রোহিঙ্গাদের নিরাপদে মায়ানমারে ফিরিয়ে নিতে সেদেশের সরকারের ওপর চাপ দিতে ওআইসির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলন উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই আহ্বান জানান। ওআইসি পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ৪৫তম সম্মেলন শুরু হয়। সম্মেলনে উপস্থিত ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিনিধিরা।
সিএফএম এর বিদায়ী সভাপতি আইভরিকোস্টের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কেল এতে সভাপতিত্ব করছেন। অনুষ্ঠানে সিএফএম এর সভাপতির দায়িত্ব বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করা হবে। ওআইসির মহাসচিব ড. ইউসুফ এ আল ওতাইমিন ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী উদ্বোধনী পর্বে বক্তব্য রাখবেন।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় নিরাপত্তা পরিষদের শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলোর যথেষ্ট ভূমিকা রাখার সুযোগ ছিল। কিন্তু তারা সে ভূমিকা পালন করেনি।
ওআইসির সদস্য নয় এমন দেশ যেমন কানাডা, কসোভো ও নর্দান সাইপ্রাসের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরাও অংশ নেন সম্মেলনে। সম্মেলন শুরুর আগে শুক্রবার ওআইসি পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করেন।
কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন ওআইসির প্রতিনিধি দলের প্রধান হিশাম ইউসেফ বলেন, শনিবার ও রোববার ওআইসি পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে রোহিঙ্গা ইস্যুটি প্রাধান্য পাবে।
আগামী বর্ষা মৌসুমে দুর্যোগকালীন পরিস্থিতিতে এবং প্রত্যাবাসন শেষ না হওয়া পর্যন্ত ওআইসি রোহিঙ্গাদের পাশে থাকবে। হিশাম ইউসেফ বলেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে ওআইসি মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা করবে এবং দ্রুত ফেরত নেওয়ার বিষয়ে চাপ দেবে।
এদিকে ওআইসি পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনের প্রস্তুতির বিষয়ে অবহিত করতে বৃহস্পতিবার ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সম্মেলনে বিশেষভাবে স্থান পাবে। সম্মেলনকালে একটি বিশেষ অধিবেশনে এ বিষয়ে আলোচিত হবে।
এবারের ওআইসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য হলো- টেকসই শান্তি, সংহতি ও উন্নয়নের জন্য ইসলামী মূল্যবোধ। সম্মেলনের আয়োজক দেশ হিসেবে বাংলাদেশ আগামী এক বছর ‘কাউন্সিল অব ফরেন মিনিস্টার্স’র (সিএফএম) চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবে।
ঢাকায় সিএফএম বৈঠকে যেসব বিষয় গুরুত্ব পাবে সেগুলো হলো- মুসলিম বিশ্বের সংঘাত ও চ্যালেঞ্জ, আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী, বিশ্বব্যাপী মুসলমানরা যে ধরনের মানবিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হচ্ছে কিভাবে সেগুলো সমাধান করা যায়, বিশ্বব্যাপী যে ইসলামোফোবিয়া তৈরি হয়েছে তা দূরীকরণের উপায় যথা- সভ্যতা ও সংস্কৃতির আন্তঃসংলাপ, মুসলিম উম্মাহর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, ওআইসি দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং সাংস্কৃতিক বিষয়সহ বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতার ক্ষেত্র খুঁজে বের করা প্রভৃতি।
বাসস জানায়, ৫৬টি ওআইসি সদস্য দেশের মধ্যে ৫২টি দেশের ৬০০ প্রতিনিধি এতে অংশ নিয়েছেন। এ ছাড়া ৪০ জন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী উপস্থিত আছেন। এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘টেকসই শান্তি, সংহতি ও উন্নয়নে ইসলামিক মূল্যবোধ’।