রফিকুল ইসলাম (২৮) গাজীপুরের কাপাসিয়ার উপজেলার চাপাত গ্রামের মৃত মাইন উদ্দিনের ছেলে । নাসরিন আক্তার (২৭) একই উপজেলার হালজোড় গ্রামের গোলাপ হোসেনের মেয়ে। নাসরিন দ্বিতীয় স্বামীকে বাদ দিয়ে ২০১২ সালে প্রেম করে রফিকুল ইসলামকে বিয়ে করেন। রফিকুলের সাথে বিয়ের আগেও তাঁর দুটি বিয়ে হয়েছিল।
বিয়ের পর রফিকুল ২০১৪ সালে চাকুরি নিয়ে ওমান চলে যান। রফিকুল ওমান থাকাবস্থায় তাদের সংসারে মনিরার জন্ম হয়। এদিকে নাসরিন অন্য এক যুবকের সাথে আবারও পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। এ সংবাদ শুনে ওমান থেকে দেশে ফিরে আসেন রফিকুল ইসলাম।
দেশে ফেরার পর পরকীয়ার সন্দেহে রফিকুল ও নাসরিনের মধ্যে প্রায়ই কলহ লেগে থাকতো।২০১৭ সাল থেকে তারা নিজ গ্রামের বাড়ি ছেড়ে গাজীপুর সদর উপজেলার হোতাপাড়া এলাকায় বসবাস শুরু করে। সেখানে একটি কারখানায় কর্মরত অবস্থায় এক গার্মেন্টসকর্মীর সাথে আবারও পালিয়ে যান নাসরিন। চারমাস পর ওই সংসার থেকে ফিরে এসে আর পরকীয়া প্রেম করবে না বলে স্বীকারোক্তি দিয়ে আবারো রফিকুলের সাথে সংসার শুরু করে সে।
প্রায় তিন মাস আগে তারা গাজীপুরের কাপাসিয়া থেকে আবারও বাসা পরিবর্তন করে পার্শ্ববর্তী শ্রীপুর উপজেলার গিলারচালা গ্রামে ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করে। সেখানে দুজনই স্থানীয় ডেনিম্যাক গার্মেন্টস্ লিমিটেড কারখানায় চাকুরী নেন। এরপর আবারও কারখানার এক সহকর্মীর সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে নাসরিন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রফিকুল ৮ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার স্ত্রীর সাথে ঝগড়া করে কাপাসিয়ার চাপাত গ্রামের নিজ বাড়ীতে চলে যান।
কন্যা সন্তানকে হত্যা করে নিজে আত্মহত্যা করার পরিকল্পনা নিয়ে শনিবার বিকেলে গিলারচালা ভাড়া বাড়ীতে আসেন রফিকুল। ওইদিন হত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে পরদিন রবিবার বিকেল সোয়া চারটায় দিকে মনিরাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। এরপর মরদেহ ঘরের খাটের নিচে পাতিলের ভেতর রেখে পালিয়ে যায়। সোমবার ভোররাতে গাজীপুর মহানগরের নীলেরপাড়া এলাকা থেকে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারের হয় সে।
শ্রীপুর থানা উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহমুদুল হাসান জানান, সন্ধ্যায় শিশুটির মা নাসরিন আক্তার মুঠোফোনে মনিরা নিখোঁজের বিষয়টি থানায় জানান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে খোজাখুজির এক পর্যায়ে রবিবার রাত পৌনে ৯ টার দিকে ঘরের খাটের নিচে পাতিলের ভেতর থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কমকর্তা (ওসি) জাবেদুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় নাসরিন আক্তার বাদী হয়ে স্বামী রফিকুল ইসলামের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। রফিকুল এ হত্যার ঘটনায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট শামীমা খাতুনের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।