প্রত্যাবাসন নিয়ে মোটেও আস্থা নেই রোহিঙ্গাদের। তারা বলছেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপের মুখে এটা ওটা বলে সময় ক্ষেপণ করছে মিয়ানমার। বাস্তবে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে আন্তরিক নন দেশটি।
‘প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হলেই মিয়ানমারে কথিত যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। কোনো কোনো সমস্যাকে সামনে এনে প্রত্যাবাসন বাধাগ্রস্ত করা হয়। মিয়ানমারের এমন ছলচাতুরীর কারণে প্রত্যাবাসন আদৌ হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন রোহিঙ্গা নেতা ডা. জুবায়ের।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ আমাদের দেশ নয়। আমরা আমাদের সব অধিকার নিয়ে নিজ দেশে ফিরে যেতে চাই। কিন্তু মিয়ানমারের নানা নাটকীয়তার কারণে টেকসই প্রত্যাবাসন হচ্ছে না।
অন্যদিকে সাধারণ রোহিঙ্গারা বলছেন, প্রত্যাবাসনের দাবিতে সোচ্চার ছিলেন আলোচিত রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ। কিন্তু তাকে হত্যার পর প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া আরও থমকে গেছে।
বালুখালীর ৯ নম্বর ক্যাম্পের রোহিঙ্গা মো. আলম বলেন, রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য, নাগরিকত্বসহ বিভিন্ন অধিকার আদায়ে সোচ্চার ছিলেন মুহিব উল্লাহ। কিন্তু তাকে হত্যার পর সবকিছুতেই স্থবিরতা চলে এসেছে।
মুহিব উল্লাহর মত নেতা আর রোহিঙ্গাদের মধ্যে হবে না এ কথা জানিয়ে একই ক্যাম্পের রোহিঙ্গা মো.আনাছ বলেন, রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলাসহ রোহিঙ্গাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সবকিছুতে মুহিব উল্লাহর সোচ্চার ভূমিকা ছিল। কিন্তু কী হতে কী হয়ে গেল। এখন রোহিঙ্গাদের পক্ষে জোরালোভাবে কথা বলার লোকও নেই। এমন পরিস্থিতিতে প্রত্যাবাসন আদৌ শুরু করা যাবে কিনা সন্দেহ আছে।
পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর জানান, হত্যা, চাঁদাবাজি, অপহরণ, চুরি, ডাকাতি, রোহিঙ্গারা করছে না এমন কোনো অপরাধ বাকি নেই। এ অবস্থায় দিন দিন স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মাঝে শঙ্কা বাড়ছে।
স্থানীয়দের এমন দুর্বিষহ জীবন থেকে মুক্তি দিতে দ্রুত রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর দাবি জানাচ্ছি।
তবে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শামছুদ্দৌজা।
তিনি বলেন, প্রত্যাবাসনের জন্য ইতোমধ্যে প্রায় ৮ লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গার তালিকা মিয়ানমারের কাছে পাঠানো হয়েছে। সেগুলো তারা যাচাই-বাছাই করছে।