গ্রামীণ টেলিকমের সাড়ে ৩৩ কোটি টাকা দুদকের জব্দে

গ্রামীণ টেলিকমের কর্মচারী ইউনিয়ন নেতা ও আইনজীবীদের ৩৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা আটকে দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। তাদের ১৯টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের লেনদেন বন্ধ করে দিয়েছে সংস্থাটি।

- Advertisement -

শ্রমিকদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সোমবার এ পদক্ষেপ নিয়েছে দুদক।

ব্যাংকগুলোকে ব্যবস্থা নিতে চিঠি দেন দুদক কর্মকর্তা গুলশান আনোয়ার প্রধান। গ্রামীণ টেলিকমের পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন। কর্মচারীদের লভ্যাংশের ৫ শতাংশ টাকা আত্মসাৎ, ২ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা পাচারসহ চার অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে। এরই মধ্যে গ্রামীণ টেলিকমের কাছে নথিপত্র চাওয়া হয়েছে।

দুদক কমিশনার মোজাম্মেল হক খান জানান, গ্রামীণ টেলিকমের আইনজীবী ইউসুফ আলী ও জাফরুল হাসান শরীফের তিনটি ব্যাংক হিসাব এবং ইউসুফ আলীর ল ফার্মের একটি অ্যাকাউন্টের লেনদেন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এগুলোতে ১৬ কোটি টাকা জমা রয়েছে বলে জানান তিনি।

এছাড়া, গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন নেতা কামরুজ্জামান, ফিরোজ মাহমুদ হাসান ও মাইনুল ইসলামের ১৩টি অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেছে দুদক। এতে রয়েছে ১৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা।

গ্রামীণ টেলিকমের টাকা পাচারের অভিযোগে সংস্থাটির শীর্ষ কর্মকর্তারও ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হতে পারে বলে জানিয়েছে দুদক।

প্রসঙ্গত, নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ টেলিকমে শ্রমিক ছাঁটাইকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন শ্রমিক অসন্তোষ চলছিল। শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন (বি-২১৯৪) সিবিএর সঙ্গে আলোচনা না করেই এক নোটিশে ৯৯ কর্মীকে ছাঁটাই করে গ্রামীণ টেলিকম কর্তৃপক্ষ।

গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আশরাফুল হাসান স্বাক্ষরিত এক নোটিশের মাধ্যমে এ ছাঁটাই করা হয়। এরপর সেই নোটিশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেন ২৮ জন কর্মী। এই ছাঁটাইকে কেন্দ্র করে ড. ইউনূসকে তলবও করে হাইকোর্ট।

এছাড়া গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চার জনের বিরুদ্ধে মামলাও করে ঢাকার কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তর।

যেখানে অভিযোগ করা হয়, গ্রামীণ টেলিকম পরিদর্শনে গিয়ে সেখানে তারা শ্রম আইনের কিছু লঙ্ঘন দেখতে পান। এর মধ্যে ১০১ জন শ্রমিক-কর্মচারীকে স্থায়ী করার কথা থাকলেও তাদের স্থায়ী করা হয়নি। শ্রমিকদের অংশগ্রহণের তহবিল ও কল্যাণ তহবিল গঠন করা হয়নি। এছাড়া কোম্পানির লভ্যাংশের ৫ শতাংশ শ্রমিকদের দেওয়ার কথা থাকলেও তা তাদের দেওয়া হয়নি।

সর্বশেষ