ডেস্ক রিপোর্ট: সাপ্তাহিক পত্রিকার সম্পাদক গোলাম মোর্তোজা বলেছেন, ৯৫ বছর আগে ব্রিটিশদের তৈরি করা আইন ফিরিয়ে আনা হলো ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ধারায়।বৃহস্পতিবার ডেইলি স্টারের অনলাইনে একথা লিখেছেন তিনি।
গোলাম মোর্তোজা লিখেছেন, দাবি উঠেছিল ৫৭ ধারা বাতিলের বিষয়টি নিয়ে। ‘৫৭ ধারা থাকবে না’ বলেছিলেন অনেক মন্ত্রী, এমনকি পুলিশও। নামে না থাকলেও, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫, ২৮, ২৯, ৩১ ধারায় ৫৭ ধারা প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। যা আরও বিস্তৃত, আরও ভীতিকর।
তিনি বলেন, আইনটি ব্রিটিশরা তৈরি করেছিল ১৯২৩ সালে। দখলদারিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্যে, নিপীড়ন- নির্যাতন এবং মানুষের মুখ বন্ধ রাখতে বাধ্য করাই ছিল ব্রিটিশদের উদ্দেশ্য। পাকিস্তানি সামরিক শাসকেরা বাঙালি জাতির প্রতিবাদ স্তব্ধ করে দেওয়ার জন্যেও ব্যবহার করেছে ঔপনিবেশিক এই কালো আইন। ২০১৮ সালে সেই আইন আবার ফিরিয়ে আনা হলো ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ধারায়।
সিনিয়র এই সাংবাদিক উদাহরণ দিয়ে লিখেছেন, ধরুন একটি ব্যাংকে হাজার কোটি টাকা জালিয়াতির ঘটনা ঘটল। এখন প্রায় সব তথ্য কম্পিউটারেই থাকে। গণমাধ্যম কর্মী হিসেবে কেউ যদি সেই নথি- তথ্য সংগ্রহ করেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট অনুযায়ী মামলা করা যাবে। ১৮০ দিনের মধ্যে তার বিচার সম্পন্ন করে ১৪ বছর কারাদণ্ড এবং ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করা যেতে পারে।
মিয়ানমারে সম্প্রতি রয়টার্সের দুই সাংবাদিককে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হলো। তাদের অপরাধ কী ছিল জানেন? তারা রোহিঙ্গা নিধনের তথ্য সম্বলিত নথি সংগ্রহ করেছিল। এই অপরাধে গ্রেপ্তার এবং দণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সুতরাং বেসিক ব্যাংকের টাকা জালিয়াতির প্রমাণ বা বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির তথ্য সংগ্রহ করলেও ‘সরকারি গোপনীয়তা ভঙ্গ’র দায়ে অভিযুক্ত করা যাবে।