ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা তেহরান থেকে পারমানবিক অস্ত্রের নমুনা যে রাতে চুরি করে সেই একই রাতে তা ইসরায়েলে পাঠাতে সক্ষম হয় বলে দাবি করা হয়েছে টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে। এর উপর ভিত্তি করে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তেলআবিবে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে এক সচিত্র উপস্থাপনায় বলেছেন, এটি তার গোয়েন্দা সংস্থার বুদ্ধিমত্তার সর্বশ্রেষ্ঠ সাফল্য। তবে ইরানের পক্ষ থেকে নেতানিয়াহুর এ দাবিকে ‘শিশুসুলভ হাস্যকর নাটক’ অভিহিত করে বলা হয়েছে, নেতানিয়াহু এমন সময় এ হাস্যকার নাটক প্রদর্শন করেছেন যখন পাশ্চাত্যের নিয়ন্ত্রিত আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা বা আইএইএ পরমাণু সমঝোতা স্বাক্ষরিত হওয়ার পর অন্তত ১০টি প্রতিবেদনে এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছে যে, ইরান এ সমঝোতা পুরোপুরি মেনে চলছে। অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে বলা হয়েছে ইসরায়েলের এধরনের দাবির ভিত্তি রয়েছে। টাইম অব ইসরায়েল/নিউইয়র্ক টাইমস/পার্স
নিউইয়র্ক টাইমস বলছে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে মোসাদ তেহরানে ওই পারমাণবিক অস্ত্রের মজুদের সন্ধান পায়। সেখানে একটি ভবন ভেঙ্গে মোসাদের লোকজন আধা টন উপকরণ, কাগজপত্র সরিয়ে নিয়ে একই রাতে তা ইসরায়েলে পাঠাতে সক্ষম হয়। ১৮৩টি সিডিতে ৫৫ হাজার ফাইল ছিল। এসব দলিলের সচিত্র বিবরণ দিয়েই নেতানিয়াহু দাবি করছেন ইরান পারমানবিক অস্ত্র তৈরির ব্যাপারে মিথ্যা বলছে। ওয়াশিংটনে মোসাদের প্রধান ইয়োসি কোহেন বিষয়টি প্রেসিডেন্ট ট্্রাম্পকে অবহিত করেন। ফার্সি ভাষায় লিখিত কাগজপত্র অনুবাদে বেশ কিছুটা সময় লেগে যায়। তেহরানের দক্ষিণে শোরাবাদ জেলায় ওই পারমানবিক স্থাপনা ছিল। নেতানিয়াহু বলেন, কিছু ইরানি বিষয়টি জানত এবং কিছু ইসরায়েলিও বিষয়টি টের পায়।
এদিকে ইরানের উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়্যেদ আব্বাস আরাকচি নেতানিয়াহুর উত্থাপিত কাগজপত্রকে জাল ও ভুয়া আখ্যায়িত করে বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যাতে ইরানের পরমাণু সমঝোতার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেন সে লক্ষ্যে এই পরিকল্পিত নাটক প্রদর্শন করেছেন তিনি। আগামী ১২ মে’র মধ্যে ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে পরমানু সমঝোতার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। কিন্তু ইরানের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি হবার পর দেশটি নতুন করে পারমানবিক অস্ত্র তৈরি করেছে কি না সে ব্যাপারে ইসরায়েল কোনো প্রমাণ উল্লেখ করতে পারেনি।