেই অধিকাংশ নেতা মত দিয়েছেন। মনোনয়নপত্র দাখিলসহ নির্বাচনী সব প্রক্রিয়ায় থাকার জন্য দ্রুত সময়ে কিভাবে প্রস্তুতি সম্পন্ন করা যায় তা নিয়েও আলোচনা হয়। এছাড়া নির্বাচনে সরকার কতটুকু নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে এবং নির্বাচন কমিশন কতটুকু শক্তিশালী অবস্থান নেয় তা দেখে আন্দোলন শুরু করার ব্যাপারেও নেতারা মত দেন।

বৈঠক থেকে বের হয়ে স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিষ্টার মওদদু আহমদ বলেন, নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিষযে আলোচনা হয়েছে। আজ রোববার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বৈঠকগুলোর আলোচিত বিষয় ও সিদ্ধান্তের ব্যাপারে জানাতে সংবাদ সম্মেলন করবেন।

জানা গেছে, আজ দিনের যেকোন সময়ে মির্জা ফখরুল কারাবন্দী দলের চেয়াপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে কারাগারে দেখা করার চেষ্টা করবেন। নির্বাচনের বিষয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত জানার পরেই সংবাদ সম্মেলন করতে পারেন মির্জা ফখরুল।  ২০ দলীয় জোটের বৈঠকের পর একই স্থানে রাত আটটায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বৈঠক শুরু হয়।

সর্বশেষ