দীর্ঘদিন রোহিঙ্গাদের অবস্থানের কারণে আর্থিক ও নিরাপত্তা সব দিক থেকে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার সকালে ৪৬তম ইন্দো প্যাসিফিক আর্মি ম্যানেজমেন্ট সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ কথা জানান তিনি। এ সময় প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, তাদের দ্রুত মিয়ানমারে ফেরত না পাঠাতে পারলে বাংলাদেশ অনিরাপদ হয়ে ওঠবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা শান্তি ও জনগণের ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করি। শান্তিরক্ষা আমাদের সাংবিধানিক অঙ্গীকার। তাই আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। মিয়ানমারকে অনুরোধ করছি রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে।সরকার প্রধান বলেন, বর্তমান বিশ্বে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং ইস্যু। বাংলাদেশ বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক প্রেক্ষাপটে সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেই কাজ করতে চায়। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব কারও সঙ্গে বৈরিতা নয় বাংলাদেশ এই নীতিতে বিশ্বাস করে। বলেন, বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সুসম্পর্ক বজায় রাখতে বাংলাদেশ বদ্ধ পরিকর।
তিনি আরও বলেন, উন্নয়ন, শান্তি ও নিরাপত্তা বিশ্বের প্রায় সব দেশের প্রধান নীতিগত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এই ইস্যুটি দেশগুলোকে টেকসই উন্নয়নের জন্য শক্তিশালী সহযোগিতার দিকে নিয়ে গেছে। এটি যোগাযোগ, সংলাপ এবং শীর্ষ বৈঠকের বেসামরিক এবং সামরিক কূটনৈতিক চ্যানেলের পথও প্রশস্ত করেছে।
বলেন, আইপিএএমএস সব সময় ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে বন্ধুত্ব, শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আমি মনে করি, এই ফোরামের মাধ্যমে পারস্পরিক প্রতিক্রিয়া বাস্তবসম্মত বহু-পার্শ্বিক সমাধানে পৌঁছানোর জন্য সাধারণ স্বার্থের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করতে সহায়তা করবে।
শেখ হাসিনা বলেন, যেকোনো দেশের সেনাবাহিনী সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করার অন্যতম উপাদান। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে জন্ম নেয়া বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সময়ের সাথে উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নতি করেছে। শান্তি সহায়তা কার্যক্রমে অবদানের জন্য বাংলাদেশ আজ বিশ্বজুড়ে সুপরিচিত বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জাতিসঙ্ঘ মিশনে এবং বিশ্বের যেকোনো স্থানে দেশ ও বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা যে বাংলাদেশ সর্বদা বৈশ্বিক শান্তি বজায় রাখতে সহায়তা করবে।আমাদের সামরিক বাহিনী জাতিসঙ্ঘের অধীনে বিশ্ব শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে প্রধান ভূমিকা পালন করছে। আমরা এটা বজায় রাখতে চাই বলেও জানান সরকার প্রধান।
সেমিনারে সেনাপ্রধান এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, পুরো পৃথিবী বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ইন্দো প্যাসিফিক অঞ্চল এর ব্যতিক্রম নয়। এই অঞ্চল অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক কারণে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যে কারণে এই অঞ্চলের দেশগুলোর সেনাবাহিনীর মধ্যে সংযোগ ও সহযোগিতা বাড়ানো প্রয়োজন বলেও জানান তিনি।
যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর যৌথ আয়োজনে সেমিনারে ইউএস আর্মি প্যাসিফিক কমান্ডারসহ ২৭টি দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন।