বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, কোনো ব্যক্তি রাজনৈতিক আশ্রয় পেলে তিনি যতদিন না বলবেন তা নিজের দেশে যাওয়ার পরিবেশ হয়েছে। এরআগে কারো কোনো ক্ষমতা নেই তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার। সুতরাং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফেরানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে ৭ দিন ধরেও অবস্থান করেন, তবুও তারেক রহমানকে ফেরৎ আনতে পারবেন না।
আজ শুক্রবার সকাল ১১টায় নয়া পল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল আয়োজিত খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুস্থতা কামনায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে দোয়া মাহফিলে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, মহিলা দলের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা নূরে আরা সাফা, ওলামা দলের সভাপতি হাফেজ মাওলানা মো. মালেকসহ মহিলাদলের নেত্রীরা।
ড. মোশাররফ হোসেন বলেন, তারেক রহমান যেদিন বলবে আমি বাংলাদেশে যাব, বাংলাদেশ আমার জন্য নিরাপদ সেদিনই কেবল আনা যাবে। তার আগে নয়। তারেক রহমান ব্রিটিশ আইন মোতাবেক সে দেশে অবস্থান করছেন। অন্যদিকে বাংলাদেশ সরকার তার লন্ডনে অবস্থান নিয়ে ভুল বোঝানোর চেষ্টা করেছে। যেহেতু বাংলাদেশে তারেক রহমানের সাজা হয়েছে। সরকার তাকে সহ্য করতে পারেনা। তাই ব্রিটিশ সরকারের কাছে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন। সেখানে তিনি পলিটিকাল অ্যাসাইলামে আছেন।
তিনি বলেন, কেউ রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকলে তার পাসপোর্ট ওই দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা রাখতে হয়। তাকে একটি ট্রাভেল ডকুমেন্ট দেয়া হয়। এটা ব্রিটিশ নিয়ম। রাজনৈতিক আশ্রয় পেলে ওই ব্যক্তি যতদিন না বলবে আমার নিজের দেশে যাওয়ার পরিবেশ হয়েছে। তার আগে কারো কোনো ক্ষমতা নেই তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার। আজকে প্রধানমন্ত্রী বলেন- যেকোনো মূল্যে তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু যদি প্রধানমন্ত্রী ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে ৭ দিন ধরেও অবস্থান করেন, তবুও তারেক রহমানকে ফেরৎ আনতে পারবেন না। শেখ হাসিনা যেভাবে তাকে আনতে চায় সেভাবে আনা যাবে না।
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে সাজা দেয়া হয়েছে। নির্জন কারাগারে রাখা হয়েছে। দেশনেত্রীর শারীরিক অবস্থা দিন দিন অবনতি হচ্ছে। আমাদের দাবি তার সুচিকিৎসার সুবিধার্থে মুক্তি দেয়া হোক। যেন তিনি মুক্ত হয়ে পছন্দমতো চিকিৎসা করতে পারে। অন্যথায় তার কারাবাস দীর্ঘায়িত হলে ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক।
তিনি বলেন, আমাদের নেত্রীকে বাইরে রেখে এই সরকার আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচন করতে চায়। এটা হতে দেয়া হবে না। খালেদার মুক্তি ও একাদশ নির্বাচন একই সূত্রে গাথা। তাই খালেদা জিয়ার মুক্তি ব্যতিত নির্বাচন হবে না।
মোশাররফ বলেন, আমরা কষ্টে আছি আর আওয়ামী লীগ আতঙ্কে আছে। তারা জানে নির্বাচন হলে কোনোভাবেই আওয়ামী লীগ জিততে পারবে না। কারণ জনগণ তাদের সাথে নেই।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা নিজে অবৈধ, তার সরকারও অবৈধ। অথচ আজ তারা তারেক রহমানের নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এখন আবার বলছে নাগরিকত্বের সঙ্গে পাসপোর্টের সম্পর্ক নেই। এরা এতো জঘন্য, এতো মিথ্যাবাদী যা বলার মতো নয়। খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়ার মাধ্যমে তারা গণতন্ত্রের দুয়ার আটকে দিয়েছে। আজ আমাদের সকল শৃঙ্খল, সকল তালা ভেঙে দেশনেত্রীকে মুক্ত করতে হবে।