spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

চট্টগ্রামে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা অঢেল সম্পদের মালিক

spot_img

মো.মুক্তার হোসেন বাবু :: পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) একটি টিম মঞ্জুরুল আলম নামে একজন ইয়াবা ব্যবসায়ীকে ধরতে গিয়েছিল। তাকে পাওয়া না গেলেও ধরা পড়ে যায় রূপম নামে একজন ব্যক্তি। তার কথাবার্তা অসংলগ্ন মনে হওয়ায় নিয়ে আসা হয় পিবিআই অফিসে। পরে জিজ্ঞাসাবাদে দেখা যায় রূপম বড় মাপের ইয়াবা পাচারকারী। তার বিররুদ্ধে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাঙামাটিসহ বিভিন্ন থানায় ইয়াবা পাচারে অভিযুক্ত থাকার অপরাধে মামলা রয়েছে ১২টি। ব্যাংকে কাড়ি কাড়ি টাকার পাশাপাশি রয়েছে সেফটি লকারও।
নিজেকে কখনো কখনো রূপন, কখনো রিপন, কখনো আবার রূপম চৌধুরী পরিচয় দিতেন। গ্রেপ্তার এড়াতে এসব ছদ্মনাম ব্যবহার করতেন তিনি। ঠিকানাও ব্যবহার করতেন একাধিক। বাড়ি বোয়ালখালী উপজেলার সারোয়াতলী হলেও জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়েছেন রাঙামাটির কাঠালতলীর ঠিকানায়। সফলও হয়েছিলেন তিনি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখে ধুলো দিয়ে নির্বিঘ্নে করেছেন ইয়াবা ব্যবসা। দেশজুড়ে চলা মাদকের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযানেও রূপম ছিলেন নিরাপদ। গড়ে তুলেছেন অঢেল সম্পদ। সর্বশেষ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্টোর হাতে ধরা পড়ার পর অনুসন্ধানে এই ইয়াবা কারবারির বিপুল সম্পদের খোঁজ মেলে। মাদক ব্যবসার মাধ্যমে তার অর্জিত অবৈধ সম্পদ খতিয়ে দেখতে দুদককে চিঠি দিয়েছে পিবিআই। বোয়ালখালী উপজেলার সারোয়াতলী গ্রামের পদ্ম পুকুরের সামনে কানুন চৌধুরী বাড়ির মৃত দয়াল চৌধুরীর ছেলে রূপম চৌধুরী ওরফে রূপন চৌধুরী। বিয়ে করেছেন দুইটা। লোকচক্ষুর অন্তরালে থেকে দুই বউয়ের নামে গড়ে তুলেছেন অঢেল সম্পদ। এদিকে গোলাপি বড়ি (ইয়াবা) জীবন বদলে দিল মো. নিজাম উদ্দিনের জীবন। বিগত কয়েক বছর আগ থেকে সিন্ডিকেট নিয়ে মিলেমিশে শুরু করলেন ইয়াবা কারবার। ধীরে ধীরে বদলে যেতে থাকে সময়, জীবনের চালচিত্র। সেই গোলাপি বড়ির কল্যাণে বদলে যায় পুরো পরিবার, কোটিপতি বনে যান চট্টগ্রামের আনোয়ারার মো. নিজাম উদ্দিন প্রকাশ ইয়াবা নিজাম। এক সময় সংসারের হাল ধরেতে নগরীর একটি ট্রান্সপোর্টে সামন্য বেতনের চাকুরীজীবি নিজাম এখন কোটি কোটি টাকার মালিক।আনোয়ারার পীরখাইন মরহুম আবদুস চাত্তারের ছেলে নজরুল ইসলাম এ বিষয়ে বিভিন্নস্থানে অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগে জানা গেছে, বিগত ৬/৭ বছর আগে অর্থের অভাবে চট্টগ্রাম নগরীর একটি ট্রান্সপোর্টে সামন্য বেতনে চাকুরী করা নিজাম প্রশাসনের চোখে ফাঁকি দিয়ে ইয়াবা পাচার ও ব্যবসা করে এমন অর্থ বৃত্তের মালিক হয়েছেন। চট্টগ্রাম মহানগরীর খাতুনগঞ্জের মোল্লা মার্কেট, দেওয়ান হাটের পোস্তার পাড়, কর্ণফুলী থানার শাহ মিরপুর এলাকাসহ নগরীতে একাধিক নিজস্ব প্ল্যাট,ঢাকার নারায়নগঞ্জের রূপপুর ও উত্তরায় নিজবাড়ি এবং একাধিক ফ্ল্যাট থেকে সিন্ডিকেট করে নিয়ন্ত্রণ করছে ইয়াবা ব্যবসা এমনটি অভিযোগ করেছেন তিনি।
কক্সবাজার, চকরিয়া, আজিজনগর পাহাড়ী এলাকা, নিজের একটি সাবান কারখারানা এবং আনোয়ারার উপকূলীয় এলাকাসহ একাধিক পয়েন্টে তার পণ্যবাহী গাড়ি, নিজের ট্রান্সপোর্টের ট্রাক ও কার্গোতে ইয়াবা পাচার করে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগে আরো জানা গেছে, নগরীতে একাধিক প্ল্যাট, খতিবের হাট এলাকায় ৮ তলা ভবনের ৩২টি প্ল্যাটের আবসিক ভবন নির্মানাধীন, কক্সবাজারে বহুতল ভবন, গ্রামের বাড়ি আনোয়ারায় পীরখাইনে অন্যর জায়গায় এক মাসের মধ্যেই তৈরী করছে বিলাসবহুল বাড়ি। দখল করে নিয়েছে অন্যর বালিমহল। কর্ণফুলী শাহ মীরপুর এলাকায় কয়েককোটি টাকার ফসলি জমি ক্রয় করে রাতারাতি কোন প্রকার অনুমোদন না নিয়ে কেমিস্ট ছাড়াই সাবান, ডিটারজেন্ট ও কয়েল উৎপাদন করে আসছে। তবে এসব পণ্য বাজারে প্রচলেন না থাকলেও এগুলো তার লোক দেখানো ব্যবসা। এ ব্যাবসার আড়ালে সে নিজেকে ইয়াবা ব্যবসায় জড়িয়ে রেখেছে বলে অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে। এছাড়া ঢাকা ও চট্টগ্রামে ১০/১২টি ব্যাংকে নামে বেনামে হিসাব ও এফডিআর রয়েছে। টাকা গোপন রাখার জন্য খাতুনগঞ্জে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের ডিওর নামে কোটি কোটি টাকা লগ্নী করে রেখেছে। তার নিজের ও দুই স্ত্রী এবং সন্তানদের নামে বেনামে এসব অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। এ বিষয়ে মো. নিজাম উদ্দিনের তার সাথে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

সর্বশেষ