যারা কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের উপর হামলা করেছে তাদের বিচার হওয়া উচিত। হামলার ধরণ দেখে মনে হয়েছে তারা ব্যক্তিগত আক্রোশ নিয়ে এই হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। এগুলোর প্রতিকার হওয়া উচিত। কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের উপর হামলার ঘটনা নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান এসব কথা বলেন ।
তিনি বলেন, কোটা সংস্কারের আন্দোলন যারা করছে তাদের তো একটি বক্তব্য আছে এবং সে বক্তব্য দেওয়ার অধিকার তাদের আছে। তারা যতক্ষণ পর্যন্ত শান্তি শৃঙ্খলা বিঘিœত না করে এবং জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করার মত কোন কর্মসূচি না দেয়, ততক্ষণ তাদেরকে বাধা দেওয়ার অধিকার কারো নেই । গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি হতেই পারে। কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের যেমন বক্তব্য আছে, তাদের বিরোধীদেরও তো বক্তব্য থাকতে পারে। তারা তাদের বক্তব্য প্রচার করুক কিংবা তারাও পাল্টা সমাবেশ কর্মসূচি দিক। কিন্তু এ ধরনের আক্রমণ বিশেষ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ঘটনাটা মিডিয়াতে আসছে। এগুলো আসলেই কোনভাবে কাম্য নয় এবং গ্রহণযোগ্য নয়। এসব কার্যকলাপের একটি প্রতিকার হওয়া উচিত। কোটা নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা দেওয়ার পরেও কোন সমাধান হয়নি, সুতরাং আরো পরিস্কারভাবে একটি ঘোষণা দেওয়া উচিত। সরকারের সিদ্ধান্তটা কি, এটা আন্দোলনকারীদের জানিয়ে দিতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সংসদে বলেছেন কোটা থাকবে না, এর পরে তো আর কোন কথা থাকে না। সুতরাং এ ব্যাপারে আরো আগেই পদক্ষেপ নেওয়া উচিত ছিল। কোটা নিয়ে আন্দোলন এখানেই শেষ হোক, এই আন্দোলন দীর্ঘায়িত কোন ভাবেই কাম্য নয়। যেহেতু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন কোটা থাকবে না, সুতরাং কমিটির রিপোর্টের মাধ্যমেই হোক কিংবা সরকারের মাধ্যমেই হোক এর একটি সফল পরিসমাপ্তি হওয়া দরকার।
ড. মিজানুর রহমান আরও বলেন, যখন কোন আন্দোলন হয়, তখন অনেকগুলো পক্ষ তার মধ্যে ঢুকে যায়। কেবলমাত্র এই আন্দোলনই তাদের কাছে মুখ্য নয়, তারা তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে বিভিন্ন আন্দোলনে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে। মূল সমস্যাটা হচ্ছে কোটার ব্যাপারে অস্পষ্টতা এবং মুক্তিযোদ্ধা কোটাও একটি সমস্যা। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরিতে নিয়োগে এই পর্যন্ত শতকরা সর্বোচ্চ ৯ ভাগের বেশি কোটা পূরণ হয়নাই। সেখানে শতকরা ৩০ ভাগ কোটা দেখানোটাই আসলে সমস্যা হচ্ছিল। মূলত এটি একটি সাইকোলজিক্যাল সমস্যা। এটাকে পূজি করে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তিদেরও একটি অবস্থান দেখা যাচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে বিভিন্ন অপশক্তি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য প্রস্তুত থাকে। এজন্য খুব দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত। ছাত্রদেরও আন্দোলন ছেড়ে ক্লাসে ফিরে যাওয়া উচিত। সরকারেরও উচিত দ্রুত তাদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া। এর মাঝখানে যে সকল ফৌজদারি অপরাধের মত ঘটনা ঘটেছে, এরও প্রতিকার হওয়া উচিত।