spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

খালেদা জিয়া কি নির্বাচন করতে পারবেন, সংবিধান কী বলে?

spot_img

 

- Advertisement -

ডেস্ক রিপোর্ট : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কী নির্বাচন করতে পারবেন? এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে নানা সংশয় উৎকণ্ঠা। তিনবারের এই সাবেক প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির মামলায় বর্তমানে কারাভোগ করছেন।

খালেদা জিয়া এবারের নির্বাচনে ফেনী-১, বগুড়া-৬ ও ৭ আসনে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন।কিন্তু গত ২ ডিসেম্বর বাছাইয়ের সময় কারাদণ্ডের কারণ দেখিয়ে তা বাতিল করে দেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়া আপিল করলে ইসিতে সংখ্যাগরিষ্ঠের ভিত্তিতে তা খারিজ হয়ে যায়।

এরপর রোববার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় খালেদা জিয়ার পক্ষে পৃথক তিনটি রিট করা হয়।সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন।

সোমবার ওই তিন আসন নিয়ে রিটের শুনানি শেষ হলে এ বিষয়ে আদেশের জন্য মঙ্গলবার দিন ধার্য করেন আদালত।এ বিষয়ে সংবিধান অনুযায়ী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নির্বাচন করতে পারবেন না বলে জানান অ্যার্টনি জেনারেল মাহবুবে আলম।

তিন আসনে খালেদার মনোনয়নপত্র বাতিল করে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জের রিট আবেদনের শুনানিতে সোমবার এ কথা বলেন তিনি।এদিন রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইনজীবীর বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে খালেদার রিট শুনানি শেষ করেন হাইকোর্ট।হাইকোর্টের বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ মঙ্গলবার আদেশের জন্য দিন ধার্য করেন।

এ সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের আইনজীবীরা। আদালতে খালেদার পক্ষে শুনানি করেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী, যিনি নির্বাচন কমিশনের শুনানি করেছিলেন।

অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তার সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির। এ সময় খালেদার পক্ষে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার বদরোদ্দোজা বাদল, কায়সার কামাল, একেএম এহসানুর রহমান, ফাইয়াজ জিবরান প্রমুখ।তবে খালেদা জিয়ার নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে পাল্লাপাল্টি বক্তব্য দিয়েছেন তার আইনজীবীরা।

শুনানিতে খালেদা জিয়ার আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘সংবিধান বা আইনের কোথাও বলা নেই যে, শুধু নিম্ন আদালতে বা হাইকোর্টে দণ্ড হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। সাবেক রাষ্ট্রপতি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদের বিরুদ্ধে করা একটি দুর্নীতি মামলায় আপিল বিভাগের একটি সিদ্ধান্ত বা রায় রয়েছে।

সেখানে বলা হয়েছে, আপিল বিভাগের সিদ্ধান্তের আগে কোনোভাবেই বলা যাবে না যে তিনি (সংশ্লিষ্ট) সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন।

আদালত বলেছেন, আপিল বিভাগের রায়ের পরই সেটা পূর্ণাঙ্গ রায় বলা যাবে। এক্ষেত্রে খালেদা জিয়ার পৃথক দুটি আপিল সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগে বিচারাধীন। তাই এরশাদের মামলায় আপিল বিভাগের দেয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী খালেদা জিয়ার সাজা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।তাই সংবিধানের ৬৬ (২) (ঘ) অনুচ্ছেদ তার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। সংবিধানের এ অুনচ্ছেদে চূড়ান্ত সাজার কথা বলা হয়েছে।’

খালেদার আইনজীবীর এসব যুক্তির জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, কোনো মামলায় সাজা (কনভিকশন) হলে তা স্থগিত করার নজির বা আইন নেই। দুটি মামলায় হাইকোর্ট এ কথা বলে দিয়েছেন। আর আপিল বিভাগ তা বহাল রেখেছেন।তিনি বলেন, এছাড়া আরেকটি মামলায় আপিল বিভাগ বলে দিয়েছেন, সাজা স্থগিতের কোনো বিধান নেই।

মাহবুবে আলম বলেন, এছাড়া সংবিধানের ৬৬ (২) (ঘ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী দুর্নীতির মামলায় ২ বছর বা তার বেশি সময়ের জন্য সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি দণ্ড ভোগ করে মুক্তি লাভের ৫ বছর আগে নির্বাচন করতে পারবেন না। সংবিধানের এ বিধান অনুযায়ী খালেদা জিয়াও নির্বাচন করতে পারবেন না।

এর আগে খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী কায়সার কামাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন বেআইনিভাবে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার তিনটি মনোনয়নপত্র বাতিল করে দিয়েছিল। আমরা আশা করছি, বেগম খালেদা জিয়া ন্যায়বিচার পাবেন এবং জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন।’

জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১০ বছর ও জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৭ বছরের দণ্ড নিয়ে গত ফেব্রুয়ারির ৮ তারিখ থেকে কারাগারে আছেন খালেদা জিয়া। যুগান্তর

spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

সর্বশেষ