রেলওয়ে শ্রমিক লীগের অর্ন্তদ্বন্ধ : কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বেকায়দায়

আফসানা মিমি : বাংলাদেশ শ্রমিক লীগে নেতত্বে নিয়ে চলছে টানাপোড়ন। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এ টানা পোড়নে সাধারণ কর্মচারীদের মধ্যে চলছে নানা রকম হিসেব নিকেশ। চলছে সমালোচনা। আর এর ফাঁকে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোও যার যার মত করে কর্মসূচী পালন করে চলেছে এবং বেশ সংগঠিত হচ্ছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলে দীর্ঘদিনের নেতৃত্বে থাকা শ্রমিক লীগের নেতা সিরাজুল ইসলাম এখন অনেকটা কোনঠাসা হয়ে পড়েছে। তারা এ কোনঠানাসা হয়ে পড়ার করণ হচ্ছে তারই এক সময়ের ডান হাত বলে পিরিচিত মো. অলি উল্লাহ সুমন। এক নামেই সবাই এখন সুমন নামে চেনে। কেউ কেউ এটিকে বলেছেন গুরু শিষ্যের খেলা। এক সময় সিরাজুল ইসলাম আর সুমনের একে অপরের পরিপূরক হয়ে উঠেছিল। এখন তাদের মধ্যে সাপে নেউলে সম্পর্ক। রেলওয়ের শ্রমিক লীগের দুই মেরুর এ দ্বন্ধে কর্মকর্তা কর্মচারীরাও বিব্রত। বহিস্কার পাল্টা বহিস্কারের পর এরই মধ্যে উভয় গ্রুপের মারামারি শেষ পর্যন্ত আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে তাদের শত্রুতা।
জানা যায়, কিছুদিন আগে রেলওয়ের শ্রমিক লীগের কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সিরাজুল ইসলাম কেন্দ্রকে না জানিয়ে কমিটি গঠন করেন আর সে কমিটিতে তিনি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। আর এ কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছিড়িয়ে পড়ে উভয় পক্ষে মারামারি হয় এবং ৮ জন আহত হয়। মামলা হয় উভয় পক্ষ থেকে। এখন অলি উল্ল্যাহ সুমন দাবী করেন, সিরাজুল ইসলাম বহিস্কৃত নেতা। এক সময় তিনি আমার নেতা ছিলেন। এখন যেহেতু পদ নেই, সেহেতেু তিনি আমার নেতা নন। আমি কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃত্ব জেনেই শ্রমিক লীগের রাজনীতি করেছি। আমার পাশে স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতারা আছেন। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে সিরাজুল ইসলামের দুনীর্তি ও অনৈতিক কাজের সমর্থন না দেয়াতে তিনি আমার প্রতি ক্ষুদ্ধ , আমি দুনীর্তিবাজ নেতৃত্বের প্রতি অনুগত্য থাকতে চাইনা। রেলওয়ে কর্মচারীদের সপ্নের সংগঠন রেলওয়ে সমবায় ঋনদান সমিতি (সীমিত) এর অর্থ ও সম্পদ আত্মসাতকারীদের বিরুদ্ধে আমার অবস্থান। এদিকে সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে রেলওয়ে বিভিন্ন পদে কর্মচারী নিয়োগের প্রভাব খাটিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে বলে অভিযোগ উঠেছে এবং সংগঠনের জন্য জমি ক্রয় করার নামে অর্থ আত্মসাত করে বলে শুনা যাচ্ছে। যাহা অভিযোগের মাধ্যমে নিরুপনের কাজ চলেছে। এ ব্যাপারে সিরাজুল ইসলাম জানান, সুমনের কর্মকান্ড দলের জন্য ক্ষতিকারক এবং আমার জন্য কষ্টের । তাই তাকে শ্রমিক লীগ থেকে বের করে দিয়েছি। সিরাজ সুমনের দ্বন্ধে¦ বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বঞ্চল কর্মচারীরা তটস্থ। তাদের দাপটে কর্মকর্তা কর্মচারীরা এখন দিশেহারা। কোন কর্মচারী বা কর্মকর্তা সুমন কিংবা তার অনুসারীদের সাথে কথা বরলে সিরাজ ক্ষুদ্ধ হন। আবার সিরাজের কিংবা তার অনুসারীদের সাথে কথা বললে সমুন ক্ষুদ্ধ।
এদিকে তাদের অন্তদ্বন্ধে¦ দায়ের করা মামলা সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে হাইকোর্ট বিভাগের রিটপিটিশন ৬৮৭৯/১৮ এর প্রদত্ত আদেশটিতে রুল নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থগিত করে দেন নতুন কমিটি। অন্যদিকে হাইকোর্ট বিভাগের রিট পিটিশন ৬৫৭২/১৮এর আদেশ গত ২০ মে সমিতির অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় এবং ব্যবস্থাপনা কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ায় চট্টগ্রাম জেলা সমবায় সমিতি মো. অলি উল্লাহ সুমনকে সভাপতি করে ৫ সদস্যের অন্তবর্তী ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করে দেয়। দীর্ঘদিন যাবৎ বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে শ্রমিক লীগের নেতৃত্বে থাকা সিরাজুল ইসলাম এখনো সাধারণ সম্পাদক রয়েছেন।

সর্বশেষ