কোন ধরণের হিংসাত্মক কার্যকলাপ নয়, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোন শত্রুতার সৃষ্টি করবেন না,সিইসি

মো.মুক্তার হোসেন বাবু : প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করার আগে রিটানিং অফিসার, সহকারী রিটানিং অফিসারের কাছে গিয়ে সমস্যার সমাধান করা উচিত। কারণ নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করলে মাঠ পর্য়ায়ে সে অভিযোগ আবার রিটানিং অফিসারের কাছে তদন্তের জন্য পাঠাতে হয়। সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন কাজ করে চলেছে। চট্টগ্রাম বিভাগের জেলার রিটানিং অফিসার, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নিয়ে নির্বাচন পূর্ব বিভাগীয় পর্যায়ের প্রস্তুতি সভায় চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন হলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মাঠ পর্যায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, মাঠ পর্যায়ের নির্বাচনী দায়িত্বভার আপনাদের কাছে অর্পন করা হয়েছে। বর্তমানে অবাধ সুষ্ঠু সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করার মত পরিবেশ রয়েছে। আপনারা আপনাদের অবস্থানে থেকে সকল প্রার্থীকে নির্বাচনী আইন-শৃঙ্খলার মধ্যে থেকে প্রচার-প্রচারণা চালানোর নির্দেশ দিবেন। কোন ধরণের হিংসাত্মক কার্যকলাপ নয়, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোন শত্রæতার সৃষ্টি করবেন না। কোন ধরণের আইন-শৃঙ্খলা অমান্য করা যাবেনা। প্রচার-প্রচারণার ক্ষেত্রে সমসুযোগ দেওয়ার তাগিদ দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। তিনি আরো বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১ হাজার ৮ শত ৪৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছে। পূর্বে কখনো এত প্রার্থীর সমাগম হয়নি। সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য মাঠ পর্যায়ে সব ধরণের প্রস্তুতি ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন সম্পন্ন করেছে।
মতবিনিময় সভায় নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলালুদীন আহমদ, নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, নির্বাচন কমিশনার সচিব হেলাল উদ্দিন, বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল মান্নান, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি গোলাম ফারুক, সিএমপি কমিশনার মাহবুবুর রহমানসহ চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন জেলার জেলা প্রশাসক, ইউএনও, পুলিশ সুপার, আনসার ও সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনালের শাহাদাত হোসেন বলেন, চট্টগ্রাম ভৌগলিক কারনে পাহাড়, সাগর আর সমতলের। এ জনপদের গুরুত্ব অনেক বেশী। চট্টগ্রাম বিভাগে ৫৮টি আসনে ২ কোটি এক লক্ষ ভোটার রয়েছে। ভোটাররা যাাতে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে এবং ভোট দিয়ে নির্বিঘেœ বাড়ি ফিরতে পারে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। কোন ক্রমেই যেন নির্বাচনের পূর্বে পরিবেশ নষ্ট না হয়। কোন কর্মকর্তা অতি উৎসাহী হয়ে কিছু না করেন এবং গণমাধ্যম কর্মীরা যাতে নির্বাচনের পূর্বে গলযোগ সৃষ্টি হয় এমন বিভ্রান্তিকর সংবাদ যেন প্রকাশ না করেন।
নির্বাচন কমিশনের সচিব হেরাল উদ্দিন বলেন, কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে যেন একই রোহিঙ্গা নির্বাচনের সময় বের হয়ে না আসতে পারে। চট্টগ্রাম জেলা রেড জোন নয়, এ বিভাগে কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী, চাঁদপুর, লক্ষীপুর রেড জোন। এসব অঞ্চল থেকেই বেশী বেশী অভিযোগ আসছে। ৬টি আসনের ইভিএম পদ্ধতির চট্টগ্রাম-৯ আসন একটি। প্রতিটি আসনে নির্বাচনের খরচের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কোন অবস্থাতেই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশের জন্য এবং গাড়ির জন্য পুলিশকে অপেক্ষা করতে না হয়। প্রত্যেকটি আসনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, সশস্ত্র বাহিনী, কোস্টগার্ড, বিজিবি ও পুলিশ দায়িত্বে রয়েছে। কেন্দ্রীয় পর্যায়ে কো-অডিনেট করছি আমি এবং জেলা পর্যায়ে করছে রিটানিং অফিসার। প্রার্থীদের বৈধ লাইসেন্সকৃত অস্ত্র ব্যতিত সকল বৈধ অস্ত্র নিকস্থ থানা অথবা ট্রেজারীতে জমা করতে হবে। এখন প্রত্যেকটি আসনে প্রার্থীদের কিংবা প্রার্থীদের প্রধান প্রতিনিধির সাথে খোলামেলা করে আস্বস্থ করতে হবে। আমরা চাই নতুন সরকার ও নতুন পার্লামেন্ট হবে সুন্দর। গণমাধ্যমে যেন কোন বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রচার না হয় সেদিকে খেয়াল রাথখতে হবে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, জাতীয় পর্যায়ে নেকারা এমন অভিযোগ করেন বাস্তবতার সাথে মিল খুঁজতে কষ্ট হয়। ৯৫ ভাগ আভিযোগ নিয়ে সন্দিহান। এ প্রসঙ্গে ঢাকার এক জাতীয় নেতা অভিযোগে বলেন, আমাদের পোস্টার লাগাতে দেয়া হয়না, পুলিশ ছিড়ে ফেলে দেয়। আমি প্রশ্ন করলাম পুলিশ কি নির্বাচনে প্রতিদ্ব›দ্বীতা করে? আবার অভিযোগ করে আরামবাগ প্রেসে আমাদের পোস্টার ছাপাতে দেয় না। আমি বললাম আমি প্রেসে যাবো। পরে আবার জানানো হয়, আমি প্রেসে গেলে ওই প্রেস আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হবে। তখন আমার আর কি করার আছে। আমি চাই অবাধ ও সুষ্ঠ নির্বাচন। তাই মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তারা স্ব স্ব দায়িত্ব পালন করবেন। এর পূর্বে তিন পার্বত্য জেলার নির্বাচন সংক্রান্ত সকল কর্মকর্তাদের সাথে মত বিনিময় করেন।

সর্বশেষ