হরতাল-কারফিউ’ দিয়েও খুলনার বিভাগীয় সমাবেশের জনস্রোতকে রুখতে পারবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, ‘খুলনার সমাবেশ ঠেকাতে পরিবহণ ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। এতে এতটুকু প্রভাব পড়বে না। ময়মনসিংহে কীভাবে মানুষ এসেছে, সবাই দেখেছে। ট্রলারে, নৌকায় করে বিভিন্নভাবে জনগণ ওই সমাবেশে এসেছে। রিকশাওয়ালারা মানুষজন নিয়ে গিয়েছে, ভাড়া পর্যন্ত নেয়নি। এটাই হচ্ছে জনগণের অংশগ্রহণ।’
‘ক্ষমতাসীনরা যত গাড়ি বন্ধ করুক, যা কিছু করুক, একইভাবে আগামী শনিবার খুলনার সমাবেশেও জনগণ গণতন্ত্রের দাবিতে উপস্থিত হবেন। কোনো প্রতিবন্ধকতা, কোনো হরতাল-কারফিউ কেউ মানবে না।’
বুধবার বিকালে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ২০ দলীয় জোটের দুই শরিক জাতীয় দল ও ইসলামিক পার্টির সঙ্গে সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।
১৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত ময়মনসিংহের বিভাগীয় সমাবেশের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ময়মনসিংহেও এভাবে তারা গাড়িঘোড়াসহ পরিবহণ বন্ধ করেছিল। ঠেকাতে পারেনি।
শনিবার খুলনার সোনালী ব্যাংক চত্বরে বিভাগীয় সমাবেশ করবে বিএনপি। এই সমাবেশকে সামনে রেখে মালিক শ্রমিক সংগঠনগুলো শুক্র ও শনিবার খুলনা থেকে সব বাস চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে।
‘সরকারি দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে সভা-সমাবেশে বাধা দেওয়া হবে না’ বলা হলেও কেন এই প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজ পর্যন্ত কী আওয়ামী লীগ তাদের কোনো কথা রাখতে পেরেছে? রাখতে পারেনি। কারণ তারা বিশ্বাসই করে যা বলব, তা করব না। ঠিক উলটাটা করে। সুতরাং আওয়ামী লীগকে বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই।’
‘বিএনপি আরেকটা ১/১১ সৃষ্টির দিবাস্বপ্ন দেখছে’- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এটা (১/১১) ওরা করেছে তো। সেই অভ্যাস তাদের আছে। সেজন্য তারা এই কথা মনে করে। আমরা কোনো দিবাস্বপ্ন দেখি না। আমরা স্বপ্ন দেখি একটা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের। স্বপ্ন দেখি মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার। স্বপ্ন দেখি সত্যিকার একটা বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করার।
‘আওয়ামী লীগও রাজপথে নামবে’- ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ওখানে তো কোনো আপত্তি নেই। ওনাদের সেই গণতান্ত্রিক অধিকার আছে, রাজপথে নামতেই পারেন। কিন্তু একই সঙ্গে সব বিরোধী দলকে তাদের সব অধিকার নিশ্চিত করতে হবে- এটা সরকার হিসাবে তাদের দায়িত্ব।
বিকাল ৪টায় প্রথমে জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল এবং বিকাল ৫টায় ইসলামিক পার্টির চেয়ারম্যান আবু তাহের চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় সংলাপে বসেন বিএনপি মহাসচিব। দুই সংলাপেই বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।
সংলাপে অংশ নেওয়া জাতীয় দলের অন্য সদস্যরা হলেন- রফিকুল ইসলাম, শামসুল আহাদ, সারোয়ার আলম, লুতফুল হাবিব, মাসুদ চৌধুরী, সাইফুল আলম রুমেল, শহীদ আলী, বেলায়েত হোসেন শামীম, আতিকুর রহমান ও মো. রফিকুল ইসলাম।
ইসলামিক পার্টির প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন- আবুল কাসেম, এজাজ হোসেন, সিদ্দিক আহমেদ নোমান, সাখাওয়াত হোসেন চৌধুরী, আব্দুর রহমান, আদেল উদ্দিন মাহমুদ, সুজন মাহমুদ ও সাইফুর রহমান