শনিবার, ২৫ জানুয়ারি ২০২৫
spot_img

দুই সিটিতে ভীতি ছড়াতে বিএনপি নেতাদের গ্রেপ্তার- রিজভী

 

- Advertisement -

গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটারদের মধ্যে ভীতি ছড়াতেই বিরোধী নেতাকর্মীদের নির্বিচারে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। গতকাল নয়া পল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এ অভিযোগ করেন। রিজভী বলেন, গতকাল ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সিনিয়র নেতাদেরকে নির্বিচারে গ্রেপ্তার করেছে। এর আগে গাজীপুর জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর ও জামায়াতের মেয়র প্রার্থী নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে বিএনপির মেয়র প্রার্থীকে সমর্থন জানিয়েছেন। এর পরপরই সরকার ক্ষিপ্ত হয়ে জামায়াতের আমীরসহ প্রায় ৪৫ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। এগুলো কিসের আলামত? এর মাধ্যমে সরকার বুঝাতে চায়- নির্বাচনের আগ পর্যন্ত তারা এভাবে গ্রেপ্তার করতে থাকবে।
আসন্ন দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের জন্য এটি একটি মেসেজ। তিনি বলেন, গাজীপুর ও খুলনায় যারা নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন, রাতের বেলায় সরকারের নির্দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেসব স্থানীয় নেতাদের বাসায় বাসায় হানা দিয়ে ক্রসফায়ারের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে সাধারণ ভোটারদের মাঝেও ভীতি ছড়াচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির নেতাদের ব্যাপকহারে আটক করা হয়েছে। কাজেই এরকম পরিস্থিতিতে আসন্ন দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচন কখনোই সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে না। নির্বাচন সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও সন্ত্রাসীদের প্রভাব মুক্ত করতে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে। রিজভী বলেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা উপহাস, তাচ্ছিল্য ও মশকরা শুরু করেছেন। যারা গণতন্ত্র বিনাশী মানবাধিকার পরিপন্থি, নাগরিক স্বাধীনতা হরণকারী, অগণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল তাদের রাজনৈতিক মতের বিরুদ্ধের মানুষের মর্যাদা ও জীবনের কোনো দাম নেই। দেশনেত্রীর শারীরিক
অসুস্থতা নিয়ে সরকার নিশ্চুপ-নির্বাক থেকে দলের সাধারণ সম্পাদককে দিয়ে ঠাট্টা তামাশা করাচ্ছে। এটা নিষ্ঠুর উপহাস। সহজাত বিচার বুদ্ধি হারিয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা ক্ষমতায় মোহগ্রস্ত। বিনা চিকিৎসায় খালেদা জিয়াকে বন্দি রেখে দুরভিসন্ধিমূলক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়া আদালতের বদৌলতে নয়, শেখ হাসিনার প্রতিহিংসার বদৌলতে কারাগারে বন্দি। এটাই সর্বজনস্বীকৃত। আদালতের মাধ্যমে একটা আনুষ্ঠানিকতা করা হয়েছে মাত্র। এটি অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রীরই অন্ধ অসূয়ার উন্মাদ প্রতিফলন। এই জন্যই দেশনেত্রীর সুচিকিৎসা ও তাঁকে মুক্তি না দিতে সরকারপ্রধান অনিচ্ছুক ও অনমনীয়। দেশনেত্রীর চিকিৎসা নিয়ে সরকারের যে টালবাহানা ও ষড়যন্ত্রের কথা আমরা বলে আসছি তা গতকাল ওবায়দুল কাদের আবারও স্পষ্ট হয়েছে। এ সময় তিনি খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি এবং তাঁর পছন্দ অনুযায়ী ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জোর দাবি জানান। রিজভী বলেন, রোববার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি এম শামসুল হুদা, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশীদ হাবিব, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাইফুল ইসলাম পটু, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহ-সভাপতি মো. ইউনুস মৃধা, গোলাম হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কেএম জোবায়ের এজাজ, আলমগীর হোসেন, অ্যাডভোকেট ফারুকুল ইসলাম, লতিফুল্লাহ জাফরু, সাংগঠনিক সম্পাদক তানভীর আহমেদ রবিন, কমিশনার রফিকুল ইসলাম রাসেল, সহ-সাধারণ সম্পাদক জামিলুর রহমান নয়ন, মো. আলী চায়না, প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া রুবেল, প্রচার সম্পাদক আব্দুল হাই পল্লব, ছাত্রনেতা আল মামুনসহ প্রায় ২০ জন নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পাবনা জেলার সুজানগর পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শাজাহান শেখকে গত রোববার র‌্যাব পরিচয়ে উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। এখনও পর্যন্ত তার কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। এভাবে প্রতিনিয়ত বিরোধী নেতৃবৃন্দকে নিরুদ্দেশ করা হচ্ছে। খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি আন্দোলনকে দমন করার জন্য প্রতিদিনই বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। তাদের ওপর জুলুম-নির্যাতন চালানো হচ্ছে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির নেতৃবৃন্দকে গ্রেপ্তার ও পাবনার বিএনপি নেতা শাজাহান শেখকে তুলে নেয়া সেই জুলুমেরই নিরবচ্ছিন্ন অংশ। নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার বন্ধসহ শাজাহান শেখকে জনসম্মুখে হাজির করার জোর দাবি জানাচ্ছি। ব্রিফিংয়ে অন্যান্যের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী, নাজমুল হক নান্নু, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহ দপ্তর সম্পাদক মুনির আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।মানবজমিন

সর্বশেষ