ভয়ভীতি ও হত্যার হুমকির অভিযোগের মামলায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলটির চার শীর্ষ নেতাকে গ্রেপ্তার ও হয়রানি না করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে আগামী ছয় সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়া অন্যরা হলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। আজ মঙ্গলবার বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এর আগে সকালে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় তাঁদের পক্ষে জামিন আবেদন করা হয়।
বিএনপি নেতাদের পক্ষে আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন ও এ জে মোহাম্মদ আলী শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষের ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রেজাউল করীম।
গতকাল সোমবার ঢাকার মহানগর বিচারিক হাকিম সত্যব্রত শিকদারের আদালতে জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ নয়জনের বিরুদ্ধে ভয়ভীতি, হত্যার হুমকির অভিযোগে মামলার আবেদন জানান। অন্য আসামিরা হলেন—বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, বুয়েটের বহিষ্কৃত শিক্ষক হাফিজুর রহমান রানা ও ছাত্রদল নেতা এমদাদুল হক ভূঁইয়া।
মামলার বাদী তাঁর অভিযোগে বলেন, ‘চলতি বছরের ২৩ জুলাই বুয়েটের বহিষ্কৃত শিক্ষক হাফিজুর রহমান রানা তাঁকে একটি চিঠি পাঠান। চিঠিতে ১৫ আগস্ট ইসলামিক স্টেট (আইএস) দিয়ে বাদীসহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। এ ছাড়া বোমা মেরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিক্ষেত্র উড়িয়ে দেওয়া হবে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, পরে তারেক রহমানের নেতৃত্বে গঠন করা হবে নতুন বাংলাদেশ।’
তারেক রহমান আইএসের সঙ্গে চুক্তি করেছেন দাবি করে বাদী এ বি সিদ্দিকী আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন।
পরে মামলার শুনানি করে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ঢাকা মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদার। তাই এ মামলায় জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন জানান বিএনপির চার শীর্ষ নেতা।
এ বি সিদ্দিকীর করা মামলার অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, গত ২৩ জুলাই বাদীর বাসায় রেজিস্ট্রি ডাকে চিঠি পাঠিয়েছেন বুয়েটের শিক্ষক হাফিজুর রহমান রানা। চিঠিতে তাঁকে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত থাকার হুমকিও দেওয়া হয়েছে। এক মাসের মধ্যেই বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে থাকা সব মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়ারও হুমকি দেওয়া হয়।
পরে ওই ঘটনায় তিনি নিরাপত্তা চেয়ে হাতিরঝিল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি অন্তর্ভুক্ত করেন। এরপর নয়জনকে আসামি করে গতকাল সোমবার ঢাকা মহানগর হাকিমের আদালতে মামলা করেন।