spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

ভোট বিপ্লবের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের বিজয় নিশ্চিত,ড.কামাল হোসেন

spot_img

 

- Advertisement -

ভয়ভীতি উপেক্ষা করে দেশবাসীকে রোববার ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন।

তিনি বলেছেন, ‘ভয়ভীতি উপেক্ষা করে পাকিস্তানি বাহিনীকে পারাজিত করেছিল বাঙালি। স্বৈরাচারকে হটিয়েছে। ভীতি উপেক্ষা করেই গণতন্ত্রের মুক্তি নিশ্চিত করতে ৩০ ডিসেম্বর ভোট কেন্দ্রে যেতে হবে। ভোটের অধিকার আদায়ে প্রতিটি কেন্দ্র পাহারা দিতে হবে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের বিজয় নিশ্চিত করতে হবে।’শুক্রবার বেইলি রোডের বাসায় যুগান্তরকে এসব কথা বলেন সংবিধানপ্রণেতা ড. কামাল হোসেন।

রোববার একযোগে দেশের ২৯৯ আসনে নির্বাচন হবে। ভোটে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের বিরুদ্ধে লড়ছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। বিএনপি, গণফোরাম, জেএসডি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ও নাগরিক ঐক্য মিলে গঠিত এই জোটের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন।

ভোট কেমন হবে- এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমরা আগেই বলেছিলাম, সরকারি দলের অধীনে এবং আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন দিয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। আমাদের সেই কথাই সত্য হয়েছে। সরকার যেনতেনভাবে ক্ষমতায় থাকতে প্রশাসনকে ব্যবহার করছে। এমনকি আদালতকেও ব্যবহার করেছে। এদেশে যা আর কখনোই অতীতে ঘটেনি।’

ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘বিরোধী দলের প্রার্থীদের মাঠে নামতেই দেয়া হয়নি। এমনকি স্বতন্ত্র প্রার্থীদেরও পদে পদে বাধা দেয়া হয়েছে। প্রার্থী, ভোটার, তাদের কর্মী-সমর্থক সবাই সরকারি দলের সন্ত্রাসীদের হাতে আক্রান্ত হচ্ছে। গণমাধ্যমকর্মীরাও বাদ যাননি। সবমিলিয়ে একধরনের ভীতিকর পরিস্থিতির মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘৭০ সালের নির্বাচনেও এমন ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হয়েছিল। কিন্তু ভোটের দিন মানুষ দলে দলে ঘর থেকে বেরিয়ে আসে। বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে ভোট কেন্দ্রে যায়। ভোটাধিকার প্রয়োগ করে। একদিন আগেও মানুষের ওই গণজাগরণের বিষয়টি পাকিস্তানি সামরিক সরকার বুঝতে পারেনি।’

ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘মানুষ জেগে উঠেছিল বলেই সেদিন বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক বিজয় অর্জন করেছিলেন। এবারও ভোটের দিন চিত্র বদলে যাবে। সাধারণ মানুষ দলে দলে ভোট কেন্দ্রে যাবে। মনে রাখতে হবে- ১০ বছর পর ভোট দেবে দেশের মানুষ। বাধা দিলে তারাই প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। আর মানুষের সম্মিলিত প্রতিরোধের কাছে কোনো অপশক্তি টিকে থাকতে পারবে না। এই সরকারের তো টিকে থাকার প্রশ্নই ওঠে না। তারা এরই মধ্যে বুঝে গেছে ভোট সুষ্ঠু হলে তাদের ভরাডুবি হবে। তাই ভোটের নামে প্রহসনের আশ্রয় নিয়ে আরও ৫ বছর ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। আইয়ুব-ইয়াহিয়ার মতো তাদেরও এই স্বপ্ন ৩০ ডিসেম্বর ধূলিসাৎ হয়ে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘শত প্রতিকূলতার মধ্যেও এবারের নির্বাচন নিয়ে গণজাগরণ সৃষ্টি হয়েছে। ’৭১ সালের মতো এই গণজাগরণে কেউ বাধা হয়ে দাঁড়াতে চাইলে তারা ভেসে যাবে। মানুষ বুঝে গেছে- বর্তমান সরকার জনগণের সরকার না। তারা লুটপাটের সরকার। এই সরকার আবারও ক্ষমতায় এলে মানুষ মরবে। খুন-গুম হবে। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড আরও বাড়বে। শেয়ারবাজারে আবার লুটপাট হবে। অর্থ পাচার বাড়বে। ব্যাংক-বীমা বলে কিছু থাকবে না। মানুষ নিজের স্বার্থে, দেশ বাঁচাতে, অর্থনীতি বাঁচাতে নিজেরাই ভোটের মাধ্যমে এ সরকারের বিদায়ঘণ্টা বাজাবে’।

ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘আমি দেশবাসীকে বলব, আর মাত্র ২৪ ঘণ্টা। ৫ বছর অপেক্ষা করেছেন। অনেকে অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করেছেন, জীবন দিয়েছেন। আর মাত্র ২৪ ঘণ্টা অপেক্ষা করুন। নির্বাচনের দিন ভোট কেন্দ্রে যান। ভোট কেন্দ্র পাহারা দিন। নিজেরাই রাষ্ট্রের মালিকানার দায়িত্ব বুঝে নিন। কেউ যাতে আপনার ভোটাধিকার কেড়ে নিতে না পারে, সেজন্য সজাগ ও সতর্ক থাকুন। অবশ্যই আপনাদের সম্মিলিত প্রতিরোধের মুখে সব অপশক্তি পিছু হটবে, স্বৈরাচারের পতন ঘটবে। ৩০ ডিসেম্বর ভোট বিপ্লবের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের বিজয় নিশ্চিত হবে। মানুষের মুক্তি নিশ্চিত হবে। এদেশে সুশাসন ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে।’যুগান্তর

spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

সর্বশেষ