টেবিলে টেবিলে সাজানো ইফতার সামগ্রী। বিকেল থেকেই চলে কুরআন তিলাওয়াত ও হামদ না’ত পরিবেশনা। মিলনায়তন ভরা ওলামা মাশায়েখ আর এতিমেরা। দলের স্থায়ী কমিটির বেশ কয়েকজন সদস্যও উপস্থিত। নেই শুধু বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তার চেয়ারটি ফাঁকা পড়ে আছে। শুক্রবার প্রথম রমজানে ওলামা মাশায়েখ ও এতিমদের সম্মানে বিএনপির ইফতার ও দোয়া মাহফিলে তাই অনেক কিছু থেকেও যেন ছিলো না প্রাণ।
প্রায় প্রতিবছরই পয়লা রোজায় দলের উদ্যোগে ওলামা আর এতিমদের সম্মানে ইফতারের আয়োজনে শরিক থাকতেন বেগম জিয়া। টেবিল ঘুরে ঘুরে এতিম ছেলে মেয়ে আর ওলামাদের সাথে কুশল বিনিময় করতেন। দেশ ও জাতির উদ্দেশে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্যও দিতেন তিনি; কিন্তু এবারই প্রথম খালেদা জিয়াকে ছাড়াই এতিম এবং ওলামাদের নিয়ে ইফতার করল বিএনপি। রাজধানীর লেডিস ক্লাবে আয়োজিত ইফতারে তাই শুন্যতা বিরাজ করে। মঞ্চে অতিথিদের সাঁড়িতে প্রধান অতিথি বিএনপি চেয়ারপারসনের জন্য চেয়ারটি ফাঁকা ছিল।
খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে এতিম শিক্ষার্থীসহ ওলামা-মাশায়েখদের স্বাগত জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ইফতার শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে অত্যন্ত ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আমরা এই ইফতার মাহফিলের অনুষ্ঠান করছি। প্রতিবছরে পহেলা রমজানে এই দেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, দুই বারের বিরোধী দলীয় নেতা যিনি ১৬ কোটি মানুষের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের প্রতীক সেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজকে আমাদের মাঝে নেই। এই সময়ে তিনি কারাগারে। প্রত্যেক বছর তিনি এখানে ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের নিয়ে ইফতার করেন। আজকে তিনি কারাগারের অন্ধকারে একেবারে নির্জনে প্রথম রমজানের ইফতার করছেন। এটা আমাদের সকলের জন্যে অত্যন্ত মর্মান্তিক। আমরা আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া চাইব, আল্লাহ যেন তাকে অতিদ্রুত মুক্তি দিয়ে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা এক কঠিন সময় পার হচ্ছি, যে সময়টা দেশের জন্যে, জাতির জন্যে অত্যন্ত ক্রান্তিকাল। এই সময়ে আমরা সাহসের সঙ্গে ধৈর্যের সঙ্গে মোকাবিলা করে গণতন্ত্রকে ছিনিয়ে আনতে হবে, দেশনেত্রীর মুক্তিকে ছিনিয়ে আনতে হবে। এই জগদ্দল যে পাথর আমাদের বুকের ওপর চেপে বসেছে, ফ্যাসিবাদ একনায়ক চেপে বসেছে, তার থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে সংগ্রাম করতে হবে।