আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি জাবালে নূরের বাসচালকের

 

- Advertisement -

রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ঘাতক বাসের চালক মো. মাসুম বিল্লাহ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

স্বীকারোক্তিতে তিনি বেপরোয়াভাবে বাস চালানোর কথা স্বীকর করেছেন। স্বীকারোক্তিতে তিনি বলেন, তার ভারী বাস চালানোর লাইসেন্স ছিল না। ঘটনার দিন তিনি ঘটনাস্থলে এসে অধিক যাত্রী দেখতে পান। অধিক টাকা উপার্জনের লোভে সামনে থাকা জাবালে নূর পরিবহনের আরেকটি বাসকে অভারটেক করে গিয়ে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের ওপর দিয়ে বাস চালিয়ে দেন। এতে দুজন নিহতসহ বেশ কয়েকজন আহত হন।

বুধবার ঢাকা মহানগর হাকিম মো. গোলাম নবীর আদালতে বাসচালক মাসুম ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় এ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।

এদিন সাত দিনের রিমান্ড শেষে আসামিকে আদালতে হাজির করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক কাজী শরিফুল ইসলাম।

আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মহানগর হাকিম ওই জবানবন্দি গ্রহণ করেন। জবানবন্দি গ্রহণ শেষে আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

আদালত সূত্র জানায়, চলতি বছরের ১ আগস্ট মাসুমের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। ২৯ জুলাই দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আবদুল্লাহপুর-মোহাম্মদপুর রুটে চলাচলকারী জাবালে নূর পরিবহনের তিনটি বাসের রেষারেষিতে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

এতে শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী আবদুল করিম রাজিব ও একই কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী দিয়া খানম মিম নিহত হন।

এ ছাড়াও আরও অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। ওই ঘটনায় রোববার রাতেই রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় নিহত দিয়া খানম মিমের বাবা জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও আদালত সূত্র জানায়, শহীদ রমিজ উদ্দিন কলেজের ২০-২৫ জন শিক্ষার্থী হোটেল র‌্যাডিসন ব্লু’র বিপরীত পাশে ফ্লাইওভার থেকে নামার মুখে যে বাসস্ট্যান্ড সেখানে দাঁড়িয়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাস সেখানে আসে।

কিছুক্ষণ পর একই পরিবহনের আরেকটি বাস দ্রুতগতিতে এসে দাঁড়িয়ে থাকা বাসটিকে ওভারটেক করতে গিয়ে টার্ন নেয় এবং নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। নিমেষে দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের ওপর উঠে যায় বাসটি। কেউ চাকার নিচে পিষ্ট হয়, কেউ ধাক্কা খেয়ে ছিটকে পড়ে।

আহত শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে করিম ও মিমকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।

এ মামলায় ঘাতক বাস জাবালে নূরের মালিক মো. শাহাদত হোসেন ছাড়াও মো. সোহাগ আলী (বাসচালক), মো. এনায়েত হোসেন (চালকের সহকারী), মো. জোবায়ের (বাসচালক) ও মো. রিপন হোসেন (চালকের সহকারী) বর্তমানে রিমান্ডে রয়েছেন।

সর্বশেষ