spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

‘সরকার চাইলে খালেদা জিয়াকে যে কোনো হাসপাতালে নিতে পারেন’

spot_img

 

- Advertisement -

বেগম খালেদা জিয়া শারীরিকভাবে সুস্থ নন। কারোরই অজানা নয় এই তথ্য। কারাগারে যাওয়ার পরে অসুস্থতার মাত্রা বাড়বে, সেটাও খুব অস্বাভাবিক নয়। বিতর্ক চলছে ‘মাইল্ড স্ট্রোক’ না ‘সুগার ফল’ নিয়ে। দুপক্ষের বক্তব্য থেকেই অসুস্থতার বিষয়টিই উঠে এসেছে।

বাইরে যে পরিবেশে তিনি থাকতেন, তার সঙ্গে কারাগারের পরিবেশের কোনো তুলনা করা চলে না। দেশে এবং বিদেশে যে চিকিৎসা সুবিধা নিয়েছেন, কারাগারে তা পাওয়ার কথা নয়। তার চেয়ে বড় বিষয়, এখন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা কেমন, তিনি কতটা সুস্থ, কতটা অসুস্থ- তা নিয়ে যতটা ধোঁয়াশা আছে, ততটা তথ্য নেই।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকেরা কারাগারে দেখা করে এসে বললেন, ‘তার মাইল্ড স্ট্রোক করেছিল। তিনি অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলেন।’

বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা প্রয়োজন। রাষ্ট্রীয় নিয়ম-কানুন মেনেই তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। সরকার চাইছে তাকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে এনে চিকিৎসা করাতে। বেগম খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে নয়, ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে চান। ফলে তাকে আনা হয়নি বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে।

প্রশ্ন এসেছে, দেশের সবচেয়ে ভালো ডাক্তারদের একটা অংশ তো বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে কর্মরত। তাহলে সেখানে চিকিৎসা নিতে সমস্যা কোথায়? তাছাড়া জেল কোড অনুযায়ী, সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার নিয়ম।

এক্ষেত্রে প্রশ্ন, বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের মান নিয়ে নয়। প্রশ্ন হলো, একজন রোগীর ইচ্ছে বা স্বস্তিবোধের। তিনি যে ডাক্তার, যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে ইচ্ছুক, তার চিকিৎসা সেখানেই হওয়া উচিত। এক্ষেত্রে সামনে আসছে জেল কোডের প্রসঙ্গ। জেল কোডে এ কথা বলা নেই যে, সরকারি হাসপাতাল ছাড়া অন্য কোনো হাসপাতালে চিকিৎসার জন্যে নেওয়া যাবে না। সরকার ইচ্ছে করলে, চিকিৎসার জন্যে যেকোনো হাসপাতালে নিতে পারেন। খালেদা জিয়ার ভাই ইউনাইটেড হাসপাতালের চিকিৎসার ব্যয় বহন করতেও সম্মতির কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন।

তাছাড়া জেল কোড বা আইনের যে বাধ্যবাধকতার কথা বলা হচ্ছে, তা যে সব সময়ই মেনে চলা হয়- বিষয়টি মোটেই তেমন নয়। ইয়াবা ব্যবসায়ী, হত্যা মামলার সুস্থ অপরাধীরাও মাসের পর মাস হাসপাতালের ভিআইপি কেবিনে থাকে।

বঙ্গবন্ধু মেডিকেল অবশ্যই একটি ভালো হাসপাতাল।

কিন্তু ‘আস্থা’ এবং ‘অনাস্থা’র মতো একটি বিষয় আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা বা ডাক্তারদের ক্ষেত্রে আছে, এটা অস্বীকার করা যাবে না। কারণ গুরুত্বপূর্ণ এই পেশাজীবীরাও রাজনীতির অংশে নিজেদের এমনভাবে জড়িয়ে ফেলেছেন যে, আওয়ামী লীগের ডাক্তার, বিএনপির ডাক্তার হিসেবে পরিচিতি পেয়ে গেছেন। ডাক্তাররা রাজনৈতিক পরিচয়ের ঊর্ধ্বে থেকে রোগী দেখেন বা চিকিৎসা সেবা দেন, এ কথা দায়িত্ব নিয়েই বলতে পারি। এসব ডাক্তাররা প্রতিদিন হাসপাতালে অসংখ্য রোগী দেখছেন, রাজনৈতিক পরিচয় বিবেচনায় নিচ্ছেন না। রাজনৈতিক পরিচয় বিএনপি, এমন ডাক্তারও আছেন বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে। তারপর কেউ যদি বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে চিকিৎসা না নিতে চান, তার যদি আস্থায় ঘাটতি থাকে, অসুস্থতা বিবেচনায় তার ইচ্ছা বা মতামত গুরুত্ব পেতেই পারে।

ডেইলি স্টারে লিখেছেন- গোলাম মোর্তূজা

spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

সর্বশেষ